দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিমতায় তৃণমূল নেতা খুনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং কয়েক জন সিআইডি কর্তা-সহ বিশাল টিম। কিন্তু সন্দেশখালির ঘটনার পরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যখন বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী করলেন পুলিশের একাংশকেই।
সোমবার নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তিন চারটে জেলায় কিছু ওসি আর কিছু সাব ইনস্পেক্টর স্তরের পুলিশ রাজনৈতিক গুন্ডামিতে মদত দিচ্ছেন। আমরা পুরোটা দেখছি কোথায় কী হচ্ছে।”
খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পর্যবেক্ষকদের মতে, পুলিশের একাংশই যদি গুণ্ডামিতে মদত দেয়, তা হলে তার থেকে উদ্বেগজনক কিছু হতে পারে না। সেখানকার মানুষ কতটা অরক্ষিত এবং নিরাপত্তার অভাবে ভুগছে তা বোধগম্য।
আবার অনেকের মতে, ইদানীং নবান্নের বক্তব্যেই কিছু ব্যাপারে স্ববিরোধ ধরা পড়তে শুরু করেছে। যেমন, বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অ্যাডভাইজারি নোট পাঠিয়েছে নবান্নে। কিন্তু কেন্দ্রের ওই চিঠিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে নবান্ন ও তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ‘পুলিশের একাংশের মদতে’ গুণ্ডামি চলছে বলে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে কার্যত মেনে নেওয়া হয়েছে যে বিক্ষিপ্ত ভাবে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে।
তবে বিজেপি-র নেতৃত্বের বক্তব্য, অঙ্কটা খুবই সহজ। বাংলায় পুলিশ দিয়েই দল চালায় তৃণমূল। বহু জেলায় পুলিশ সুপাররাই তৃণমূলের জেলা সভাপতির মতো কাজ করেন, আবার কোথাও কোথাও ওসি-রা যেন শাসক দলের ব্লক সভাপতির ভূমিকায় অবতীর্ণ। পুলিশের এই অফিসাররাই এখন দেখছেন হাওয়া খারাপ। বিজেপি বাংলায় ১৮ টি আসন পেয়েছে। ফলে অনেকে আর শাসক দলের কথা শুনতে চলতে চাইছেন না।
এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা লোকসভা ভোটে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসু-র কথায়, যে পুলিশ কর্তারা আর তৃণমূলের কথা শুনছেন না, তাঁরাই এখন নবান্নের চোখে ভিলেন হয়ে গেছেন, এবং বলা হচ্ছে তাঁরা গুণ্ডামিতে মদত করছেন। এটা তৃণমূলের জন্য উদ্বেগের বইকি। বড় কথা হল, কদিন বাদে দিদি দেখবেন পুলিশের কোনও অফিসারই আর তৃণমূলের কথা শুনছেন না!
আরও পড়ুন-
বেতন বাড়াব, কিন্তু খাদ্যসাথী বন্ধ করে নয়, নবান্নে বললেন মমতা