শেষ আপডেট: 14th March 2025 09:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কথায় বলে, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তেরো পার্বনের মধ্যে হিসেব মত হয়তো শেষ পার্বণ দোল। তবে বাঙালিদের মধ্যে হিন্দি প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায়, এখন আর শুভেচ্ছা বার্তায় 'শুভ দোল যাত্রা' বা 'দোল পূর্ণিমা' থাকে না, থাকে 'হ্যাপি হোলি' (Traditional holi celebration)! কিন্তু অনেকেই জানেন না দোল ও হোলির পার্থক্য কী?
এই উৎসব মানে আবির, রং, সাদা জামা, দেদার মজা। ভারতের নানান প্রান্তে নানান রকম ভাবে রং খেলা হয়৷ আর ভারতবর্ষে, বিবিধের মাঝে মিলনের বার্তা দেওয়া হয়। তাই দেশের (india)পুব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ, নানান পদ্ধতিতে হলেও, রঙ উৎসবে মাতেন সকলেই।
মহারাষ্ট্র থেকেই শুরু করা যাক। সেখানে হোলিকে বলা হয় 'রং পঞ্চমী'। তবে রং পঞ্চমীর আগের দিন হয় হোলিকা দহণ। হোলিকা দহণ মানে, দুষ্টের দমন আর শুভর জয়লাভ। রং পঞ্চমীতে ওখানে মানুষ আবির খেলায় মাতেন।
গোয়াতে হোলিকে বলে শিগমো। এই সময় ওখানমার মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। মৎস্যজীবীরা নিজেদের নৌকা সাজান। বসন্ত ঋতু উদযাপনের মাধ্যমে রাস্তার মধ্যেই ঐতিহ্যবাহী লোক নৃত্য এবং পথ নৃত্যের আয়োজন করেন তাঁরা।
পশ্চিম থেকে উত্তরে আসা যাক। উত্তর প্রদেশের বারসানা গ্রাম। এখানকার হোলি মানে আনন্দ। এখানে হোলি লাঠমার হোলি নামে পরিচিত। পুরান বলে, এই বারসানা গ্রাম রাধার জন্মস্থান। কথায় আছে, কৃষ্ণ নাকি রাধাকে বিরক্ত করতে আসতেন। এবং গ্রামের মহিলারা লাঠি দিয়ে মারতেন। সেই প্রথা চলে আসছে। এখনও গ্রামের মহিলারা লাঠি নিয়ে পুরুষদের মারেন। বারাণসীর মসান হোলি তো অনেকেরই জানা। চিতার ছাই দিয়ে এখানে হোলি খেলেন সাধুরা।
গোটা দেশের হোলি সমন্ধে জেনে এবার না হয়, বাঙালির দোলে ফেরা যাক। পশ্চিমের হোলি বা উত্তরের ফগুয়া কোনওটাই নয়, পুবে বাংলায় যেহেতু বসন্ত ঋতু প্রকট নয়, তাই সেভাবে হোলি উদযাপিত হয় না। তাই বাংলায় পালিত হয় শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা। প্রায় ৫০০ বছর আগে মহাপ্রভু দু'বার বৃন্দাবনে গেছিলেন। সেখানে গিয়েই এই উৎসব দেখেন। এবং বলেন, বাংলায় এই দিনে শ্রীকৃষ্ণের পায়ে আবির দিয়ে, সকলে আবির খেলবে। রাধা কৃষ্ণের মিলনের সাক্ষী হিসেবে থাকবে এই দোল উৎসব।
ফেসবুক জুড়ে যখন দোল উইশ করব না, হোলি উইশ করব বলে ঝামেলার অবকাশ থাকে না, তখন এটুকু মনে রাখলেই চলে, যে দেশটার নাম ভারতবর্ষ। আর বিবিধের মাঝে 'মিলন' টুকুই সব।