শেষ আপডেট: 28th August 2024 17:39
ফিল্মস্টারদের দুটো পরিবার গড়ে ওঠে। একটা স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে, আর একটা ইন্ডাস্ট্রির লোকজনদের বা বন্ধুদের নিয়ে পরিবার। তেমনি ইন্ডাস্ট্রির মহানায়ক কিছু নায়িকার দাদাও ছিলেন। তাঁদেরই একজন শকুন্তলা বড়ুয়া (Shakuntala Barua)। 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা আর কি আমি চাই/ নাই বা পেলাম পান্নাচুনি দুঃখ আমার কিছু নাই...' ভাইফোঁটার চিরন্তন গান যার লিপে আইকনিক হিট তিনি শকুন্তলা বড়ুয়া।
আপনি বিয়ের পর রক্ষণশীল পরিবার থেকে ফিল্ম জগতে এলেন, কঠিন ছিল?
সিনেমায় যখন আসি আমার বিয়ে হয়ে গেছে শুধু নয়, দুটো মেয়েও হয়ে গেছে। তারাও তখন কিশোরী। আমার ব্যাকগ্রাউন্ডটা অন্যরকম ছিল। আমার স্বামী 'কোল ইন্ডিয়া'র জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। আমার প্রথম ছবি বিয়ের পরেই। ছবিটা ছিল 'সুনয়নী'। যখন আমি 'সুনয়নী' করি তখন আমার স্বামী 'আরআইসি' নামে একটা গারমেন্টস কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাম চেয়ারম্যান ছিলেন। তো বুঝতেই পারছেন একদম আমলা পরিবেষ্টিত পরিবেশ। আবার আমার নন্দাইরা সব আইএএস অফিসার। এইসব জায়গা থেকে সিনেমায় নামাটা একেবারেই অন্যরকম। তার ওপর আবার যদি সে হয় বাড়ির বউ। সিনেমা আবার কী! আমি ছোটবেলা থেকে গান গাইতাম। রেডিওতেও গেয়েছি। তাই আমার গানটা নিয়ে বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়িতে সবাই খুব গর্ব করত, উৎসাহ দিত। এগুলোতে কেউ কোনওদিন ঝামেলা করেনি। কিন্তু সিনেমায় নামা কঠিন ছিল।
ভূপেন হাজারিকাই কি ফিল্মের দূত হয়ে এলেন আপনার জীবনে?
হ্যাঁ। গানের সূত্রেই আমার সঙ্গে ভূপেন হাজারিকার যোগাযোগ। উনি আমাকে প্রথম সিনেমার শ্যুটিং দেখতে নিয়ে যান। কেমন করে হয় সিনেমা সেটাই শুধু দেখতে গেছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়েই আমার ভাগ্যবদল হল। স্টুডিওতে অনেক পরিচালক ছিলেন, তাঁরা বললেন 'তুমি সিনেমা করো।' আমার কিন্তু ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করার প্রতি একটা ঝোঁক ছিল, সেটা রক্ষণশীল পরিবারে বলতে পারিনি। যখন আমার আড়াই বছর বয়স তখন রেডিওতে নাটক হত। আমি সেই নাটক শুনেশুনে মোটা গলা করে হাসতাম। মা ছুটে এসে বলতেন 'কী হল! গলায় কিছু আটকেছে?' আমি বলতাম 'না, আমি রেডিওর হাসি হাসছি।' সেদিন স্টুডিওতে গিয়ে আমি বাড়ির কাউকে না জিজ্ঞেস করেই বলে দিলাম 'হ্যাঁ করব'। এটা নিয়ে বাড়িতে খুব অশান্তি হল। অনেক কষ্টে রাজি করানো গেল বরকে হাতেপায়ে ধরে। আমি ঠিক করলাম, একটা ছবি করে সবার কাছে প্রমাণ করে দেব যে আমি অভিনয় করতে পারি। তখন ওই একটা শর্তে রাজি হয়েছিল, এই প্রথম আর এই শেষ। আর জীবনে নয়! আমিও বললাম, না আর জীবনে নয়।
আপনি তো জানতেন না আপনার প্রথম ছবিতেই হিরো উত্তম কুমার?
সুনয়নী ছবিটা প্রথমে করছিলেন শচীন অধিকারী। তখন ছবিটার নাম ছিল 'গান্ধারী'। অন্ধ মেয়ের রোল। আমায় বলেছিলেন, 'তোমার চোখ দুটো খুব সুন্দর তাই ছবির নায়িকার ভূমিকায় তুমি পারফেক্ট।' তারপর ছবিটা শচীনদা সুখেনদাকে দিয়ে দেন। সুখেন দাস ডিরেক্ট করেন। সুখেনদা রিহার্স করাতেন। আমি সেগুলো বাড়িতে গিয়ে গল্প করতাম। একদিন শুনলাম রঞ্জিত মল্লিক হিরো, একদিন শুনলাম সন্তু মুখার্জী হিরো, দীপঙ্কর দে হিরো। এসে এসে বলতাম বরকে। আমার কর্তা সেদিকে কানই দিতেন না। নিজের অফিসের কাজ নিয়ে এত ব্যস্ত থাকতেন। একদিন শুনলাম ফাইনালি উত্তম কুমার হিরো। আমি আবার সেটাও এসে বললাম আমার বরকে। সঙ্গেসঙ্গে অফিসের কাগজপত্র বন্ধ করে আমায় বলল 'করবে না।' আমি বললাম, 'এতদিন বলেছো করবে, এখন এতদিন রিহার্সালের পর না বলব কী করে!' কর্তা বললেন, 'উত্তম কুমার হিরো। আমি করতে দেব না।' এ জন্যই এটা বললাম, উত্তম কুমার সম্পর্কে লোকের একটা ধারণা ছিল যে বাড়ির বউ শ্যুটিং করতে গিয়ে উত্তম কুমারকে একবার চোখে দেখলে সে বউ আর বাড়ি ফিরবে না। এটা মেয়েদের ক্ষেত্রেও লোকে ভাবত। বউদের বেশি। উত্তম কুমারের নামে গুজব রটত বেশী। সেগুলোই চাউর হত। উত্তম কুমারের নায়িকা হয়ে সেই বউ আর বাড়িতে এসে রান্না করবে! যাই হোক, কর্তা 'হ্যাঁ' বললেন, কিন্তু অনেক শর্ত আরোপ করেছিলেন। সেগুলো মেনে চলা যে কারও পক্ষে কঠিন। কিন্তু আমি মেনেছিলাম।
কেমন ছিল কর্তার শর্তগুলো?
একটা ছিল, আমি ছবি করে কোন পারিশ্রমিক নিতে পারব না। সুখেনদা বললেন, এটা কী করে হয়? আমার বর বললেন, 'জেন্টেলম্যান ওয়ার্ড! আমি বলেছি ও ছবি করবে তাই করবে। কিন্তু কোন প্রফেশানাল ফি নেবে না আমার স্ত্রী।' তখন সুখেনদা পার ডে গাড়ি ভাড়া আমায় একশো টাকা করে দিলেন। 'পেট্রোলের দামটা দিতে দিন আমায়।' সুখেনদা বললেন আমার কর্তাকে। তো আমি একশো টাকা করেই রোজ নিয়েছি 'সুনয়নী'তে। তার পরে আউটডোর ছিল উত্তম কুমারের সঙ্গে। তখন কোনও জ্ঞান নেই আউটডোর সম্বন্ধে। শুনলাম ডায়মন্ড হারবারে সাতদিন শ্যুটিংয়ের জন্য থাকতে হবে 'সাগরিকা' হোটেলে। 'সাগরিকা' দেখানো হবে উত্তম কুমারের ফ্ল্যাট। শুনে আমার বর বললেন, 'আমার বউ যাবে না। বাপের বাড়িই কোনওদিন পাঠাইনি, ও যাবে না আউটডোরে।' সুখেনদাকে আমার বর বললেন, 'আমার গারমেন্টস হাউসের নটা ফ্ল্যাট আছে কলকাতা শহরে। আমি আপনাকে সব কটা দেখাব। আপনি যেটা খুশি উত্তম কুমারের গেস্ট হাউস বানান।' কত বড় রিলিফ এটা একটা প্রথম নায়িকার জন্য। নিজের বরের ফ্ল্যাটে সিনেমার শ্যুট আর রোজকার রোজ আসা যাওয়া সম্ভব। শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের কাছে আমার বরের একটা ফ্ল্যাট উত্তম কুমারের বাড়ি দেখানো হল। এখন বললে কেউ বিশ্বাস করবে না।
সুনয়নী হিট করার পর তো আর আপনাকে পেছন ফিরে তাকাতে হল না?
সুনয়নী হিট হল,আমার লিপে অজয় দাসের সুরে আশাজির গান হিট হল। বাড়ির সবাই নিজেরাও দেখতে গেছিল। পুরস্কার পেলাম। আর তখন পরপর ছবির অফার আসতে থাকল। সুখেনদারই পরপর ছবির অফার পেলাম। প্রতিশোধের 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা' মানেই আজও আমি। অরুন্ধতী হোম চৌধুরীর গলায়। সুখেনদা আর অনুপদা দুই দাদা যারা বিধবা বোনকে লাল শাড়ি পরাল ভাইফোঁটায়। আমার বর বললেন, 'ছবি করতে অনুমতি দিলাম কিন্তু আমাদের বাড়িতে একজন ফিল্মস্টার আছে সেটা যেন আমরা ফিল না করি।' আমি মেয়েদের স্কুলের মিটিংয়ে গেছি, বরের সঙ্গে ক্লাবেও গেছি, আবার রোজকার বাজার করেছি। আজও আমি নিজহাতে বাজারে গিয়ে বাজার করি তো। আমি সব শর্ত মেনে ছবি করি। তারজন্য আমায় অনেক ছবি ছাড়তে হয়। এত ছবি আসছিল। আমি দেখলাম এত ছবি করতে গেলে আমায় সংসার ছাড়তে হবে। দুটো বাচ্চা রেখে সম্ভব না। তাই ছবি ছাড়লাম অনেক নায়িকার রোলেও।
তাই কি নায়িকা থেকে চরিত্রাভিনেত্রীতে চলে আসতে হল?
আমি মাঝে একটা গ্যাপ নিয়ে আবার অঞ্জন চৌধুরীর ছবি 'শত্রু' দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করি। কিন্তু তার আগেই 'যোগ বিয়োগ' ছবিতে ক্যারেক্টার রোলে আমি নেমে গেলাম। কারণ আমার কখনও জীবনে প্রথম থেকেই ছবির নায়িকা হবো এইটা ছিল না। আমার মনের মধ্যে সবসময় ছিল আমি ভাল অভিনেত্রী হবো। আমি খুব কঠিন কঠিন চরিত্র করব। কোনওদিন নায়িকা হওয়ার লোভ ছিল না। নায়িকা তো কত দেখছি, গাছ ধরে দৌড়ে গেল, নাচ করল অথচ অভিনয়ের অ-ও নেই তার মধ্যে। আমি এমন করব প্রতিটা রোল মন দিয়ে লোকে দেখবে শুনবে ভাববে।
তরুণ মজুমদারের 'আপন আমার আপন' এ উন্মাদিনী মায়ের চরিত্রই কি সবচেয়ে কঠিন রোল আপনার?
সাঙ্ঘাতিক কঠিন। বদ্ধ উন্মাদ আস্তে আস্তে ভাল হচ্ছে সেটাকে ফুটিয়ে তোলা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্চ ছিল। মানুষ মনে রেখেছে। তরুণ মজুমদার বিশ্বাস করে আমায় রোলটা দেন এবং সিনেমায় যে ছবিটা আমার টাঙানো আছে ছবিটা তরুণ মজুমদারের নিজে হাতে তোলা। উনি ছবিটা আমায় উপহার হিসেবে দিয়ে বলেছিলেন, 'আমি বাজি ফেলে বলতে পারি অন্য কোনও ছবিতে সারাজীবনে আপনি এই এক্সপ্রেশান দিতে পারেননি বা দিতে পারবেন না। এটার আর দ্বিতীয় হবে না।' তার পর ভাল ভাল রোল পেয়েছি, অভিনয় করেও, ভাল লেগেছে 'তুফান', 'বদনাম'। একটা ছবি করব বলে তিনশোর বেশf ছবি করা হয়ে গেছে জীবনে। মেয়েরা বড় হয়ে যেতে ফুলফর্মে করেছি আবার।
উত্তম কুমারকে নিয়ে কি বলবেন?
আমার চলচ্চিত্র জীবনের প্রথম নায়ক উত্তম কুমার। তারপর প্রচুর নায়কের সঙ্গে কাজ করেছি আমি এত বছরের অভিনয় জীবনে, কিন্তু দ্বিতীয় কাউকে বলতে পারব না যিনি উত্তমকুমারের ধারে-কাছে এসেছেন। ওঁর গাম্ভীর্য, হাঁটাচলা, কথা বলা মাপে মাপে। এখনকার হিরোরা তো সবাই চিৎকার করে কথা বলেন। আজকাল গাড়ি থেকে নেমেই আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে হাই বলে একটা লাফ দিল। যাতে মিডিয়া দেখতে পায় এই তো! উত্তম কুমার ছিলেন হিমালয়। উনি সবসময় গাড়ি থেকে নেমে মাথা নীচের দিকে করে তাকিয়ে হেঁটে যেতেন । কারণ উনি তো ছিলেন উপরের মানুষ। ওঁকে সবাই মাথা উঁচু করে দেখত। এই কারণেই উত্তম কুমারের বিকল্প আজও এল না, আসবেও না।
উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে প্রেমে পড়ে যাননি কখনও?
আমি যখন যা চরিত্র করেছি তার মধ্যেই থাকতাম। তখন আমি মিসেস বড়ুয়াও নই। 'রাজনন্দিনী'তে উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করছি তখন আমি সুলোচনা বাঈজিই। তখন উনি আমার প্রেমিক। মনপ্রাণ দিয়ে সেটুকুই করেছি। আমি তো উত্তম কুমারকে দাদা বলে ডাকতাম। আমার প্রথম ছবিতেও উনি দাদা। সেই দাদা-বোনের সম্পর্কটা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত একই ছিল।
ওঁর জন্য মেয়েরা পাগল হয়ে যেত, এটা সত্যি। আমি তো নিজের চোখে দেখেছি, শ্যুট করছি আমি আর উত্তমদা পাশাপাশি বসে আছি খাটে। ভর্তি ক্যামেরা, ভর্তি মিডিয়া। একটি মেয়ে দৌড়ে ছুটে এসে পেছন দিয়ে খাটে উঠে আমাদের দুজনের মাঝখানে মুখটা গলিয়ে দিল। দাদার ঘাড়ের পাশে ওর মুখ। ওই যে আমাদের ছবি তোলা হচ্ছে, ওরও ছবিটা উঠে গেল। আমি তখন বুঝতে পেরেছি দাদার ইমেজ নিয়ে কেন রটনা রটে। লোকে যে বলে উত্তম কুমার মেয়েদের দেখলেই খেয়ে ফেলবে, তা নয়। মেয়েরাই ওঁকে উত্ত্যক্ত করত, নিজেদের সস্তা করত। আমার নিজের চোখের সামনে দেখা। উনি নির্বিকার থাকতেন বা বলতেন 'একটু সরে যান'। অন্যদিক দিয়ে ভাবতে হলে যদি কোনও মেয়েকে কিছু করে থাকেন, সেটা সেই মেয়েটার দোষ। সেও সুযোগ নিয়েছে। তুমি যদি ঘাড়ে গিয়ে পড়ো, সে যদি সুযোগ পায়, কতক্ষণ দুর্বলতা ঢেকে রাখা সম্ভব! সে কেন সুযোগ নেবে না? আমার চোখে উনি একটা আইডিয়াল মানুষ। আমি যখন এসেছিলাম ইন্ডাস্ট্রিতে আরও অনেক বেশী সুন্দরী ছিলাম। কই উত্তম কুমার তো আমার থেকে কোন সুযোগ নেননি। নেভার! বরং আগলে রেখেছেন। প্রথম দিন এনটি ওয়ানে কাজ করছি। আমার রুমের বিপরীতে উত্তমকুমারের মেক আপ রুম। আমি শুনতে পারছি উত্তম কুমার ফোন করে বেণুদিকে (সুপ্রিয়া দেবী) বলছেন 'বেণু, আমার লাঞ্চে যখন খাবার আসবে তার সঙ্গে যেন শকুন্তলারও খাবার আসে।' এটা কোন হিরো আজ পর্যন্ত বলেছেন বা করেছেন? আমি তখন নতুন একটি মেয়ে। কেউ আমায় জানে না, কেউ আমায় চেনে না। আমি তো দেখিনি কোনও নবাগতা নায়িকাকে কোনও সুপারস্টার হিরো এই সম্মান দিচ্ছেন। উত্তম কুমার এইজন্যই আলাদা। মানে ভাবা যায়না ওঁনার মনটা কত বড় ছিল। আরও বলব, আমাকে যেভাবে উনি অভিনয়ে হেল্প করেছেন, ওই অন্ধ মেয়ের রোলে প্রথম দিন প্রথম শটে। পৃথিবীর কেউ দেখতে পেল না, আমার কানের কাছে পায়চারি করতে করতে উনি বলে দিলেন 'তুমি ডান পা দিয়ে এগোবে আর আড়াই পা গিয়ে তুমি আমার বাঁ কানের দিকে তাকিয়ে চায়ের কাপটা নিয়ে বলবে দাদা চা।' ফার্স্ট শট একবারে ওকে। সবাই ভাবল নতুন মেয়ে, ফার্স্ট শট ওকে হয়ে গেল, বাব্বা! কিন্তু কেউ জানল না, ওকে হওয়ার টিপসটা দাদা দিয়ে দিয়েছিলেন। পরে আমি দাদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা আমায় বললেন কেন? দাদা বললেন মুচকি হেসে (কখনও হেহে করে হাসতেন না) তুমি আড়াই পা এগিয়ে আমার বাঁ কানের দিকে তাকালে আলোটা তোমার মুখে পড়বে।
উত্তম কুমার আজ চলে গেছেন চল্লিশ বছর। কেমন লাগে পুরনো কথা ভাবলে? মিস করেন দাদাকে?
দাদা থাকাকালীন ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে গেছি, গান শুনিয়েছি দাদাকে। দাদা চলে যাওয়ার পরেও বেণুদির কাছে গেছি ওই বাড়িতে। তখন বেণুদিকে বলতাম, 'এলেই খালি গান গাইতে বলো তুমি, চলো গল্প করি আমরা একটু।' তখন বেণুদি আমায় বলেছিল. 'তুই হারমোনিয়ামটা বাজালে দাদা খুব খুশি হতো রে। তুই জানিস এই হারমোনিয়ামে কে কে হাত দিয়েছেন? আর ডি বর্মণ, গুলজার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, আরতি মুখার্জী আর তোদের দাদা তো বটেই। আর তুই বাজিয়েছিস শকুন্তলা।'
আজ বেণুদিও নেই, সেই ময়রা স্ট্রিটের ফ্ল্যাটটাও নেই। বেণুদির রান্নার কিছু রেসিপি আজও রয়ে গেছে আমার কাছে আর এক বুক আদর-ভালবাসা।
কাননবালা, বাংলা ছবির ফার্স্ট গ্ল্যামার গার্ল কিন্তু আন্তরিকতায় অতুলনীয়া