Date : 21st May, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
কান উৎসবে হাঁটতে ফ্রান্স পৌঁছলেন ঐশ্বর্যা, সঙ্গে এবারেও আরাধ্যা, মুহূর্তে ভাইরাল ভিডিওকলকাতায় 'মাদারহুড হসপিটালস'-এর ২৫তম হাসপাতাল, পূর্ব ভারতে মাতৃ ও শিশুসেবায় নতুন দিগন্তনতুন জীবন পেল কিশোর, বিরল নিউরো অস্ত্রোপচারে মৃগী সারল কলকাতার হাসপাতালেশাহরুখ তখনও 'কিং' হননি, পুরনো ছবি শেয়ার করে বন্ধু লিখলেন, '৩৫ বছর আগে সেই ট্রেন যাত্রায়...'ক্ষীরপাইয়ে দুই বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত ৩, আশঙ্কাজনক আরও ১ইনস্টাগ্রামে একে অপরকে ‘আনফলো' যশ-নুসরতের, জল্পনার পারদ চড়ছে টলিপাড়ায়IPL 2025: ফের চলল বৈভবের ব্যাট, বেলাইন চেন্নাই এক্সপ্রেসরবীন্দ্র সরোবরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, ভরদুপুরে গাছ পড়ে মৃত্যু ফুল ব্যবসায়ীরশাহরুখ মধ্যবিত্তই রয়ে গেল, কোনও দামী ব্র্যান্ড ওকে খুশি করতে পারে না: অনুভব সিনহাআত্মবিশ্বাসী শুভাশিস গুরুত্ব দিচ্ছেন সুনীলের অভিজ্ঞতাকে
PM Modi's art of deception

মোদীর নজর ডানে তো নিশানা বাঁয়ে, 'সিঁদুর' মেঘে ওস্তাদের মার শেষ রাতে

প্রধানমন্ত্রী এমন এক শিল্পের ওস্তাদের মার শেষ রাতে দেখিয়েছেন যাতে একবার নয়, বারবার পাকিস্তান ঘোল  খেয়ে গিয়েছে। তিনি যখন বাঁদিকে তাকান, তখন ডানদিকের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানেন। তাঁর অতীতের কার্যাবলি ও কথাবার্তা যখন সাধারণ স্বাভাবিক থাকে, তখনই বুঝে নিতে হবে যে তাঁর পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বিপরীত। পাকিস্তানি সেনা ও সরকার এবং লস্কর-ই-তোইবা, জয়েশ-ই-মহম্মদ বা হিজবুল মুজাহিদিনের মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনই মোদীর ক্ষমতা টের পায়নি।

মোদীর নজর ডানে তো নিশানা বাঁয়ে, 'সিঁদুর' মেঘে ওস্তাদের মার শেষ রাতে

নতুন ভারত ঘর মে ঘুসেঙ্গে ভি, অর ঘুসকে মারেঙ্গে ভি।

শেষ আপডেট: 7 May 2025 13:52

দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক ও সামরিক চালে ফের কুপোকাত পাকিস্তান ও তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গি দলগুলি। জঙ্গি হানার প্রতিবাদে এর আগেই বিজেপি নেতারা বুক বাজিয়ে বলে এসেছেন, এই নতুন ভারত ঘর মে ঘুসেঙ্গে ভি, অর ঘুসকে মারেঙ্গে ভি। তারপর থেকে যখনই জঙ্গি হানা হয়েছে, তখন থেকে ভারত যোগ্য জবাব দিয়েছে। তা সে বাজপেয়ী জমানার কারগিল যুদ্ধ হোক কিংবা বালাকোট স্ট্রাইক কিংবা উরি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। তার মূল কারণ মনে এক, মুখে আর এক নীতিকে শাস্ত্রীয় শিল্পে পরিণত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যাকে এককথায় বলে, 'কহি পে নিগাহেঁ, কহি পে নিশানা।'

প্রধানমন্ত্রী এমন এক শিল্পের ওস্তাদের মার শেষ রাতে দেখিয়েছেন যাতে একবার নয়, বারবার পাকিস্তান ঘোল  খেয়ে গিয়েছে। তিনি যখন বাঁদিকে তাকান, তখন ডানদিকের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানেন। তাঁর অতীতের কার্যাবলি ও কথাবার্তা যখন সাধারণ স্বাভাবিক থাকে, তখনই বুঝে নিতে হবে যে তাঁর পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বিপরীত। পাকিস্তানি সেনা ও সরকার এবং লস্কর-ই-তোইবা, জয়েশ-ই-মহম্মদ বা হিজবুল মুজাহিদিনের মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনই মোদীর ক্ষমতা টের পায়নি।

২০১৯ সালের বালাকোট স্ট্রাইক হোক কিংবা অপারেশন সিঁদুর, পাকিস্তানের চোখে ধুলো দিয়ে শত্রুপক্ষকে গোলকধাঁধায় ফেলে দেওয়ার কৌশলকে মোদী শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। একদিকে সাধারণ কর্মসূচি, অন্যদিকে দ্বিগুণ গতিতে মোদীর যুদ্ধনীতি, যাকে রূপক তাণ্ডব বলা যায়। শুধু পাকিস্তান নয়, বিন্দুমাত্র আঁচ করতে না দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চকে বেকুব করে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মোদী।

ভারত বালাকোটে অভিযান চালিয়েছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতের দিকে। অথচ এই অভিযানের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগেও মোদীর আচরণে তার বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত মেলেনি। ২৫ ফেব্রুয়ারি মোদী নয়াদিল্লিতে জাতীয় যুদ্ধস্মারকের উদ্বোধন করেন। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন সেই অনুষ্ঠানে। কিন্তু, একটিবারের জন্যও পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার কোনও আঁচ ছিল না তাঁর বক্তব্যে।

এমনকী রাত ৯টা নাগাদ যখন ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান উড়ানের অপেক্ষায় রয়েছে, তখনও প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে মিডিয়া গ্রুপের একটি সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। ঘড়ির কাঁটা যত এগিয়েছে, তখনও মোদীর মুখে-চোখে কোনও উদ্বেগের চিহ্নমাত্র দেখা যায়নি। মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, মুখে শান্তির রেখা হল ঝড়ের অশনি সংকেত। 

ঠিক তেমনটাই এবারেও ঘটেছে। পহলগাম কাণ্ডের পর থেকে গোটা মন্ত্রিসভা থেকে তিন বাহিনীর প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, সর্বদল বৈঠক চলেছে দিনের পর দিন ধরে। সুপার ক্যাবিনেট বৈঠকের দিন বিকেল ৪টের সময় ডাকা হয়েছিল সাংবাদিক বৈঠক। গোটা দেশের সঙ্গে পাকিস্তানও অপেক্ষা করছিল কখন যুদ্ধ ঘোষণা করবে ভারত। আর তাই দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ থেকে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওল ভুট্টো জারদারি হাতে গরম বিবৃতি দিয়ে সাবধান করেছেন, হুমকি দিয়েছেন ভারতকে। পাকিস্তানের সঙ্গে সবরকম কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় ভারত। তখনও কেউ বুঝতে পারেননি মোদীর মন কি বাত।

তারপরেই এল মোক্ষম মাস্টার স্ট্রোক, মক ড্রিল। অর্থাৎ যুদ্ধকালীন নিরাপত্তার মহড়া চলবে দেশ জুড়ে। দুদিন আগে থেকেই গোটা দেশকে মাতিয়ে দেওয়া হল এই মহড়া-নৃত্যে। কী হবে, কেন হবে, কীভাবে হবে তা নিয়ে মত্ত ছিল দেশের প্রচার মাধ্যমগুলি। পাকিস্তানের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া চলার মধ্যেও মোদী কাউকে টের পেতে দেননি আসলে কী ঘটতে চলেছে। পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকে একত্রিত করতে গিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হওয়ার পরেও সামান্য মুখ খোলেননি মোদী।

আর এই মহড়া নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের মতোই পাকিস্তান সোফায় গা এলিয়ে বসেছিল ভারত সিন্ধু জলচুক্তির মধ্যেই প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ থাকবে এই আশায়। পহলগাম ঘটনার খবর শুনেই নরেন্দ্র মোদী সৌদি সফর অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে আসেন। তখনও পাকিস্তান টের পায়নি এবারেও সে দেশের ভিতরে ঢুকে পাল্টা মার দেবেন মোদী। অপারেশন সিঁদুরের পর মে মাসের মাঝামাঝি ইউরোপের তিন দেশীয় সফর বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ক্রোয়েশিয়া, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তার আগেই রাশিয়ার বিজয় দিবসে যাওয়াও বাতিল করে দেন মোদী। এত কিছু পরেও পাকিস্তান চর সংস্থার ব্যর্থতা যে, তারা গোপনতম অভিযানের কথা টেরই পায়নি।

আর সেই মুহূর্তেই ভারতের ত্রিশূল অভিযান পাকিস্তানি জঙ্গিদের উপর। এই হলেন মোদী। যুদ্ধ নীতিতে বলা হয়, শত্রুকে যখন চিনে ফেলে যায়, তখন তাকে পরাস্ত করা অত্যন্ত সহজ। পাকিস্তানের ভুল ঠিক এই জায়গাতেই। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে পাকিস্তান শিক্ষা নিতে পারেনি যে, মোদীর মুখেচোখে যা ফুটে ওঠে, তার বহিঃপ্রকাশ বিপরীত হয়। অনেকটা পেনাল্টি কিক মারার মতো, নজর বাঁদিকে তো বলে লাথি পড়ে ডানদিকে। মোদী শান্ত, স্থির, নিশ্চল, উদ্বেগহীন মানেই শত্রুপক্ষের কাছে তা বিনাশকারী।


ভিডিও স্টোরি