শেষ আপডেট: 7th March 2025 13:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কয়েক শতাব্দী ধরে বিশ্বজুড়ে মহিলারা সাম্য, সমানাধিকার, স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ দেশে নারীর অধিকার দুর্বল হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নারীবিষয়ক বিভাগ ইউএন উইমেন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তাতে সামগ্রিকভাবে নারীর অধিকার দুর্বল হওয়ার পিছনে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে গণতন্ত্রের চরিত্র বদলের মতো নানা কারণের কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার সঙ্গে লিঙ্গসমতায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া নারী অধিকার বিরোধীরা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। ১৯৯৫ সালের বিশ্ব নারী সম্মেলনের নথির উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় এক-চতুর্থাংশ দেশ জানিয়েছে, লিঙ্গসমতার উপর প্রতিক্রিয়া বেজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ১৯৯৫ সালের পর থেকে নারী প্রতিনিধিত্ব দ্বিগুণ হয়েছে। তবে এখনও সংসদ সদস্যদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ। ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। তবে ২০০ কোটি নারী ও নাবালিকা ও শিশুকন্যা এখনও এমন জায়গায় বাস করে, যাদের এ ধরনের সুরক্ষা নেই। লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থানের বৈষম্য কয়েক দশক ধরে স্থির হয়ে আছে। ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সি ৬৩ শতাংশ নারীর বেতনভুক্ত কর্মসংস্থান রয়েছে, যেখানে একই জনসংখ্যার ৯২ শতাংশ পুরুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।
প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ মহামারি, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো গজিয়ে ওঠা প্রযুক্তিগুলোকে লিঙ্গসমতার জন্য নতুন সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্যে দেখা গিয়েছে, গত ১০ বছর সংঘাত-সম্পর্কিত যৌন হিংসা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ৯৫ শতাংশই শিশু বা তরুণী। ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার ১২টি দেশে, কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ নারী অনলাইনে এক বা একাধিক ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসা উদ্বেগজনক হারে অব্যাহত রয়েছে। জীবদ্দশায় প্রায় তিনজনের মধ্যে একজন নারী তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন হিংসার শিকার হন অথবা তাঁর সঙ্গীর বাইরের কারও দ্বারা যৌন হিংসার শিকার হন। প্রতিবেদনে লিঙ্গবৈষম্য মোকাবিলায় একটি বহুমুখী দিশা নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। যাতে এআইয়ের মতো নতুন প্রযুক্তিতে ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, দারিদ্র্য মোকাবিলায় বিনিয়োগ এবং লিঙ্গভিত্তিক হিংস্রতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে।