Latest News

এভারেস্টে নামছিল মৃত্যুর ছায়া, বরফে জমে যাচ্ছিলেন জীবন্ত ‘শার্প’, ফেলে পালিয়েছিলেন সবাই

২০০৬ সালের বসন্তে, এভারেস্টের বুকে ঘটেছিল এই মর্মান্তিক ঘটনা।

রূপাঞ্জন গোস্বামী

ব্রিটিশ পর্বতারোহী, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক ডেভিড শার্প। কারাকোরামের গাসেরব্রুম-টু ((২৬৩৫৮ ফুট) আরোহণে অসফল হয়ে, ২০০২ সালে পৃথিবীর ষষ্ঠ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ চো অইয়ু (২৬০১০ ফুট) আরোহণ করে ছিলেন। এর পর ২০০৩ ও ২০০৪ সালে গিয়েছিলেন এভারেস্ট অভিযানে। প্রথমবার তুষারক্ষতের কারণে ও দ্বিতীয়বার আবহাওয়ার কারণে ফিরে এসেছিলেন ২৭৮৮৭ ফুট উচ্চতা থেকে।

ডেভিড শার্প

২০০৬ সালের বসন্তে, শেষবারের জন্য ফিরে এসেছিলেন এভারেস্টে

আগের দু’বারের মতোই উত্তর দিক দিয়ে এভারেস্ট আরোহণের উদ্দেশ্যে, এভারেস্টের আঙিনায় পা ফেলেছিলেন শার্প। এবার আর কোনও টিম নিয়ে নয়, একেবারে একা। শার্প তাঁর একক এভারেস্ট অভিযানের নাম দিয়েছিলেন ‘ইকো এভারেস্ট ট্রিপ’। দূষণ না ছড়িয়ে এভারেস্টে আরোহণ করবেন। শার্পের অভিযানের ব্যবস্থা করেছিল কাঠমান্ডুর এশিয়ান ট্রেকিং কোম্পানি। এভারেস্ট আরোহণের পারমিট, তিব্বতে প্রবেশের পর যানবাহন, অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প পর্যন্ত খাবার আর টেন্টের দায়িত্ব কোম্পানির। অ্যাডভান্স বেসক্যাম্পের পর শার্পকে নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায়, ওপরের ক্যাম্পগুলিতে কোম্পানির দেওয়া সুবিধা নেওয়া সম্ভব হয়নি শার্পের। 

লাসা থেকে গাড়িতে বেসক্যাম্প, সেখান থেকে এগারো মাইল হেঁটে উঠে এসেছিলেন নর্থ কলের নীচে থাকা অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পে (২১৩০০ফুট)। সে বছর এশিয়ান ট্রেকিং কোম্পানির চোদ্দ জন ক্লায়েন্ট এককভাবে অভিযানে এসেছিলেন। চোদ্দ জন আরোহী নিজেরাই একটি অলিখিত দল তৈরি করে নিয়েছিলেন। তবে আপনভোলা শার্পকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি বাকিরা। কিন্তু উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য,শার্প একাই বেশ কয়েকবার ২২৯৬৫ ফুট পর্যন্ত ওঠানামা করেছিলেন। মাত্র পাঁচ দিনে। বেশ কিছু অসুস্থ্য অভিযাত্রীকে শ্রুশ্রুষাও করেছিলেন বিবেকের তাগিদে।

অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প, নর্থ কল রুট।

 ১৩ মে,২০০৬

অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প থেকে সন্ধ্যে নাগাদ এভারেস্ট শিখরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ডেভিড শার্প। এশিয়ান ট্রেকিং কোম্পানির বাকি তেরোজন ক্লায়েন্টকে কিছু না জানিয়ে। সঙ্গে ছিল মাত্র দু’বোতল সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন, ছিল না কোনও টু-ওয়ে রেডিও বা স্যাটেলাইট ফোন।

ডেভিড শার্পের প্ল্যান ছিল, অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প থেকে ‘নর্থ কল’  বা ক্যাম্প-১ (২৩০০০ ফুট)ক্যাম্প-২ (২৪৭৫০ফুট)→ ক্যাম্প-৩ (২৭,৩৯০ ফুট)→ ইয়োলো ব্যান্ডফার্স্ট স্টেপ (২৭৮৯০ ফুট)→মাশরুম রক(২৮০৪৭ ফুট) →সেকেন্ড স্টেপ (২৮২৫০ফুট)→থার্ড স্টেপ (২৮৫৮০ ফুট)→সামিট পিরামিডএভারেস্ট শিখর ( ২৯০৩৫ ফুট) হয়ে ফিরে আসার।

 এগিয়ে চলেছিলেন শার্প

সেই বছর( ২০০৬), এভারেস্টের উত্তর দিক থেকে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছিল ‘হিমেক্স’ নামের বিখ্যাত একটি সংস্থা। এভারেস্ট অভিযানে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সেরা গাইড সরবরাহ করে থাকে সংস্থাটি। সেই সন্ধ্যায় ক্যাম্প-৩ থেকে হিমেক্সের কয়েকটি টিম বেরিয়ে পড়েছিল শিখরের উদ্দেশ্যে। একটি টিমে ছিলেন ডিসকভারি চ্যানেলের নিজস্ব ক্যামেরাম্যান মার্ক হুইটু। কারণ ডিসকভারি চ্যানেল তাদের  ‘এভারেস্ট, বিয়ন্ড দ্য লিমিট’ টিভি শোয়ের শ্যুটিং শুরু করেছিল। নিউজিল্যান্ডের দুই পা হারানো পর্বতারোহী মার্ক ইঙ্গলিসের, আরোহণপর্বের ছবি তুলতে তুলতে যাবে হিমেক্সের ওই টিমটি। শেরপাদের হেলমেটেও তাই লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল ক্যামেরা।

ডিসকভারি চ্যানেলের একটি টিম। লাল পোশাকে প্রতিবন্ধী পর্বতারোহী মার্ক ইঙ্গলিস।

১৩-১৪ মে, রাত একটা। ক্যাম্প-৩ থেকে শৃঙ্গে যাওয়ার পথে বিল ক্রোসের নেতৃত্বে থাকা হিমেক্স টিমটি প্রথম দেখেছিল ডেভিড শার্পকে। ডেভিড শার্প তখন ক্যাম্প-৩ (২৭৩৯০ ফুট) পেরিয়ে ‘এক্সিট ক্র্যাক’-এর কাছে। এই অংশটি পেরিয়ে তিনি ধরবেন উত্তর-পূর্ব গিরিশিরা, উঠে যাবেন শিখরের দিকে। হিমেক্স টিমটি পাশ কাটিয়ে গিয়েছিল ডেভিড শার্পকে। এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ করে নেমে আসার সময়, বেলা এগারোটার (১৪ মে) সময় হিমেক্স টিমটি সেকেন্ড স্টেপ থেকে আবার  দেখতে পেয়েছিল ডেভিড শার্পকে।

শার্প তখন ফার্স্ট স্টেপের নীচে। ঘন্টা কয়েক পরে হিমেক্স টিমটি  ফার্স্ট স্টেপে নেমে এসেছিল। ডেভিড শার্প তখন উঠে এসেছিলেন ফার্স্ট স্টেপে। খুব আস্তে আস্তে হাঁটছিলেন তিনি এবং বেলা বারোটা বেজে গিয়েছিল। হিমেক্স দলনেতা বুঝেছিলেন, এই সময় শৃঙ্গের দিকে এগিয়ে যাওয়া মানে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া। কিন্তু এটা জানার চেষ্টা করেননি, কেন একজন আরোহী প্রায় ষোল ঘন্টা ধরে প্রায় একই এলাকায় আরোহণ করছেন। কিছু সাহায্য লাগবে কিনা তাও জিজ্ঞেস করেননি।

ফার্স্ট স্টেপ। হিমেক্সের দলটি এখানেই দেখেছিল পেয়েছিল শার্পকে।

 শার্প উঠে এসেছিলেন মৃত্যুগুহায়

এভারেস্টের নর্থ ফেস রুটে, ২৭৯০০ ফুট উঁচুতে আছে চুনাপাথরের বিখ্যাত ওভারহ্যাং ‘গ্রিন বুট কেভ’। গুহার ভেতর বাম পাশ ফিরে, ১৯৯৬ সাল থেকে শেষঘুমে ঘুমিয়েছিলেন এক পর্বতারোহী। যাঁকে বিশ্ব চেনে গ্রিনবুট নামে। মৃতদেহটির পায়ে থাকা ফ্লুরোসেন্ট রঙের সবুজ ক্লাইম্বিং বুটদুটির জন্যই গুহা ও মৃতদেহের নাম হয়ে গিয়েছিল গ্রিন বুট[এ প্রসঙ্গে পড়ুন- মৃত্যু্র পর কেটে গিয়েছিল ২২ বছর, এভারেস্টের বরফে শুয়ে পথ দেখাতেন পালজোর]

১৪ মে মাঝ রাতে, শৃঙ্গে যাওয়ার পথে তুরস্কের একটি দল উঠে এসেছিল গ্রিনবুট কেভের সামনে। গ্রিনবুটের শবের ডানপাশে, দলটি আবিষ্কার করেছিল এক অচেনা পর্বতারোহীকে। দুই হাঁটু ভাঁজ করে, তার মধ্যে মাথা গুঁজে বসে ছিলেন ডেভিড শার্প। সঙ্গে ছিল না কোনও ব্যাকপ্যাক। দলটির সদস্যরা শার্পকে ডেকেছিলেন, তিনি হাত নেড়ে দলটিকে এগিয়ে যেতে বলেছিলেন। দলটি ভেবেছিল তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন, এগিয়ে গিয়েছিল শৃঙ্গের দিকে।

গ্রিন বুট কেভে ‘গ্রিন বুট’। এখানেই বসেছিলেন শার্প।

কিছুক্ষণ পরে এসেছিল হিমেক্সের দ্বিতীয় দলটি। দলে ছিলেন অভিজ্ঞ ক্লাইম্বিং গাইড মার্ক উডওয়ার্ড, ফুরবা তাশি শেরপা, নিউজিল্যান্ডের দুই পা হারানো পর্বতারোহী মার্ক ইঙ্গলিস, ওয়েন আলেকজান্ডার, ডিসকভারি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান মার্ক হুইটু  ও তাঁদের শেরপারা। ডেভিড শার্প তখন ফ্রস্টবাইটে ভয়ঙ্করভাবে আক্রান্ত ও অচৈতন্য। কিন্তু শ্বাস নিচ্ছেন। হাতে পাতলা গ্লাভস, পাশে পড়ে আছে অক্সিজেনের খালি সিলিন্ডার। গাইড মার্ক উডওয়ার্ড ভেবেছিলেন, শার্প কোমায় চলে গিয়েছেন। আর উদ্ধার করা যাবে না। দলটি এগিয়ে গিয়েছিল শৃঙ্গের দিকে। ওয়েন আলেকজান্ডার শার্পকে বলেছিলেন ‘গড ব্লেস…রেস্ট ইন পিস’।

১৫ মে, সকাল 

সেদিন ভোরে তুরস্কের দলটির অনেকেই এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ করেছিলেন। নেমে আসার পথে, সকাল আটটার সময় গ্রিনবুট কেভের ভেতর শার্পকে জীবিত দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল দলটি। দলটি নাকি শার্পকে দাঁড় করাবার চেষ্টা করেছিল অক্সিজেন ও তরল খাবার দিয়েছিল।

কিন্তু তাঁদের দলের মহিলা ক্লাইম্বার বুরকাক ওজোগ্লু অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন। পর্বতের ২৬০০০ ফুটের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’। সেই ডেথ জোনে সময় নষ্ট করা মানে, অক্সিজেন ও জীবনীশক্তি ফুরিয়ে ফেলে, দল ও নিজেকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া। তাই তুরস্কের দলটি শার্পের পিছনে সময় নষ্ট না করে নিজের দলের অসুস্থ্য আরোহীকে নীচে নামাবার কাজে মন দিয়েছিল।

এসেছিলেন ম্যাক্সিম ছায়া

শৃঙ্গ থেকে সকাল ৯ টার সময় গ্রিন বুট কেভে নেমে এসেছিলেন লেবাননের আরোহী ম্যাক্সিম ছায়া। ডেভিড শার্পের মাথায় টুপি ও হাতে গ্লাভস ছিল না। সারা শরীরে বরফ জমে গিয়েছিল। বরফের পুতুলের মতো লাগছিল শার্পকে। কিন্তু তখনও আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে ছিলেন শার্প। ভীষণভাবে কাঁপছিলেন। একসময় থেমে গিয়েছিল কাঁপুনি। ম্যাক্সিম ছায়া ও তাঁর তিব্বতি গাইড দোরজি ভেবেছিলেন, শার্প মারা গেলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার কাঁপুনি শুরু হয়েছিল।

ব্যাকপ্যাক নামিয়ে ম্যাক্সিম ছায়া শার্পকে বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন। শার্পের মুখ কুচকুচে কালো হয়ে গিয়েছিল,  সেরিব্রাল ইডিমার সব লক্ষণ দেখা দিয়েছিল শরীরে। শৃঙ্গ থেকে নামতে থাকা একের পর এক আরোহীর কাছে, ম্যাক্সিম ছায়া কাতর অনুরোধ করেছিলেন, ডেভিড শার্পকে নিচে নামাতে সাহায্য করার জন্য। সাড়া দেননি কেউই। সাহায্য চেয়ে বার বার রেডিও মেসেজ পাঠিয়েছিলেন ম্যাক্সিম ছায়া, নীচের ক্যাম্পগুলিতে। উত্তর আসেনি। বরং ম্যাক্সিমকে নীচে নেমে আসতে বলেছিল তাঁর টিম। নিজেদের অক্সিজেন ফুরিয়ে আসছিল। অবশেষে ডেভিড শার্পকে ছেড়ে, ফেরার পথ ধরেছিলেন ম্যাক্সিম ছায়া। একরাশ অপরাধবোধ নিয়ে।

ম্যাক্সিম ছায়া

ফুরিয়ে আসছিল সময়

এরপর শৃঙ্গ থেকে নেমে এসেছিল হিমেক্সের দ্বিতীয় দলটি। শেরপা দলনেতা ফুরবা তাসি শেরপা ও আর একজন শেরপা  নাকি বাঁচাবার চেষ্টা করেছিলেন শার্পকে। অক্সিজেন দিয়েছিলেন, খেতে দিয়েছিলেন, গায়ে ম্যাসেজ করেছিলেন। কুড়ি মিনিটের চেষ্টায় শার্প নাকি মাত্র চার পা এগিয়েছিলেন। এক সময় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁরাও। শার্পকে ফেলে নীচের দিকে নেমে গিয়েছিল দলটি। তখনও ভয়ঙ্করভাবে কাঁপছিলেন শার্প। হেঁচকি উঠছিল অবিরত।

এর পর আর কাউকে বিরক্ত করেননি শার্প। ১৫ মে, মাঝরাতে, গ্রিন বুটের ডানপাশে, দুই হাঁটু মুড়ে বসা থাকা অবস্থাতেই  গ্রিনবুটের সঙ্গী হয়ে গিয়েছিলেন ৩৪ বছরের ডেভিড শার্প। হয়ে গিয়েছিলেন, এভারেস্টের বরফকে চিরতরে আঁকড়ে ধরা, ১৯৯ তম আরোহী।

এভাবেই চলে গিয়েছিলেন ডেভিড শার্প। (হেলমেট ক্যামেরায় তোলা ছবি)

রেখে গিয়েছিলেন একরাশ প্রশ্ন

গ্রিনবুট গুহায় প্রাণ হারাতে বসা শার্পের একটি ভিডিও পাওয়া গিয়েছিল। ডিসকভারি টিমের সঙ্গে থাকা শেরপার হেলমেট ক্যামেরায় তোলা। ভিডিওটি দেখলে বোঝা যাবে কীভাবে মৃত্যুমুখে পৌঁছে যাওয়া একটি মানুষের ছবি, বিভিন্ন দিক থেকে তোলা হয়েছে। ভিডিওতে ধরা পড়েনি শ্রুশ্রুষার বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টা। ধরা পড়েছিল, এভারেস্টের বুকে একটা নির্মম মৃত্যুকে    ক্যামেরাবন্দি করার ঘৃণ্য মানসিকতা।

পরবর্তীকালে দলগুলি বলেছিল, শার্পকে সাহায্য করা হয়েছিল। ওঠানো ও হাঁটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সত্যি সত্যিই করা হলে, মানুষটি ১৪ তারিখ মাঝরাত থেকে ১৫ তারিখ মাঝরাত পর্যন্ত একই জায়গায়, একইরকম ভঙ্গীতে বসেছিলেন কীভাবে। কোথায় গেল ডেভিড শার্পের ক্যামেরা? কোথায় গেল তাঁর ব্যাকপ্যাক ও আরেকটা অক্সিজেন সিলিন্ডার? শার্পকে শ্রুশ্রুষা করবার কোনও ফুটেজ বা ছবি পাওয়া গেল না কেন?

গ্রিন বুটের ঠিক পিছনে শার্প। গুহার বাইরে লাল পোশাকে প্রতিবন্ধী আরোহী ইঙ্গলিস। শুটিং চলছিল।

১৪ মে মাঝরাত থেকে ১৫ মে মাঝরাত পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন ডেভিড শার্প। কাটিয়েছিলেন মরশুমের শীতলতম রাত। একই জায়গায় বসে থেকে, বরফে জমে, তিলে তিলে এগিয়ে গিয়েছিলেন মৃত্যুর দিকে। তাঁর সামনে দিয়েই  ৪৩ জন আরোহী  নীচে নেমে গিয়েছিলেন, ‘রেস্ট ইন পিস’ বলে।

জ্ঞান হারানোর আগে, হয়তো শার্পের মনে পড়েছিল ২০০৩ সালের কথা। এভারেস্টে নিজের সামিট পুশ তুষারক্ষতের কারণে অসফল হওয়ায় পর, ওই অবস্থাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়েছিলেন এক স্প্যানিশ ক্লাইম্বারকে। তাঁকে মৃত্যুর হাতে ছেড়ে দিয়ে জীবনের পথে পা বাড়ানো অভিযাত্রীদের দেখে, হয়ত  ম্লান মুখে হেসেছিলেন মৃত্যুপথযাত্রী ডেভিড শার্প।

ডেভিড শার্প

 

You might also like