শেষ আপডেট: 8th June 2024 18:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'হামারে দাম অব উন সে জাদা হ্যায়...।' ফের কলমে আগুন জ্বলে উঠল গুলজারের। প্রবাদপ্রতিম কবি, গীতিকার, সুরকার, কাহিনিকার, পরিচালক কোন পরিচয়টা নেই গুলজারের ঝোলায়! সেই কবি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে বারবার কলমের খোঁচায় রক্তাক্ত করেছেন। তুলে ধরেছেন ভারতের অন্তঃসারশূন্য, আদর্শহীন রাজনীতিকে। ব্যঙ্গ, শ্লেষ, কটাক্ষের কাঁটায় বিদ্ধ করতে তাঁর আঙুল কাঁপেনি রাষ্ট্রশোষণের যন্ত্রের ভয়ে। তাই এবারও মিলিজুলি সরকারের আবহাওয়ায় নেমে এল গুলজারের কবিতার বজ্রপাত।
জোট রাজনীতির অন্দরের ব্যাখ্যা দিলেন কবিতার একটিমাত্র পংক্তিতে- আমার দাম এখন ওর থেকেও বেশি। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই কথাটা তেলুগু দেশম পার্টির এন চন্দ্রবাবু নাইডু এবং জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারকে বাজ হেনেই।
প্রেম, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও রাজনীতি- এই ত্রয়ীকে মিলিয়েই গুলজার। তাই দেশের মানুষের আশা নিয়ে অনায়াসে তিনি গান বাঁধেন, সুর দেন জনতার বিশ্বাসের 'স্বর'গমে। একবার বলেছিলেন, ভোট হল সাধারণ মানুষের হাতে পাওয়া শেষ এবং একমাত্র অধিকার।
লিখেছিলেন, পরচাইয়াঁ বাঁট রহি হ্যায় গলিয়োঁ মে, আপনে কাতিল কা ইন্তেখাব করো, ওয়াক্ত ইয়ে সাকত হ্যায় চুনাও কা। অর্থাৎ গলি গলিতে প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে। তোমার খুনিকে তোমারই সমর্থনের সময় এসে গিয়েছে। ভোটের মতো কঠিন এক সময় আমাদের উপর নাচছে।
আর এবার তারও এক ধাপ উপরে জোট সরকারকে তির্যক শ্লেষের রসে চুবিয়ে হাজির করলেন কবিতায়। এবারের ফলাফলে তাঁর চোখে ধরা পড়েছে বেয়াদব ঘোড়ার বেপরোয়া লাফালাফি। রাজনীতি এবং কবিতা দুনিয়াকে দুটুকরো করে দেবে না। ওরা প্রচার করে পদ্যে, আর শাসন করে গদ্যে। তাঁর নতুন কবিতায় গুলজার লিখেছেন, জোট সরকারের দরাদরি নিয়ে।
দেশের জরুরি অবস্থা নিয়ে 'আঁধি' সিনেমা তৈরি করেছিলেন ১৯৭৫ সালে। ইন্দিরা গান্ধী সরকার সেই সিনেমা নিষিদ্ধ করে দেয়। ১৯৯৬ সালে পাঞ্জাবের উগ্রপন্থা নিয়ে তৈরি করেন 'মাচিস' সিনেমা। কোভিড ১৯-এর সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে কলম ধরেছিলেন।
এবার যে কবিতা লিখেছেন, তার প্রথম তিনটি পংক্তি হল, বড়ে মাগরুর হ্যায় ঘোড়ে সুনা হ্যায়, উও মন মর্জি সে চলনে লগ গয়ে হ্যায়, উও সোনে কি লাগামে মাঙ্গতে হ্যায়। যার অর্থ, ঘোড়াগুলো খুবই দাম্ভিক, উদ্ধত। আমি শুনলাম তারা নিজের মতো ইচ্ছেমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন ওরা সোনার লাগাম পরার বায়না করছে।
স্পষ্টতই দেশের স্থায়িত্বের বিনিময়ে ক্ষুদ্র দলগুলির বিরাট দামদস্তুর করাকে ইঙ্গিত করেছেন গুলজার। আপাতভাবে জেডিইউ এবং টিডিপিকেই লক্ষ্য করেছেন তিনি। গুলজার ক্ষুরধার শব্দে বিঁধেছেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে। পরের তিনটি পংক্তিতে গুলজার লিখেছেন, চালো জাও না মাঙ্গো শের শাদি কে লিয়ে অব, হামারে দাম অব উন সে জাদা হ্যায়-অর্থ হল সিংহকে এখন বিয়ের প্রস্তাব দিও না। আমাদের দাম এখন ওদের থেকে বেশি।