শেষ আপডেট: 3rd August 2024 19:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এখনকার ছেলেমেয়েরা না পড়লেও একসময় ছোটবেলায় অবন ঠাকুরের রাজকাহিনী পড়েননি, এমন প্রৌঢ় বা মধ্যবয়সির সংখ্যা কম। অবন ঠাকুরের পুরো নাম অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নাম শুনেই বোঝা যায়, ঠাকুরবাড়ির মানুষ। ঠিক তাই, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খুড়তুতো ভাইপো অবন ঠাকুরের নাম দিগ্বিজয় করেছে তাঁর নিজগুণেই। অবন ঠাকুরের তুলি-রংয়ের মতোই তাঁর কলমটিও সাবলীল। বেশ কয়েকটি শিশুপাঠ্য বই লিখেছিলেন তিনি। যার মধ্যে অন্যতম একটি হল রাজকাহিনী। এছাড়াও তাঁর কলম থেকে বেরিয়েছে, শকুন্তলা, ক্ষীরের পুতুল, নালক, বুড়ো আংলার মতো বেশ কয়েকটি শিশু-আহ্লাদী ছবিতে-গল্পে লেখা বই। সেই অবন ঠাকুরের রাজকাহিনী এবার ইংরেজি অনুবাদ হয়ে পাঠকের দরজায় এসে গিয়েছে।
ব্রিটিশ পদানত ভারতে তথা বাংলাদেশে হিন্দু জাগরণের জন্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুসলিম আগ্রাসন, রাজপুতদের বীরত্বগাথা, ভীল আদিবাসীদের সংগ্রাম নিয়ে রাজস্থানের প্রেক্ষাপটে ছোটগল্পের মালা গেঁথেছিলেন তাঁর রাজকাহিনী বইতে। একথা বলেছেন অনুবাদক সন্দীপন দেব। তিনি অবশ্য বইয়ের নাম রেখেছেন ভিন্ন। সূর্যবংশী। তাঁর মতে, কিং আর্থারের মতোই অবন ঠাকুরের এই লেখাগুলি গুরুত্বপূর্ণ। ১৯০৯ সালে লেখা রাজকাহিনী। সেই গল্পগুলির মধ্য দিয়ে তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ বা ভারতের সঙ্গে অতীত দিনের গৌরবোজ্জ্বল বীরগাথা তুলে ধরে একটা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। যাতে রাজস্থানি বীরদের মতোই এ দেশেও মাতৃভূমি জোর করে নেওয়ার প্রতিবাদে আগুন জ্বলে উঠতে পারে।
সংবাদমাধ্যম দি প্রিন্টকে সন্দীপন দেব বলেন, এটা কোনও ইতিহাস বই নয়। তাঁর লেখা সূর্যবংশী, দ্য সান কিংস অফ রাজস্থান বই সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা সেই সময়ের গল্প যখন রাজপুত রাজা ও সৈন্যরা দেশমাতৃকাকে রক্ষার জন্য পরাক্রমী মুঘলদের সঙ্গে পাঞ্জা নিয়েছিল। সলমন রুশদি যেমন তাঁর মিডনাইটস চিলড্রেনে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পরাধীনতা মুক্তির সময়কে তুলে ধরেছিলেন, ঠিক তেমনই রাজকাহিনী।
সন্দীপনের মনে হয়েছে, রাজকাহিনী শুধু বাংলার নয়, সব ভাষার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। তাই তিনি এর অনুবাদ করেছেন। দেশের বর্তমান প্রজন্মেরও জানা উচিত অতীতে ভারতের বীরত্ব, শৌর্যবীর্যের ইতিহাস কতটা মহত্বপূর্ণ ছিল। রাজপুতরা কীভাবে তাঁদের বীরত্বের সঙ্গে মুঘলদের মোকাবিলা করেছিলেন তা জানা উচিত এখনকার ছেলেমেয়েদেরও। অবন ঠাকুরও এই বই লিখেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম পর্বের মানুষকে উজ্জীবিত করতেই, বলেন সন্দীপন।