স্যান্টিয়াগো মার্টিন - ফাইল চিত্র
শেষ আপডেট: 22nd March 2024 08:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রথমবার যখন নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ্যে এনেছিল নির্বাচন কমিশন তখন জানা গেছিল, 'ফিউচার গেমিং' নামে এক অখ্যাত সংস্থার মালিক 'লটারি কিং' সান্তিয়াগো মার্টিন ১,৩৬৮ কোটি টাকার চাঁদা দিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলিকে। বৃহস্পতিবার ইউনিক নম্বর সহ বন্ডের সম্পূর্ণ তথ্য কমিশনে জমা দিয়েছে এসবিআই কর্তৃপক্ষ। সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর দেখা গেল, এই সংস্থার থেকে সর্বোচ্চ অনুদান বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে! সেই টাকার অঙ্ক ৫৪২ কোটি।
নির্বাচনী বন্ড থেকে সবথেকে বেশি আয় করেছে বিজেপি, এই তথ্য আগের প্রকাশ্যে এসেছে। সেটা ৬,৯৮৬.৫ কোটি টাকা! আয়ের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁরা নির্বাচনী বন্ড থেকে পেয়েছে ১,৩৯৭ কোটি টাকা। এখন জানা গেল, এই টাকার বেশিরভাগটাই এসেছে এই 'লটারি কিং'-এর মাধ্যমে। 'ফিউচার গেমিং' সংস্থা ছাড়াও তৃণমূলকে বড় অনুদান দিয়েছে কলকাতার আরপিএসজি গ্রুপ। মোট চারটি শাখা মিলিয়ে তাঁরা অনুদান দিয়েছে ৩৯২ কোটি টাকা। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতার কেভেন্টার সংস্থা থেকে ৬৫ কোটির অনুদান পেয়েছে।
'ফিউচার গ্যামিং' এবং আরপিএসজি-র হলদিয়া এনার্জি কোম্পানি ছাড়া আর কারও থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি অনুদান পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনী বন্ডের তথ্য বলছে, ধারিওয়াল সংস্থা থেকে তাঁরা ৯০ কোটি টাকা পেয়েছে, আইএফবি ইন্ডাস্ট্রি তাদের ৪২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। পাশাপাশি আরও তিনটি সংস্থা থেকে সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসবিআই কর্তৃপক্ষ বন্ডের যে ইউনিক নম্বর কমিশনে জমা দিয়েছে তা থেকে দাতা এবং রাজনৈতিক দলগুলির যোগসূত্র করা গেছে। এর আগে তামিলনাড়ুর ডিএমকে দল নিজেরাই জানিয়েছিল যে, তাঁরা মার্টিনের সংস্থা থেকে ৫০৯ কোটি টাকা পেয়েছে। এবার জানা গেল, তার থেকেও বেশি অনুদান এসেছে তৃণমূলের ঘরে। প্রসঙ্গত, মার্টিনের সংস্থা বিজেপিকে চাঁদা দিয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস পেয়েছে ১৫৪ কোটি টাকা।
কে এই 'লটারি কিং' যার থেকে সবথেকে বেশি টাকা পেল তৃণমূল কংগ্রেস? সান্তিয়াগো মার্টিন মায়ানমারের ইয়াঙ্গনে দিনমজুর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি ভারতে চলে আসেন এবং তামিলনাড়ুতে একটি লটারি এন্টারপ্রাইজ তৈরি করেন। তারপর থেকে লটারি কোম্পানির বপু বৃদ্ধি ঘটে ছড়িয়ে পড়ে কর্নাটক, কেরল ও উত্তর-পূর্ব ভারতেও। এরপর তিনি সরকারি লটারি প্রকল্পগুলির সঙ্গে হাত মেলান। তখন তাঁর ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ে ভুটান ও নেপালেও। পরবর্তী সময়ে অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো এবং স্পোর্টস বেটিং ব্যবসায় ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। ততদিন তাঁকে লোকজন 'লটারি কিং' বলে ডাকতে শুরু করেছিল।