শেষ আপডেট: 4 March 2024 12:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় এক দফায় ভোট করানোর দাবি জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ কলকাতায় এসেছে। এদিন কমিশনের ওই ফুল বেঞ্চ একে একে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে। তাঁদের বক্তব্য শোনে। ওই বৈঠকে তৃণমূলের তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বাংলায় এক দফাতেই ভোট করাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ দফায় দফায় আসবেন বলে তত দফায় ভোট হবে, তা যেন না হয়।
বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেই বৈঠক হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের। সেই বৈঠক হওয়ার পর বাংলায় একদফা ভোটের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগের সুরে বলেন, ''যেখানে বিজেপি শাসক দল হিসাবে রয়েছে সেই রাজ্যে হচ্ছে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে একদিনে নির্বাচন হচ্ছে না।'' কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। কল্যাণের কথায়, ''মোদী-অমিত শাহদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য দ্বিগুণ ফোর্স পাঠানো হচ্ছে বাংলায়। এদিকে তাঁরা এসে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। মানুষকে হুমকি দিয়ে বলছে পদ্মতে ভোট দিতে হবে।''
কল্যাণ এই প্রসঙ্গে সরাসরি নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তাঁর বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারী বলে দিচ্ছেন কোথায় সিআইএসএফ যাবে, কোথায় ইডি যাবে। কিন্তু তৃণমূল এসবে ভয় পায় না। আধার কার্ডের ইস্যু নিয়েও শুভেন্দুকে বিঁধেছেন তিনি। বিজেপি বিধায়ক বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে দাবি করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আধার নিয়ে মিথ্যে কথা বলছেন। কোথাও কোনও আধার কার্ড বাতিল হয়নি। তবে সোমবার কল্যাণ আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারতবর্ষের কোনও রাজ্যে আধার কার্ড বাতিল হয়নি, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে। তাঁর সংযোজন, ''কেন্দ্রের শাসক দলের টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। সেই কারণেই আধার কার্ড বাতিল করেছে।''
নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে আর্জি জানান হয়েছে, যে কোনও ভাবেই হোক যেন স্বচ্ছ ভোট হয়। সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক ভোট লুট হয়েছিল। সন্দেশখালিতেও সম্প্রতি কী হয়েছে তা সকলেই জানেন। তাঁদের দাবি, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে সেই সমস্ত অফিসারদের কাজে লাগানো যাবে না ভোটের সময়ে। বিজেপি এবং কংগ্রেস নির্দিষ্টভাবে ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে।
বিজেপির তরফে শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি সিইও অফিসে গিয়ে ১৭ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের তথ্য জমা দিয়েছেন বলে দাবি করেন। সোমবারও নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চকে একই কথা বলেছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় প্রায় ১৭ লক্ষ ডবল এন্ট্রি আছে। তাদের বাদ দিতে হবে। এছাড়াও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিজেপির দাবি, আগেও দেখা গেছে ভোট পরবর্তী হিংসায় তাদের দলীয় কর্মীরা অনেকেই মারা গেছেন। সুতরাং ভোটারদের মধ্যে থেকে ভীতি দূর করে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।