শেষ আপডেট: 11th June 2024 15:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো ছবি!
রাজধানী দিল্লিতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দিলীপও সুকান্তর মাথায় হাত রেখে আশীবাদ করলেন, বুকেও টেনে নিলেন!
বাংলা থেকে শান্তনু ঠাকুরের পাশাপাশি এবার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে সুকান্ত মজুমদারকেও। রবিবার রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে শপথ গ্রহণের পর সোমবার দফতর পেয়েছেন সুকান্ত। এদিন নিজের নতুন ইনিংস শুরু করার আগে সুকান্ত পৌঁছে যান দিল্লিতে দিলীপের বাসভবনে। সেখানেই বর্ষীয়ান নেতার পা ছুঁয়ে প্রণাম করে আর্শীবাদও গ্রহণ করেন তিনি।
তারপর ওই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির অন্দরে তো বটেই বাংলার জনমানসেও তীব্র কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তবে কি বঙ্গ বিজেপিতে সুকান্ত-দিলীপের রেষারেষি শেষ হয়ে গেল?
সাম্প্রতিক অতীতে কখনও সরাসরি কখনও পরোক্ষভাবে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে দিলীপ-সুকান্তকে। ভোটে পরাজিত হওয়ার পর থেকে নাম না করে সুকান্ত-শুভেন্দুদের ইঙ্গিত করে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। কখনও 'কাঠিবাজি'র অভিযোগ এনেছেন। কখনও প্রশ্ন তুলেছেন, উনিশের চেয়ে এবারের ফল খারাপ হল কী করে?
পাল্টা জবাবে 'কাঠিবাজি বাঙালির অঙ্গ' বলে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত। আগের চেয়ে খারাপ ফলের প্রসঙ্গে শুভেন্দু আবার মনে করিয়েছেন, "তখন তৃণমূলের আই প্যাকও ছিল না, লক্ষ্মীর ভান্ডারও ছিল না।"
জবাবে দিলীপ আবার দলের নবীন-প্রবীণ বিতর্ককে উস্কে গত শনিবার সকালে ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, 'ওল্ড ইজ গোল্ড!' যা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে তো বটেই রাজ্য রাজনীতিতেও শোরগোল শুরু হয়। এর আগেই দিলীপ অভিযোগ করেছিলেন, গত চার বছর ধরে দলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে ডাকা হয় না।
এরপরই মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে দিল্লি থেকে আমন্ত্রণ পত্র এসে পৌঁছয় দিলীপের কাছে। তখন থেকে দিল্লিতে রয়েছেন দিলীপ। জানা গেছে, সাংসদ হিসেবে দিল্লিতে যে সরকারি বাসভবনে দিলীপ থাকতেন, সেটি ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছেন তিনি। এমন আবহে তার কাছে সুকান্তর আগমন অনেকের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ ঠেকেছে।
কারণ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সুকান্তর সরে যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। যদিও সুকান্ত বলেন, "দিলীপদা অভিজ্ঞ নেতা। ওঁর কাছ থেকে রাজনীতির অনেক কিছু শিখেছি। তাই নতুন দায়িত্ব গ্রহণের আগে ওনার আর্শীবাদ নিয়ে গেলাম।"
বিজেপি সূত্রের খবর, উনিশের ভোটে বালুরঘাটে সুকান্তর টিকিট পাওয়া কিংবা দিলীপ পরবর্তী সময়ে রাজ্য সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাবের নেপথ্যে ছিলেন ঘোষবাবু। সেক্ষেত্রে এই প্রণামের নেপথ্যে অনেকে 'গুরু দক্ষিণা'র ছায়াও দেখছেন। অপর একটি অংশের মতে, দলে পুরনোদেরও যে গুরুত্ব দেওয়া হয়, রাজ্য সভাপতি পদ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সম্ভবত সেই বার্তাও স্পষ্ট করে দিলেন সুকান্ত।