শেষ আপডেট: 21st May 2024 08:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গোটা দেশে ভোট পড়ার গড় হার যখন নিম্নগামী তখন অবাক করল কাশ্মীরের বারামুলা লোকসভা কেন্দ্র। সোমবার দেশের যে ৪৯টি লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে তারমধ্যে কাশ্মীরের একটি আসনই ছিল। নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই প্রবণতা টের পাওয়া যাচ্ছিল। রাতে জানা যায় ভোটদানের হার ৫৮.১৭ শতাংশ। ১৯৮৪ সালে পর কোনও নির্বাচনে বারামুলায় এত ভোট পড়েনি। সেবার ভোটদানের হার ছিল ৬১.০৯ শতাংশ।
কাশ্মীরে যে সব এলাকায় সারা বছর জঙ্গি-সেনা লড়াই চলে, প্রাণ হারে চলাফেরা করতে হয় মানুষকে, বারামুলা তার অন্যতম। ভোটের দু’দিন আগে ওই লোকসভারই সুফিয়ানে এক পঞ্চায়েত সদস্যক তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গি হুমকির মুখে ২০১৯-এ এই লোকসভা এলাকার কয়েকটি কেন্দ্রে ১০ শতাংশের কম ভোট পড়েছিল।
এবার আশঙ্কা ছাপিয়ে মানুষ ভোট দিতে বুথমুখী হওয়ায় সব মহলেই চর্চা শুরু হয়েছে। অত্যন্ত খুশি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁর কথায়, বারামুলা আমাদের ভরসা জোগালো। বোঝা যাচ্ছে সেখানে বিধানসভা ভোটও নিরাপদে করা সম্ভব।
জঙ্গি হামলা উপেক্ষা করে কেন তারা ভোটদানের এমন নজর গড়ল তা নিয়ে মুখ খুলেছেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। এর আগে শ্রীনগরেও ভোটের হার ভাল ছিল। দু-জায়গাতেই মানুষের বক্তব্য, তারা বার্তা দিতে চেয়েছেন নির্বাচিত সরকার চান। ২০১৯ থেক জম্মু-কাশ্মীর রাষ্ট্রপতি শাসনাধীনে আছে। পাঁচ বছর পর সেখানকার মানুষ ফের ভোটদানের সুযোগ পেলেন। আইন-শৃঙ্খলার কারণেই লোকসভা ও বিধানসভার ভোট একত্রে করা হয়নি। কিন্তু ভোটদানের হার বুঝিয়ে দিচ্ছে জঙ্গি হুমকির মুখে মানুষ আর ঘরে বসে থাকার পক্ষপাতী নয়। তারা চাইছে নির্বাচিত সরকার ফের ক্ষমতায় ফিরুক।
বারামুলায় প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম হলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। ন্যাশনাল কনফারেন্সের ঘাঁটি ওই এলাকা। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, বিধানসভা নির্বাচন হলে কোন দলের হাতে ক্ষমতা যেতে পারে, সেই হিসাব কষে ভোটের সিদ্ধান্ত হবে। তবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের বক্তব্যও উপেক্ষা করতে পারবে না সরকার। কমিশন প্রধানের কথায়, জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিগত চার দশকে জঙ্গিদের ভোট বয়কটের ডাকে ভয়ে বুথমুখী হতেন না মানুষ। এবার তারাই বিপরীত রাস্তায় হেঁটেছেন।