তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: 31 March 2024 09:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় ইন্ডিয়ার কোনও জোট হয়নি। কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রর সভা থেকে একথা ফের স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়ায় জনসভা থেকে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস এবং নাম না করে আইএসএফকে একই বন্ধনীতে রেখে মমতার দাবি, "বাংলায় জোট হয়নি, ঘোট হয়েছে। সিপিএম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া।"
তৃণমূল নেত্রী এও জানিয়েছেন, “ইন্ডিয়া জোট আমি তৈরি করেছি। নামটাও আমার দেওয়া। ভোটের পর ওটা দেখে নেব।” পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের আগে আসন সমঝোতা না হলেও প্রয়োজনে ভোটের পর ফের ইন্ডিয়া জোটে যোগ দিতে পারে তৃণমূল, সে ইঙ্গিতও এদিন মমতা দিয়ে রাখলেন।
এরপরই মোদীকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কোথাও দেখেছেন যে বিয়ে করে সেই পুরোহিত! এটা দেশের ভোট। অথচ ইলেকশন করছে বিজেপি। নিজেদের জেতাবার জন্য সব লোক ঠিক করেছে বিজেপি। তবু বলছি, বাংলায় গো হারান হারাব।"
কেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন আর কেন বিজেপিকে ভোট নয়, এদিনের সভা থেকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন মমতা। ১০০ দিনের কাজ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিনা পয়সার রেশনের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "বিজেপি ক্ষমতায় এলে সব প্রকল্প বন্ধ করে দেবে। নিশ্চয়ই বাংলার সর্বনাশ কেউ চান না।"
এরপরই জনতার উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী জানতে চান, "ভরসা আছে, বিশ্বাস আছে?" সমস্বরে জনতার সস্মতি শোনার পর মমতা বলে, "তাহলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। ওদের মিথ্যের প্ররোচনায় পা দেবেন না। সবাইকে বলব, প্রার্থনা করুন, যেন দেশ ভাল থাকে।"
খানিক থেমে যোগ করেছেন, "দেশ ভাল নেই। কারণ, একটা জুমলা সরকার। নির্বাচন চালু হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের নেতাদের বাড়িতে সিবিআই, এনআইএ, ইডি পাঠানো হচ্ছে। দেখলেন না মহুয়ার ওপর কী অত্যাচারটাই না করল। ওর অপরাধ, ও সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলতো। লোকসভা থেকে তাড়িয়েও ক্ষান্ত হয়নি। এখনও বাড়িতে ইডি, সিবিআই পাঠাচ্ছে।"
"কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে বিজেপি রাজপরিবারের সদস্য অমৃতা রায়কে প্রার্থী করেছে। বিজেপির এই রানিমার নাম না করে মোদীর উদ্দেশে মমতার কটাক্ষ, "আপনি রাজ মাতা বলে যাকে ডাকেন, তার পূর্বপুরুষরা লর্ড ক্লাইভের পক্ষে ছিল। আমরা মীরজাফরদের সমর্থন করি না।"
নাম না করে সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থীর প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন মমতা। মোদীর উদ্দেশে বলেন, "যাকে প্রার্থী করেছেন সে তো রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা গ্রহণ করেন!"
২৪ এর ভোটে ৪০০ পারের কথা বলছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, "অতই যদি ৪০০ পার করার ক্ষমতা থাকে, তাহলে ভয় পেয়ে ইডি, সিবিআই পাঠাচ্ছো কেন?" খানিক থেমে তাচ্ছিল্যের সুরে মমতা বলেন, "৪০০ পার! আগে ২০০ পার করে দেখা!"
গত পরশু সিএএর কারণে মণিপুরে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সিএএ মাথা। ল্য়াজা হল এনআরসি। সিএএ করলেই এনআরসিতে পড়ে যাবেন। বিজেপি নেতারা কেন সিএএ-তে আবেদন জানাচ্ছেন না? করলেই বিদেশি হয়ে যাবেন। তাই বলছি, বাংলায় সিএএ হতে দেব না। কোনও প্রশ্নেই বিজেপির সঙ্গে কম্প্রোমাইজ নয়।"