Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 14 November 2023 17:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আধুনিক জীবনযাত্রার পদ্ধতি, পরিবর্তিত খাদ্যভ্যাস, নিজের যত্ন নেওয়ার সময়ের অভাব শরীরে ডেকে আনে নানা অসুখ। বিশেষজ্ঞদের মতে, যত সময় গড়াচ্ছে তত বেশি করে প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছেন সকলে। শরীরে বাসা বাঁধছে নানা অসুখ। ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের মতো সমস্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তার হাত ধরেই জন্ম নিচ্ছে হার্টের নানা অসুখ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্টের রোগের আরও একটা বড় রিস্ক ফ্যাক্টর হল ডায়াবেটিস। এখন কমবয়সিদেরও ডায়াবেটিস হচ্ছে, এমনকি সদ্যোজাত শিশুও বাদ যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, ডায়াবেটিসের রোগীদেরই হার্টে ব্লক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যা বেশি। আরও একটা বড় সমস্যা দেখা দিচ্ছে যার নাম ডায়াবেটিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি।
সিনিয়র ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট অ্যান্ড ডিভাইস স্পেশ্যালিস্ট ডা. দিলীপ কুমার বলছেন, আমাদের দেশে কম করেও ১০ কোটি মানুষের ডায়াবেটিস আছে। তার মধ্যে ৬০ শতাংশই কার্ডিওভাস্কুলার রোগে ভোগে। ডায়াবেটিসের কারণে হার্টে ব্লক হতে পারে, সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, হার্ট ফেলিওরের সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যেতে পারে। ডাক্তারবাবু বলছেন, ডায়াবেটিসের রোগীদের মৃত্যু হাই ব্লাড সুগারের জন্য হয় না, বরং হয় হার্টের রোগের জন্য। তার মধ্যেই একটি হল ডায়াবেটিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি। হার্টের কাজ করার ক্ষমতা ২০-২৫ শতাংশ কমে যায়। হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে।
ডায়াবেটিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি থেকে সাবধান
ডাক্তারবাবু বলছেন, কার্ডিওমায়োপ্যাথি হল হৃদপেশির রোগ। হৃৎপিণ্ডের পেশির প্রদাহ। হদপেশি শক্ত হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি করে। ফলে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়। হার্ট ঠিকমতো রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না। তখন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হল এমন একটি পরিস্থিতি যখন হৃৎপিণ্ড হঠাৎ করে শরীরে রক্ত সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়। হৃৎপিণ্ড রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দিলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না, এর ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। দেখা গেছে, ডায়াবেটিসের রোগীদেরই এই কার্ডিওমায়োপ্যাথি বেশি হয়।
ডায়াবেটিসের রোগীদের অ্যাথেরোসক্লেরোসিস হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে। এই বিল্ডআপটিকে বলে প্লাক। এর ফলে ধমনী সংকীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে। এই ব্লকেজ থেকেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে।
ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন থাকলেও কার্ডিওমায়োপ্যাথির ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডা. দিলীপ কুমার বলছেন, রক্তে সুগার লেভেল কতটা বাড়ছে তা নিয়মিত টেস্ট করা দরকার। সবসময়েই ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে হবে। বছরে অন্তত একবার হার্টের চেকআপ করিয়ে নিতে হবে। ডায়াবেটিস বশে রাখার কার্যকরী উপায় হচ্ছে ওবেসিটি ও লিপিড লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। যদি খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তাহলেই হার্টের রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।
Advertisement
Advertisement