শেষ আপডেট: 19th June 2023 09:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন হলেই স্ট্রোক হয়। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তখন অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন (Brain Stroke) কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন যে শারীরিক অবস্থা তৈরি হয় তাকে স্ট্রোক (Brain Stroke) বলে। স্ট্রোক হলে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে যাওয়ারই পরামর্শ দেন ডাক্তারবাবুরা। স্ট্রোকের রোগীকে কীভাবে বাঁচানো যায়, কত তাড়াতাড়ি মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত (Blood Clot) তরল করা যায়, সে নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। ইঞ্জেকশনও তৈরি হয়েছে। এবার বাজারে আসতে চলেছে ন্যাজাল স্প্রে।
গোথেনবার্গ ইউনিভার্সিটি ও চেক অ্যাকাডেমি সায়েন্সের গবেষকরা ব্রেন স্ট্রোকের রোগীকে বাঁচাতে নাকের ড্রপ তৈরি করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) একে যুগান্তকারী আবিষ্কার বলছে। স্ট্রোকের চিকিৎসায় ওষুধ, অপারেশনই একমাত্র রাস্তা। এখন ইঞ্জেকশন আসতে চলেছে বাজারে। তবে এতদিন অবধি সবচেয়ে সহজলভ্য ও সুবিধাজনক কোনও পদ্ধতি জানা ছিল না যা চটজলদি স্ট্রোকের রোগীর প্রাণ বাঁচাতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাকের ড্রপ কার্যকরী হলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচবে। হাসপাতালে যেতে দেরি হলেও চিকিৎসাটুকু শুরু করা যাবে বাড়িতেই।
মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটলেই স্ট্রোক হয়। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তখন অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন যে শারীরিক অবস্থা তৈরি হয় তাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক হলে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে যাওয়ারই পরামর্শ দেন ডাক্তারবাবুরা। স্ট্রোক হওয়ার পরবর্তী চার ঘণ্টা সময়েই সবচেয়ে দামি। এই সময়টাকে বলে 'গোল্ডেন আওয়ার'। এই সময়তে সঠিক পদক্ষেপ করতে পারলে তবেই রোগীর প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। এইসময়টাতে কী ধরনের চিকিৎসা দ্রুত করা যায়, সে নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নানা গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
শুয়োরের পিত্তথলির কোষ দিয়ে তৈরি যন্ত্র ত্বকের অসুখ সারাবে! অভিনব আবিষ্কার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের
নিউরোইমিউনোলজির গবেষক ডা. মার্শেলা পেকনা বলছেন, ন্যাজাল স্প্রে-তে এমন উপাদান আছে যা দ্রুত ব্রেনে জমাট বাঁধা রক্ত তরল করতে পারে। বিজ্ঞানী বলছেন, তাঁদের তৈরি নাকের ড্রপে পেপটাইড সি৩ (peptide C3a) আছে যা ব্লাড ক্লট ঠেকাতে পারে। স্ট্রোকে আক্রান্ত ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে এই উপাদানের কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানরা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে এখন প্রতি ছ’জনের মধ্যে এক জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ২০০০ সালের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়েই স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়েছে। খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস, ন্যূনতম শরীরচর্চাও না করা এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপকেই এর জন্য দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এডস, যক্ষ্মা এবং ম্যালেরিয়া মিলিয়ে পৃথিবীতে যত মানুষ মারা যান, তার চেয়েও স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।
ইস্কিমিক স্ট্রোকে ব্রেনের যে শিরায় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সেখানে ব্লক খুলে দেওয়া হয়। সেটা ওষুধ দিয়েও হয়, আবার সার্জারি করেও হয়। ওষুধ দিয়ে যখন ব্লক ছাড়ানো হয় তাকে বলে থ্রম্বোলিসিস আর অস্ত্রোপচারে যেটা হয় তার নাম থ্রম্বেকটমি। এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ। রোগী যদি স্ট্রোক পরবর্তী চার ঘণ্টা সময় বা ‘গোল্ডেন আওয়ারে’ হাসপাতালে পৌঁছতে না পারে তাহলে রোগীকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়ে অনেক সময়েই। ন্যাজাল স্প্রে ভাল কাজ করলে ওই সময়টাতে রোগীকে অন্তত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।