শেষ আপডেট: 20th July 2023 13:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটা, দুটো করে জড়ো হয় ভাইরাস। তারপর একে একে জুড়ে যায়। বড় জমায়েত তৈরি করে। ভাইরাসদের আড্ডা জমে উঠলে সেখানে সহজে নাক গলাতে পারে না মানব শরীরের রক্ষী শ্বেত রক্তকণিকারা। কাজেই ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াদের জটলা বাড়তে থাকে। একটা সময় আড়েবহড়ে বেড়ে বিরাট মিছিল করে সারা শরীরে ছড়াতে শুরু করে। ভাইরাসদের মিছিল ভাঙতে তখন রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হয় ডাক্তারদের। ওষুধের পর ওষুধ দিয়েও কাজ হতে অনেক দেরি হয়। ভাইরাসদের এই জমায়েত বন্ধ করতেই নতুন আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা (origami DNA)।
গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এমন পদ্ধতি আবিষ্কার করছেন যাতে মানব জিন বা ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড)-কে (origami DNA) বিশেষ উপায়ে এদিক সেদিক ভাঁজ করে আকার বদলে এমন চেহারা দেওয়া যায় যা অনেকটা ফাঁদের মতো কাজ করবে। তারপর ভাইরাসদের জমায়েত দেখলেই সেই ফাঁদে ধরবে খপ করে।
ব্যাপারটা সহজে বুঝিয়ে বলা যাক। মানব ডিএনএ-র নির্দিষ্ট গঠন বিন্যাস, সাজসজ্জা আছে। বিজ্ঞানীরা সেখানেই টুইস্ট করছেন। তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু ডিএনএ (origami DNA) নিয়ে পরীক্ষা করে তার সাজসজ্জা বদলে ইচ্ছামতো আকার দিচ্ছেন। এতে ডিএনএ-র গঠনগত বৈশিষ্ট্যের বদল হচ্ছে না, শুধু বদলে যাচ্ছে তার আকার। এই পরিবর্তিত ডিএনএ-কে বলা হচ্ছে অরিগ্যামি ডিএনএ (Origami DNA)।
অরিগ্যামি কী, তা অনেকেরই জানা। মনে আছে, ছোটবেলায় কাগজ মুড়িয়ে নানা রকম আকার দিতেন। কখনও কাগজের প্লেন, আবার কখনও কাগজের নানাদিক ভাঁজ করে নানারকম জিনিস তৈরি করতেন। একেই বলে অরিগ্যামি। জাপানে এই অরিগ্যামি বিশেষ একরকমের আর্ট যা জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গেও জড়িত। সহজ করে বললে, অরিগ্যামি বিশেষ এক ধরনের পেপার কাটিং আর্ট। ডিএনএ-কেও যে ভাঁজ করে, মুড়ে অরিগ্যামির আকার দেওয়া যায় তা ভাবনাচিন্তারও বাইরে ছিল। সেই চমৎকারই করছেন গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।
গবেষক ডা. ফ্র্যাঙ্ক সেইনসবারি বলছেন, ডিএনএ-র (origami DNA) নানারকম অরিগ্যামি টেম্পলেট বানানো হয়েছে। সেগুলো দেখে ডিএনএ-কে ঠিক তেমনই আকার দেওয়া হবে। প্রতিটা গঠন এমনভাবে তৈরি যা ভাইরাসকে চারদিক থেকে চেপে ধরতে পারবে। বিজ্ঞানীর দাবি, ভাইরাসের যত বড় জটলাই হোক না কেন, বা ভাইরাস যত লক্ষ কোটি বার নিজের গঠন বিন্যাস বদলে ভিন্ন আকারই বা দিক না কেন, অরিগ্যামি ডিএনএ-জাঁতাকলে তারা ধরা পড়তে বাধ্য। আর একবার ভাইরাস কলে আটকা পড়লে তাকে ওষুধ দিয়ে হোক বা ভ্যাকসিনের ডোজ দিয়ে হোক, নিষ্ক্রিয় করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। ভাইরাসকে যদি তার আকার ও চরিত্র বদলে বাধা দেওয়া যায়, তাহলে আর করোনার মতো অতি মহামারীর মুখোমুখি হতে হবে না বিশ্বকে।
অ্যালঝাইমার্স সারাবে ডোনানেমাব! ভয়ঙ্কর মানসিক অসুখের ওষুধ আনছেন বিজ্ঞানীরা