
স্ট্রোকের বিপদ কমাতে চান? রোজ ফলের রস খান

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় সব সময়ে ফলের রস বের করে খাওয়ার সময় থাকে না। তাই দোকানে যে জুস কিনতে পাওয়া যায়, সেটাই কেনা সুবিধাজনক। কিন্তু ইদানীং আমাদের অনেকের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে, এই কেনা জুসে ফলের রসের সঙ্গে এত সুগার শরীরে ঢোকে, যেটা উল্টে শরীরের ক্ষতি করে। এই ধারণা থেকেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রিটেনে জুস বিক্রির পরিমান বিপুল ভাবে কমে গেছে। কিন্তু নতুন এই ডাচ সমীক্ষা জানাচ্ছে, শরীরে চিনি একটু ঢুকলেও ফলের টাটকা রসের স্ট্রোক আটকানোর ভূমিকাকে মোটেই উপেক্ষা করা যায় না।
নেদারল্যান্ডস-এর বিল্টভেনে ‘ ডাচ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক হেলথ এন্ড দি এনভায়রনমেন্ট’-এর বিজ্ঞানীরা গত পনেরো বছর ধরে ৩৫০০০ পুরুষ ও মহিলার উপরে এই সমীক্ষা চালিয়েছেন, যাঁদের বয়স ২০ থেকে ৭০ তাঁদের এই সমীক্ষা ও গবেষণার ফল বেরিয়েছে ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউট্রিশন’ পত্রিকায়। যেখানে বলা হচ্ছে, যাঁদের সপ্তাহে চার থেকে আট গ্লাস ফলের রস খাওয়ার অভ্যেস আছে, তাঁদের ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা এক চতুর্থাংশ কমে। আর যাঁরা এক দিন অন্তর এক দিন জুস খান, তাঁদের ক্ষেত্রে কমে ২০ শতাংশ। শুধু ব্রেন স্ট্রোক না, নিয়মিত ফলের রস পান করেন যাঁরা, তাঁদের হার্ট এর রোগের ঝুঁকি, ধমনীতে ব্লক হওয়ার সম্ভাবনাও অন্তত ১২/১৩ শতাংশ কমে যায়।
গোটা পৃথিবীতেই ব্রেন স্ট্রোক একটা আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেনে যেমন দিনে ২০০ লোক এই রোগে মারা যান। বাকিরা পঙ্গুত্বের শিকার হন। এঁদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ আক্রান্ত হন ইস্কিমিক স্ট্রোকে। যখন একটা ক্লট ব্রেনে গিয়ে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে দেয়। বাকিরা আক্রান্ত হন হেমারেজিক স্ট্রোকে, যখন মস্তিষ্কের মধ্যেই ফেটে যায় ব্লাড ভেসেল, আর শুরু হয়ে যায় প্রাণঘাতী রক্তক্ষরণ।
এই সমীক্ষায় জুস খাওয়ার পক্ষে বলা হলেও, বিজ্ঞানীরা কিন্তু তবু বলছেন, সবচেয়ে ভালো হয় যদি গোটা ফল খাওয়া যায়। কারণ গোটা ফল ছাড়িয়ে বা কামড়ে খেলে তার যে উপকার, তার সুনির্দিষ্টতা বার বার যাচাই হয়েছে আগের একাধিক পরীক্ষায়।