
সাজানো শহর বার্নপুর
রত্না ভট্টাচার্য্য
শক্তিপদ ভট্টাচার্য্য
যাঁরা বেড়াতে ভালবাসেন, যাঁরা দেখতে চান বাংলার মুখ, তাঁদের কথা মনে রেখেই এই ধারাবাহিক ‘পায়ে পায়ে বাংলা’। খুঁজে নিন আপনার পছন্দের জায়গা, গুছিয়ে ফেলুন ব্যাগ, হুস করে বেরিয়ে পড়ুন সপ্তাহের শেষে। আপনার সঙ্গে রয়েছে ‘পায়ে পায়ে বাংলা’।
অতীতে বার্নপুর ছিল জঙ্গলাকীর্ণ। পঞ্চকোট রাজার অধীনে হীরাপুর গ্রামের মধ্যে এই জঙ্গলের অবস্থান ছিল। ১৮৯১ সালে এই গ্রামের ওপর দিয়ে বেঙ্গল-নাগপুর রেলপথ শুরু হয়। ১৯১৮ সালে চারিদিকের সুবিধার কথা ভেবে এখানে লৌহকারখানা স্থাপিত হয়। এরপরে আরও অনেক কারখানা এখানে তাদের উৎপাদন শুরু করে। এত মানুষের থাকার জায়গা, পানীয়জল প্রভৃতির কারণে এখানে নতুন করে বসতি শুরু হয়। এই ব্যাপারে স্যার রাজেন মুখার্জি ও বার্ন অ্যান্ড কোম্পানির ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার পরে হীরাপুরের এই লৌহ কারখানা ইসকো (IISCO) নামে জাতীয়করণ হয়। বিভিন্ন প্রদেশের বহু ভাষাভাষী মানুষ এখানে বাস করেন। এই শহরেও অনেক কিছু ঘুরে দেখার আছে।
নেহরু পার্ক : বার্নপুরে রিভার সাইডে এই পার্ক অন্যতম দর্শনীয় স্থানের মধ্যে পড়ে। আসানসোল থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে দামোদর নদের ধারে নিরালায় ইসকোর উদ্যোগে এই রিভার সাইড পার্ক। আসানসোল থেকে সরাসরি বাস আসছে। ইসকোর জার্মান জেনারেল ম্যানেজার এফ ডব্লিউ এ ল্যামিয়ার এই পার্কের প্রতিষ্ঠাতা। সেই সময় পার্কের নাম ছিল রিভার সাইড পার্ক। লোকমুখে ল্যামিয়ার সাহেবের তৈরি এই পার্কের নাম হয় ল্যামিয়ার পার্ক। ১৯৮৯ সালে জওহরলাল নেহরুর জন্মশতবর্ষে এই পার্কের নাম হয় নেহরু পার্ক।
পার্কের প্রবেশপথের সামনেই টিকিট কাউন্টার। জনপ্রতি চার বছরের ঊর্ধ্বে প্রবেশমূল্য ২৫ টাকা, স্টিল ক্যামেরা ৫০ টাকা ও ভিডিও ক্যামেরা ৫০০ টাকা। পিকনিকের জন্য অনুমতিসাপেক্ষ টিকিট কাটা ও মূল্য ধার্য করা হয়। বর্তমানে এটি পরিচালনার দায়িত্বে আছে বার্নপুরের NIRU মেটাল ট্রেডিং কোম্পানি। পার্ক খোলা থাকার সময় সকাল ৬.৩০ থেকে বিকেল ৫.৩০ মিনিট। পার্কের মধ্যে কোনওরকম অশোভন আচরণ ও মদ্যপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
পার্কের ভেতরে প্রবেশ করার পরেই একটি লেখায় চোখ আটকে যায়-– ‘হে অতিথি, তোমার যত্নে ও স্পর্শে নির্বাক এ উদ্যান হয়ে উঠুক সুন্দর ও সবাক।’ সামনেই রয়েছে প্রতিষ্ঠাতা এফ ডব্লিউ এ ল্যামিয়ারের এক বিরাট বাঁধানো তৈলচিত্র। একটু ভেতরে রয়েছে জওহরলাল নেহরুর কাস্ট আয়রনের বিরাট মূর্তি যা শতবর্ষে স্থাপিত হয়েছিল। পার্কের পরিচ্ছন্নতা সহজেই মন কেড়ে নেয়। হাঁটতে হাঁটতে পাওয়া যাবে বিশাল ঘাসের লন, রোজ বেড বা গোলাপ বাগান, মাঝে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন, কৃত্রিম টিলা, সরোবর, নানা ধরনের বড় বড় গাছ। বাহারি মরসুমি ফুলে পার্কটি দারুণভাবে সাজানো। শীতে গোলাপের বাহার, নানা ফুল আর বোগেনভেলিয়ার রঙে রঙিন হয়ে ওঠে পার্কটি। পিকনিকের জায়গায় আমগাছের ছায়া ভাল লাগবে। শীতে দামোদর নদের ধূ-ধূ চিকচিকে বালি বা বর্ষায় তার ভরা রূপ অথবা দূরে বিহারীনাথ পাহাড়ের আউটলাইন, পড়ন্ত সূর্যের শোভা দেখার জন্য এখানে একটি নজর মিনার আছে।
বাচ্চাদের পার্কটিও বেশ সুন্দর। বেশ কিছু ফ্রি রাইড আছে। ডাইনোসর, ঘোড়া ও অন্য কিছু মূর্তি রয়েছে। এখানকার রেস্তোরাঁটি বেশ মানানসই ও মনোরম। দ্বিতল এই খাবার ঘরটিতে বসে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। এখান থেকে কাছেই রয়েছে বিরাট জলাশয়, তার মাঝে দ্বীপ, সেতু প্রভৃতি। নৌকাভ্রমণের জন্য ব্যবস্থা আছে। পড়েই আছে টিকিট কাউন্টার। পার্কে সন্ধ্যার সময় লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের অনুষ্ঠান হয়। দেখার ইচ্ছা থাকলে সময়টা জেনে নিতে হবে। সারা পার্ক জুড়ে ছড়িয়ে আছে রাজহাঁসেরা, কৃত্রিম গুহা, ঝরনা, বিমানের পরিত্যক্ত খোল প্রভৃতি। সব কিছুর মজা নিতে নিতে সারাদিন কোথা দিয়ে চলে যাবে বোঝা যাবে না।
বারি ময়দান : বার্নপুর শহর গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পূজাপার্বণ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ১৯৪৫ সালে বারি ময়দানে হয়েছিল বার্নপুর টাউন পূজা। প্রথম দিকে তা দুর্গা পূজা ও কালী পূজার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিছু মানুষের প্রচেষ্টায় আজ বারি ময়দানের এই মন্দির অঞ্চল দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এখানে উঁচু ভিত্তিবেদির ওপর দুর্গা, কালী, রাধাকৃষ্ণের মন্দির রয়েছে। নিত্যপূজা হয়। দৈনিক অন্নপ্রসাদের ব্যবস্থা আছে। প্রতিদিনের অন্নপ্রসাদ ৬০ টাকা, বিশেষ পূজার সময় তা বেড়ে ৭০ টাকা হয়। এছাড়াও এখানে বিবাহ, উপনয়ন ইত্যাদির ব্যবস্থা আছে।
বারি ময়দানের সামনেই রয়েছে লাল রঙের সুদৃশ্য পুরনো সেন্ট অ্যান্থনি চার্চ। দু’হাত প্রসারিত করা যিশুখ্রিস্টের মূর্তি রয়েছে সামনে। বড়দিনে এখানে উৎসব হয় ও চার্চটি দারুণ সুন্দরভাবে সেজে ওঠে।
জগন্নাথ মন্দির : বার্নপুরে গুরুদোয়ারা রোডে ওড়িয়া সম্প্রদায় পরিচালিত জগন্নাথ মন্দিরটি একটি অন্যতম দ্রষ্টব্য। স্বল্প সামর্থ্যে ও স্বল্প পরিসর এলাকায় মন্দিরের পরিচ্ছন্নতা চোখে পড়ার মতো। প্রবেশপথ দিয়ে এসে দু’টি হাতির মাথার ওপর দু’টি সিংহকে দেখা যাবে যারা দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। এরপর রয়েছে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার সুন্দর মূর্তি। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মরীতি মেনে নিষ্ঠাভরে পূজা হয়। ওড়িয়া পুরোহিতরা এই পূজাপাঠের দায়িত্বে আছেন। মন্দির এলাকার মধ্যে আছে মহালক্ষ্মী, শিব ও গণেশ মন্দির। এগুলি ছাড়াও হনুমানের এক বিশাল দণ্ডায়মান মূর্তি আছে। মন্দির তৈরি হয়েছে ওড়িশা রীতিতে। দেখে মনে হয় মন্দিরটি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ছোট সংস্করণ। বার্নপুর ভ্রমণকালে এটি অবশ্যই দর্শন করা উচিত।
এই গুরুদোয়ারা রোড ধরে কিছুটা পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলে পাঞ্জাবিদের গুরুদোয়ারায় যাওয়া যাবে। এখানে গেলেও মন ভাল হয়ে যাবে।
এছাড়াও বার্নপুরে ঘুরে দেখে নেওয়া যায় শহরের শিবস্থান মন্দির, নীলকণ্ঠেশ্বর শিব মন্দির, বিশ্বকর্মা মন্দির, রামসীতা মন্দির প্রভৃতি। বার্নপুরে ইসকোর কোয়ার্টার এলাকাগুলি ঘুরে দেখে নেওয়া যেতে পারে যদি ইউরোপীয় কলোনি দেখার ইচ্ছে থাকে। প্রশস্ত জায়গার সামনে বাগান-সহ ঢালু টালির চিমনিওয়ালা বাড়ির সৌন্দর্য মনকে আনন্দ দেবে। তাছাড়া ইসকো কারখানা, ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত বার্নপুর ক্লাব, ভারতীভবন, বড় গাছে ছাওয়া সুন্দর পথঘাট, নন্দিনী পার্ক, দামোদরের ধার সব মিলিয়ে এখনও সুন্দর। রিভার সাইড এলাকা থেকে দামোদর পারাপার করার খেয়া আছে। নদী পেরোলেই বাঁকুড়া জেলা। খেয়াঘাট থেকে আলপথ ধরে পায়ে হেঁটে একটু সময় নিয়ে ঘুরে আসা যায় বিহারীনাথ পাহাড় থেকে।
ছোট দিঘারী বিষ্ণু মন্দির : আসানসোল থেকে বাসরাস্তা ধরে বার্নপুর হয়ে সরাসরি এখানে পৌঁছনো যায়। গাছপালায় ছাওয়া গ্রামটি বড় মায়াময়। বিষ্ণুপুরের মন্দিরের আদলে ৯০০ বছরের প্রাচীন একটি মন্দির এখানে অবস্থিত। মন্দিরের মূল মূর্তি রঘুনাথ জীউয়ের। মন্দিরটি প্রস্তর নির্মিত। দেওয়ালের গায়ে সুন্দর কারুকাজ এখন অস্পষ্ট। সীতারাম চৌবে মহান্ত ও রাঘব চৌবে মহান্ত কর্তৃক মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত। মন্দিরের পাশে রয়েছে বারো বিঘে জমি নিয়ে এক জলাশয় যার নাম সীতা সায়র। সন্তানকামনা করে এই জলাশয়ে স্নান করলে সন্তানলাভ হয় বলে জনমনে বিশ্বাস আছে। প্রতিবছর বিশেষ তিথিতে রঘুনাথ জীউয়ের বাৎসরিক পূজা ও উৎসব হয়। বহু নরনারী অংশগ্রহণ করেন। বাংলা ১৩৭৫ সালে তারাশঙ্কর মুখোপাধ্যায় ও মিনতি মুখোপাধ্যায় এখানে একটি শিবমন্দির ও কালী মন্দির নির্মাণ করেন।
হীরাপুর
আসানসোল অঞ্চলের প্রাচীন বসতির খোঁজ মেলে হীরাপুর থেকে। পঞ্চকোট রাজার অধীনে ছিল এই গ্রাম। আসানসোল থেকে বাসে হীরাপুর মোড়। সেখান থেকে আধ কিলোমিটার গেলেই মানিকচাঁদ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ও পূজিত মদনগোপালের মন্দির। মানিকচাঁদ ছিলেন চৈতন্যপার্ষদ শ্রীনিবাস আচার্যের ষষ্ঠ পুরুষ। কাশীপুরের রাজারা মদনগোপালের জন্য বহু জমি দেবত্র করে দিয়েছিলেন। হীরাপুর ঠাকুরবাড়ির বিরাট তোরণদ্বার নির্মিত হয়েছিল ১৩৪২ সনে। তোরণদ্বারের সঙ্গেই বিশাল দ্বিতল ভবন। তোরণদ্বার দিয়ে প্রবেশ করেই চোখে পড়বে বেশ বড়সড় প্রাঙ্গণের মধ্যে আচার্য শ্রীনিবাস মঞ্চ ও বিরাট রাসমঞ্চ। রাস উপলক্ষে বড় উৎসব হয়। প্রাঙ্গণ পেরিয়ে ভেতরে গেলেই মন্দির চত্বর। মদনগোপালের নতুন মন্দির তৈরি হয়েছে ১৩৪০ সনের ফাল্গুন মাসে। শ্বেতপাথরে মোড়া উঁচু ভিত্তিবেদির ওপর মন্দিরে দেবতা বিরাজ করছেন। মূল মন্দিরে রাধা-মদনগোপাল, রাধা-গোপীনাথ, রাধাগোবিন্দ, রাধারমণ, রাধা-চন্দ্রশিলা ও গৌর-নিতাই। মন্দিরের কাছেই রয়েছে মানিকচাঁদ ঠাকুর সম্মিলনী নাটমণ্ডপ। মন্দির চত্বরের মধ্যে রয়েছে শিব মন্দির, শিব এখানে মানিকেশ্বর মহাদেব নামে পূজিত। তার পাশেই মানিকচাঁদ ঠাকুরের সমাধিমন্দির। তিনি আইল্যাপ্রভু নামে পরিচিত ছিলেন। মূল মন্দিরের সামনে গরুড় মূর্তি বেশ সুন্দর। মন্দিরের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত চক্র বহু দূর থেকে দেখা যায়।
এখানে সারাবছর উৎসব লেগেই থাকে। জন্মাষ্টমী, রাস উৎসব, দোল উৎসব ও ভাদ্র মাসে মানিকচাঁদ ঠাকুরের জন্মোৎসব। রাসযাত্রা ও দোলযাত্রায় বহু ভক্তের সমাগম হয়। দূরদূরান্ত থেকে তারা এখানে আসেন। পৌষ মাসে এই মন্দিরে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের কাকিলা গ্রাম থেকে রাধারমণ বিগ্রহ আসেন। এক মাস এখানে অতিবাহিত করে আবার মূল মন্দিরে ফিরে যান। এটি একটি আকর্ষণীয় উৎসব। প্রতিদিন ঠাকুরের নিত্যসেবা হয় ও প্রতি সন্ধ্যা হরিনাম সংকীর্তনে মুখরিত হয়ে ওঠে। বৈষ্ণবদের কাছে এটি একটি পরমতীর্থ।
ডিহিকা
আসানসোল থেকে সূর্যনগর বাসে ডিহিকা অথবা আসানসোল-আদ্রা রেলপথে দামোদর স্টেশনে নেমে ডিহিকায় যোগদা সৎসঙ্গ ধ্যান কেন্দ্রে যাওয়া যায়। এখানে প্রবেশ করে একলহমায় ভাল লেগে যাবে স্থানটি। চারিদিকে যেন আনন্দের ছোঁয়া। আধ্যাত্মিক জগতের ইতিহাসে এই স্থানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরম যোগী শ্রীশ্রীপরমহংস যোগানন্দ ৫ জানুয়ারি, ১৮৯৩ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং দীর্ঘ সময় ধ্যান ও ক্রিয়াযোগের সাধনা ও পরিভ্রমণের পর ১৯৫২ সালের ৭ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলসে দেহত্যাগ করেন। তাঁর লেখা একশোটিরও বেশি বইয়ের মধ্যে অন্যতম বই হল ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ যোগী।’ ১৯১৭ সালে তিনি ‘যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’ তৈরি করেছিলেন। ১৯১৭ সালে এই ডিহিকাতে শ্রীশ্রীপরমহংস যোগানন্দ তাঁর প্রথম ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় শুরু করেছিলেন একটি একতলা বাংলোয়। জমিসমেত এই এলাকাটি কাশিমবাজারের মহারাজা তাঁকে দিয়েছিলেন। সেই সময় এখানে একটি বড় পুকুর ও একটি বড় বটগাছ ছিল। ১৯৩৫ সালে পরমহংস যোগানন্দ ভারতবর্ষ পরিভ্রমণকালে এখানে এসেছিলেন। তখন তিনি গাছটি দেখেন ও তার তলায় ধ্যানে বসেন। তাঁর পরিভ্রমণের সঙ্গী ছিলেন এক বিদেশি শিষ্য রিচার্ড রাইট। রাইটের তোলা ছবিতে যোগানন্দের ধ্যানরত মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। ১৯১৭ সালে যখন ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় শুরু হয় তখন এখানে একটি ইটের তৈরি স্তম্ভ ছিল যেখানে তিনি বিদ্যালয় চলাকালীন ধ্যান করতেন। ১৯৩৫ সালে যখন এসেছিলেন তখনও এখানে ধ্যান করেছিলেন।
১৯৯৭ সালে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি এই জমি কেনে গুরুদেবের স্মৃতিবিজড়িত প্রথম স্কুলটিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। এখনও সিঁড়ি-সহ পুকুরটি দেখা যায়। বর্তমানে প্রবেশপথ দিয়ে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে স্মৃতিস্থল মন্দিরটিকে। এই মন্দির তৈরি হয়েছে সেই স্মৃতিস্তম্ভের ওপর। স্তম্ভটি অবলুপ্ত হলেও ঢিবিটি ছিল। তার ভিতের ওপরেই হয়েছে স্মৃতিস্থল। বাঁদিকে তৈরি হয়েছে ধ্যানকক্ষ। মাঝে রয়েছে সেই পুকুর যেটি পরে খনন করে নতুন রূপ পেয়েছে কিন্তু পুরনো সিঁড়িগুলো আজও আছে শতবর্ষের আগের চেহারা নিয়ে। পুকুরের পাড় ধরে হাঁটার সময় নানা ফুল ও ফলের গাছে সঞ্চিত রূপ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা চোখে পড়ার মতো। পুকুরপাড়ের শেষে রয়েছে অফিস ও সাধুনিবাস। পুরনো অশ্বত্থগাছ কালের গর্ভে কবেই হারিয়ে গেছে তবে নতুন গাছটিকে পুরনো গাছের শাখা বলে মনে করা হয়। সব মিলিয়ে ডিহিকার যোগদা সৎসঙ্গ ধ্যানকেন্দ্রটি অবশ্যই দেখা উচিত।
আসানসোলে রাত্রিবাস করে দেখে নেওয়া সুবিধার হবে। হোটেল আসানসোল ইন, বার্নপুর রোড, দূরভাষ : ০৩৪১ ২২৫২৫৫২।
কাছেপিঠে আরও নানা জায়গায় বেরিয়ে পড়তে ক্লিক করুন নীচের লাইনে।