শেষ আপডেট: 2nd November 2020 09:38
পুজোয় অনেক মিষ্টি খেয়ে ফেলেছেন? রক্তে চিনি বাড়লে কিন্তু মুশকিল! রইল সামাল দেওয়ার টিপস
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'মিষ্টিমুখ' ছাড়া কি কোনও শুভ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়? বিজয়া, ভাইফোঁটা, তার পরেই দীপাবলি। একের পর এক উৎসব। আর লক্ষ করে দেখুন কোনওটাই মিষ্টি ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। উৎসব বা বিয়ের মরশুমে জমিয়ে পেটপুজোয় পাতে মিষ্টি নেই-- এটা ভাবতেই পারেন না অনেকে। আবার যারা সারাবছর মিষ্টি খান না, তারাও কিন্তু একটু আধটু মিষ্টিমুখ করে ফেলেন এইসময়। অতএব রোগ থাকুক বা না থাকুক, মুখে মিষ্টির স্বাদ ছোঁয়ান প্রায় সকলেই। রসালো মিষ্টি বা সন্দেশ কোনটাই চিনি ছাড়া হয় না। যতই 'সুগার ফ্রি সন্দেশ' নাম দিক, তবুও তাতে কিছুটা সুগার তো থাকেই। আবার করোনা আবহে 'ইমিউনিটি ব্যুস্ট মিষ্টি'ও বাজারে এসেছে। মিষ্টি বিক্রেতারা রোগীদের কথাও যে ভাবছেন সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু চিকিসকরা বলছেন, এগুলোর ওপর ভরসা করে যথেচ্ছ মিষ্টি খেয়ে ফেলা কিন্তু কোনও কাজের কথা নয়।
১.নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলুন
উৎসবের আমেজে এমনিতেই কেউ রুটিন মানতে চান না। রুটিন ভাঙাই যেন প্রথা। কিন্তু এই ধরনের ছেলেখেলা ডায়াবেটিক রোগীদের না করাই ভাল। মনে রাখতে হবে সুস্থ থাকলে তবেই বেশিদিন আনন্দ করতে পারবেন। সাধারণত ডায়েটেসিয়ানরা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট ডায়েটের রুটিন তৈরি করে দেন। সেটা ভাঙবেন না। নিয়ম মেনে চললে সুবিধা আপনারই। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কড়া রুটিনে বেঁধে ফেলুন নিজেকে।
২. কোনও বেলায় খাবার স্কিপ করবেন না
উৎসবে সামিল হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কে সময় কাটায়! সময়, দিনক্ষণ একেবারে ভুলে গিয়েই আনন্দে মাতেন। ফলে খাবার খাওয়ার সময়েরও কোনও ঠিক থাকে না। ডায়াবেটিক পেশেন্টরা কিন্তু এই ভুলটা মোটেই করবেন না। কোনও একবেলায় না খেয়ে থাকাটা শরীরের ব্লাড গ্লুকোজ লেভেলের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই কোনও বেলাতেই খাবার স্কিপ করবেন না। এমনকি উৎসবের পরেও কম খাওয়ার জন্য এটা করবেন না কেউ।
৩. পরামর্শ অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাবেন
কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তবে ডায়াবেটিক পেশেন্টরা ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই খাবারের রুটিনে সেগুলো রাখবেন। নিজের ইচ্ছেমতো কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে শুরু করবেন না। এতে ব্লাড সুগার লেভেলের উপর প্রভাব পড়তে পারে। এমন খাবার যাতে গ্লাইসেমিক লেভেল কম সেগুলো ভীষণ উপকারী। যেমন ওটস, গাজর, বিনস, এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফলে রোগীদের জন্য উপকারী। ময়দা, আলু, চিনি একেবারে বন্ধ করুন। ভাত-রুটির পরিমাণও কমান।
৪. সবসময় হাইড্রেটেড থাকুন
দিনে অন্তত ৮ গ্লাস জল খাবেন। শরীর হাইড্রেটেড রাখাটা ভীষণ জরুরি। জল বেশি খেলে ক্যালোরি, কোলেস্টেরলযুক্ত, মিষ্টিজাতীয় খাবারের ইচ্ছেটাও অনেক সময় অনেকের চলে যায়। কোল্ডড্রিংকস, সফটড্রিংকস এগুলো একেবারেই ছোঁবেন না। বদলে শুধু জল খেয়েই তেষ্টা মেটান।
৫. খাবারের পরিমাণের প্রতি নজর দিন
কী খাচ্ছেন সেটা যেমন জরুরি, কতটা খাচ্ছেন সেটা তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েট রুটিন মেনটেন করুন। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীর স্বাস্থ্যের উপর সেটার মারাত্মক প্রভাব পড়ে। তাই নজর দিন খাবারের পরিমাণের প্রতিও। পেট ভর্তি করে গলা অবধি খেয়ে হাঁসফাঁস নৈব নৈব চ। সে যত প্রিয় খাবারই হোক, খেতে হলে পরিমিত খান।
৬. মিষ্টি খেতে চাইলে অন্যান্য খাবার কম খান
কথায় বলে, কোনও নির্দিষ্ট কিছুতে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তার প্রতি সকলের আগ্রহ একটু বেশি বাড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই ডায়াবেটিক রোগীদের মিষ্টি খাওয়ার দিকে ঝোঁক বাড়ে কিছুটা। আর উৎবের সময় মিষ্টি থেকে দূরে থাকাও খুব কঠিন। যদি খুব ইচ্ছে করে, তাহলে সেইসব দিন কম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাবেন। তবে এক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হবে পরিমাণের দিকে। অতিরিক্ত খেলে, নিয়ম মানলেও, সামাল দেওয়াটা পরে কঠিন হবে।
৮. হাঁটাচলা করুন
সময়টা যাই হোক, হাঁটাচলা বা বাড়িতেই একটু এক্সারসাইজ করুন। ইনসুলিন নিলে, সেক্ষেত্রে একটু এক্সারসাইজ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। একটু হাঁটাচলা করে ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখতে পারলে, হার্টের অসুখ বা নার্ভের সমস্যা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
