
হেঁচকি নিয়ে অস্বস্তিতে? ঘরোয়া উপায়ে রেহাই মিলবে কীভাবে, জেনে নিন
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হেঁচকি কেন ওঠে? এই নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। হঠাৎ হেঁচকি উঠতে শুরু করলে থামে না সহজে। বড় অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। ক্রমাগত হেঁচকি উঠতে থাকলে কী করবেন? জানুন বিস্তারিত।
হেঁচকি কী?
মধ্যচ্ছেদা বা ডায়াফ্রামের অনৈচ্ছিক সঙ্কোচনের ফলে তৈরি হওয়া ঝাঁকুনিই হল হেঁচকি। হেঁচকি উঠলে ‘হিক’ শব্দের উৎপত্তি হয়। তাই হেঁচকিকে অনেকে ‘হিক্কা’ও বলে। চিকিৎসা পরিভাষায় হেঁচকি পরিচিত সিনক্রোনাস ডায়াফ্রাগমাটিক ফ্লাটার (এসডিএফ) বা সিংগুল্টাস নামে।
কেন হয়?
আমাদের শরীরে ডায়াফ্রাম মাস্লের ওপর রয়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ— হৃদপিন্ড এবং ফুসফুস। এর নীচেই পাকস্থলী। তাই হার্ট, ফুসফুস, লিভার, ইসোফেগাস, পাকস্থলী বা স্টমাক— এই অঙ্গগুলির যে কোনও একটিতে সমস্যা দেখা দিলে হেঁচকি উঠতে পারে। অনেক সময় মস্তিষ্কের সমস্যা, যেমন সেরিব্রাল স্ট্রোকে হেঁচকি ওঠে। আবার হার্ট অ্যাটাক হলে হেঁচকি ওঠতে পারে। বুকে সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া বা কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পর রোগীর পিত্তি হলে, যা থেকে লিভার এবং ডায়াফ্রামের তলায় জল বা পুঁজ জমলে হেঁচকি উঠতে থাকে। কোনও অসুখের কারণে স্টমাক ফুলে যাওয়া এবং ইসোফেগাসের তলায় কোনও বাঁধা তৈরি হলেও হেঁচকি ওঠে। এ ছাড়াও আবার কোনও মানসিক অসুখ বা গলায় কাটা ফুটলে হেঁচকি ওঠতে পারে।
হেঁচকি কি জীবন সংশয়ের কারণ হতে পারে?
হেঁচকি হয় মূলত ডায়াফ্রামের সমস্যা থেকে। যখন হেঁচকি ওঠে ডায়াফ্রামে থাকা ক্রেনিয়াল নার্ভ স্টিমুলেট বা উত্তেজিত হয়ে যায়। এই ক্রেনিয়াল নার্ভের সংযোগ রয়েছে মস্তিষ্কের সঙ্গে। তাই যদি এক ঘণ্টার বেশি হেঁচকি চলতে থাকে তা হলে তা জীবন সংশয়ের কারণ হতে পারে।
হেঁচকি উঠলে কী করণীয়
১) হেঁচকি উঠলে সবার প্রথমে জল খান। যদি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে না কমে তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২) হেঁচকি উঠলে অনেকে নাক চিপে শ্বাস–প্রশ্বাস বন্ধ রাখেন, এটা একেবারেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। শ্বাস–প্রশ্বাস বন্ধ রাখা হেঁচকি বন্ধের কোনও সমাধান নয়।
৩) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এতে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। জল খেয়ে যখন হেঁচকি বন্ধ হয় না, তখন কেন হেঁচকি উঠছে সেই কারণটা অনুসন্ধান করে তার চিকিৎসা করলে হেঁচকি ওঠাও বন্ধ হয়ে যায়।
৪) খাওয়া শুরুর দিকে অনেকেরই হেঁচকি ওঠে। কারণ মুখ বা খাদ্যনালির ভেতর যদি আর্দ্রতা কম থাকে তা হলে সেখানে অস্বস্তির পাশাপাশি পিচ্ছিলতার অভাব দেখা দেয়। ফলে খাবার আটকে যায় এবং বাতাসও ঠিক মতো চলাচল করতে না পেরে একটা জায়গায় আটকে যায়। তখন এক গ্লাস জল খেলে খাবারের মন্ডটা নিচে নেমে যায়, হাওয়া পেটে চলে যায় বা ঢেকুরের মাধ্যমে বাইরেও বেরিয়ে যায় এবং হেঁচকি থেকেও পরিত্রাণ মেলে।