Latest News

কনজাংটিভাইটিসে ভয়? এই বর্ষায় সাবধান থাকতে কী কী নিয়ম মানবেন

দ্য ওয়াল ব্যুরো: চোখের খুব সাধারণ একটি অসুখ কনজাংটিভাইটিস। লোকমুখে যার পরিচিতি ‘‌জয় বাংলা’‌ নামে। কেন হয়? হলে কী করণীয়? কতটা ছোঁয়াচে?‌ ভাল করে জেনে নিন। তবে কনজাংটিভাইটিস হলে অযথা ভয়ের কিছু নেই। সময়মত চিকিৎসা হলে এর হাত থেকে চোখকে দ্রুত সুস্থ করে তোলা খুব একটা সমস্যার নয়।

কনজাংটিভাইটিস কী?

কনজাংটিভাইটিস হল কনজাংটিভার ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ। কনজাংটিভা হল চোখের স্বচ্ছ লেয়ার বা স্তর, অর্থাৎ চোখের সাদা অংশের ওপরের আস্তরণ। কর্নিয়ার মার্জিন থেকে স্‌ক্লেরা এবং আই লিডের পেছনের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত এই কনজাংটিভা।

Conjunctivitis (Pink Eye): Overview, Causes, and Symptoms

কী কী সমস্যা দেখা দেয়?

১.‌ চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়।
২.‌ চোখ কটকট করে।
৩.‌ জ্বালা করে।
৪.‌ চোখ দিয়ে জল পড়তে পারে।
৫.‌ চোখে সব সময় একটা অস্বস্তি ভাব থাকে।
৬.‌ ডিসচার্জ বেশি হলে দৃষ্টিও কিছুটা কমতে পারে।
‌৭.‌ কিছু কিছু কনজাংটিভাইটিস, যেমন ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিসে চোখে এতটাই ডিসচার্জ থাকে যে, ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা জুড়ে যেতে পারে। চোখে সামান্য ব্যথাও হতে পারে।
৮.‌ আলোর দিকে তাকালে সমস্যা হতে পারে।
৯.‌ জল পড়া এবং চোখ কটকট করাটাই কনজাংটিভাইটিসে প্রধান সমস্যা।

Conjunctivitis: What Is Pink Eye? - American Academy of Ophthalmology

তিন রকমের কনজাংটিভাইটিস হতে পারে

অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস: কোনও জিনিস থেকে অ্যালার্জির কারণে অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। যেমন ধুলো–বালি, নির্দিষ্ট কিছু ফুলের রেণু, কসমেটিক, কোনও খাবার বা ওষুধ ইত্যাদি।

Conjunctivitis (Pink Eye) - Willis-Knighton Health System

ইনফেকটিভ কনজাংটিভাইটিস: এই ধরনের কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস।

কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিস: বাইরে থেকে কোনও কেমিক্যাল জাতীয় কিছু চোখে পড়লে এই ধরনের কনজাংটিভাইটিস হয়। স্যুইমিং পুলের জলে যদি ক্লোরিন বেশি থাকে বা রঙ খেলার সময় রঙ চোখে ঢুকলে, তা থেকে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভয় নেই কীভাবে সাবধান থাকবেন জানুন

১. কনজাংটিভাইটিস বা চোখের যে কোনও সমস্যায় কখনওই বারবার চোখে হাত দেবেন না।
২.‌ প্রয়োজন হলে কোনও টিস্যু দিয়ে চোখ মুছলে, সেটা ফেলে দিন। ওটা দ্বিতীয়বার ব্যবহার করবেন না। পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩.‌ অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসে প্রকাশ্য স্থানে যাওয়ায় কোনও বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু ব্যাকটিরিয়াল বা ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস হলে না যাওয়াই ভাল। তখন ক’টা দিন বাড়িতেই থাকুন।
৪.‌ কনজাংটিভাইটিস হলে স্যুইমিং পুলে না যাওয়াই ভাল।
৫.‌ যাঁরা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, কনজাংটিভাইটিসে তা পরা উচিত নয়। সেরে গেলে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের আগে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৬.‌ কনজাংটিভাইটিস হলে দ্রুত চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দরকার।

conjunctivitis treatment: FDA declines Eton Pharmaceuticals' EM-100

চিকিৎসায় দ্রুত সারে

চিকিৎসার উদ্দেশ্য তিনটি— ক) প্রতিরোধ, খ) সংক্রমণ বা রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো এবং গ) চোখের অস্বস্তিকে দূর করা।
প্রথমেই‌ চোখকে পরিষ্কার রাখতে হবে।‌ ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিসে ঈষদুষ্ণ গরম জলে তুলো ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করলে আরাম হয়।

ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিস হলে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপের প্রয়োজন। চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো তা দিতে হবে।

ভাইরাল কনজাংটিভাইটিসে আর্টিফিসিয়াল টিয়ার ড্রপ দেওয়া হয়।

অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসে অ্যান্টি–অ্যালার্জিক ড্রপ এবং আর্টিফিসিয়াল টিয়ার ড্রপের প্রয়োজন পড়ে।

কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিসে নর্মাল স্যালাইন বা স্টেরাইল ফ্লুইড দিয়ে চোখ ধুয়ে তারপর আর্টিফিসিয়াল টিয়ার ড্রপ বা কেন হয়েছে সেই কারণ অনুসন্ধান করে চিকিৎসা করা হয়।

কনজাংটিভাইটিসে আলোর দিকে তাকালে সমস্যা হয়, তাই কালো চশমা পরতে বলা হয়।

You might also like