মাছ ছাড়া মাছের ঝোল
শেষ আপডেট: 24 May 2024 16:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গরমে আমিষের থেকেও নিরামিষ খাবার খেতে যেন বেশি ভাল লাগে। বাঙালি বাড়িতে রান্না নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রায়ই হতে থাকে। এই বিষয়ে ঠাকুরবাড়িও ব্যতিক্রমী নয়। রবীন্দ্রনাথ নিরামিষ খাবার খেতে যেন একটু বেশিই ভালবাসতেন। ঠাকুরবাড়ির দালানে রাঁধুনিরা গোল হয়ে বসে আনাজ কাটতেন আর অন্যদিকে রান্নার ঠাকুর কড়া চাপাতেন উনুনে। অনেকের রান্না যেহেতু একসঙ্গে হত তাই আনাজ কাটা, বাটনা বাটা সামলে রান্না শুরু করতে অনেক সময় লাগত।
আজকে আপনাদের জন্য এমন এক রেসিপি নিয়ে এসেছি যা খেতে তো খুব ভালই আবার একদম অন্যরকমও। দেখতে মাছের ঝোলের মতো হলেও মাছ কিন্তু এতে নেই। আজকে রইল ঠাকুরবাড়ি স্পেশাল মাছ ছাড়া মাছের ঝোলের রেসিপি।
উপকরণ
সেদ্ধ আলু (১টা)
আলুর টুকরো (৫-৬ টুকরো)
কাঁচকলা সেদ্ধ (২ টো)
আদা বাটা (৩ টেবিল চামচ)
রসুন বাটা (৩ টেবিল চামচ)
নুন (পরিমাণ মতো)
চিনি (পরিমাণ মতো)
ধনে গুঁড়ো (১ টেবিল চামচ)
জিরে গুঁড়ো (১ টেবিল চামচ)
হলুদ গুঁড়ো (১ টেবিল চামচ)
গোলমরিচ গুঁড়ো (১ টেবিল চামচ)
লঙ্কার গুঁড়ো (২ টেবিল চামচ)
লেবুর রস (সামান্য)
তেল (পরিমাণমতো)
সুজি (৫-৬ টেবিল চামচ)
চালের গুঁড়ো (৩ টেবিল চামচ)
টমেটো বাটা (১টা)
শুকনো লংকা (২-৩টে)
গোটা জিরে (আধ চা-চামচ)
পদ্ধতি
প্রথমেই একটা মিক্সারে সেদ্ধ আলু, অল্প একটু আদা বাটা, রসুন বাটা আর কাঁচালংকা দিয়ে ভালকরে পেস্ট বানিয়ে নিন। জল দেবেন না যাতে একটু আঠালো মাখা মাখা হয় মিশ্রণটা সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবার পেস্টটা একটা আলাদা পাত্রে তুলে রেখে দিন।
এবার সেই মিশ্রণের মধ্যে একে একে কাঁচকলা সেদ্ধ, পরিমাণমতো নুন, সামান্য চিনি, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো আর গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন। হাত দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। উপর দিয়ে একটু লেবুর ছড়িয়ে দিন এতে স্বাদটা আরও ভাল হবে।
এবার মিশ্রণের উপর একটু হালকা ময়দা ছড়িয়ে শুকনো হাতে কিছুটা করে মিশ্রণ নিয়ে বরফির আকারে গড়ে নিন। এবার সেটার মাঝখানে আঙুল দিয়ে একটা ফুটো করে নিন দেখবেন দেখতে অনেকটা মাছের পিসের মতো লাগছে। এভাবে এক এক করে পুরো মিশ্রণ থেকে যে কটা পিস বেরোবে সেকটা গড়ে নিতে হবে।
অন্য একটা প্লেটে সুজি, চালের গুঁড়ো, সামান্য নুন আর সামান্য লঙ্কার গুঁড়ো নিয়ে মিশিয়ে নিন। এবার বরফিগুলোকে উপর একটু হাত দিয়ে তেল মাখিয়ে নিন তাতে উপরে সুজির কোটিংটা ভালভাবে বসবে। এবার এক এক করে বরফি গুলো সুজিতে কোট করে আলাদা পাত্রে সাজিয়ে রেখে দিন। এবার প্যানে সর্ষের তেল গরম করে তাতে আলতো হাতে বরফিগুলো দিয়ে দুপিঠ উল্টেপাল্টে ভেজে নিন। দুপিঠ লাল লাল করে ভাজা হয়ে গেলে সেগুলো একটা থালায় তুলে রাখুন।
এবার ওই কড়াইতেই আরও কিছুটা সর্ষের তেল গরম করে তাতে ফোড়ন দিন শুকনো লংকা আর গোটা জিরে। এবার দিয়ে দিন টমেটো বাটা, তারপর টুকরো করে রাখা আলু দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। একটু কষে এলে দিয়ে দিন বাকি আদা বাটা, রসুন বাটা, স্বাদমতো নুন, হলুদ, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো। আঁচ কমিয়ে পরিমাণ মতো জল দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে কষান। ঢাকনা খুলে দেখবেন ঝোল অনেকটা টেনে গেছে আবার আলুও সেদ্ধ হয়ে গেছে। ঝোল ঘন হয়ে এলে ভেজে রাখা মাছের শেপে তৈরি বরফিগুলোকে ঝোলে দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
এবার উপর থেকে এক চা-চামচ ঘি আর গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মাছ ছাড়া মাছের ঝোল।