শেষ আপডেট: 21st June 2023 08:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমশ খোঁজ বাড়ছে অফবিট পর্যটনকেন্দ্রের (Offbeat destination)। মানুষের ভিড় আর গতানুগতিকতার বাইরে একটু নিরিবিলিতেই ছুটি কাটাতে পছন্দ করছেন বেশিরভাগ মানুষ। সেই কারণেই হিল স্টেশন হোক, কিংবা সমুদ্র সৈকত, সুপ্রসিদ্ধ ট্যুরিস্ট স্পটের কাছাকাছি অফবিট জায়গার চাহিদা বাড়ছে ক্রমশ। আজ আপনাদের হিমাচল প্রদেশের এমন একটি অফবিট জায়গার কথা বলব, যেটি সিমলা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে। হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট শৈলশহর নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ।
পাহাড়ের কোলে এই ছোট্ট শহরটির নাম হল শোঘি (Soghi)। এই অঞ্চলে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। সমুদ্রপৃষ্ঠই থেকে শোঘির উচ্চতা হল ৪৬৬৭ ফুট। এটি আসলে কান্দাঘাট হাইওয়ের উপর কালকা এবং সিমলার মধ্যবর্তী একটি শহর। পুরোপুরি পাহাড়ে ঘেরা এই শহরের মধ্যে দিয়ে গেছে রেললাইন। পাথুরে বাঁকের মধ্যে দিয়ে সর্পিল ভঙ্গিতে চলাচল করে ভারতীয় রেল।
এই শহরের একটি ইতিহাস রয়েছে। উনিশ শতকে অ্যাংলোদের সঙ্গে যুদ্ধ বেঁধেছিল গুর্খাদের। মালাউনের যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল গুর্খাবাহিনী। ব্রিটিশরা গুর্খাদের সঞ্জৌলি চুক্তিতে সই করতে বাধ্য করে। তাদের শাসনে থাকা এলাকাগুলি ফিরিয়ে দেওয়া হয় সেখানকার মূল শাসকদের হাতে। এরপর পাতিয়ালার মহারাজকে সিমলা এবং শোঘি শহর উপহার হিসেবে দিয়েছিল ব্রিটিশরা।
শোঘি মূলত একটি মন্দির-শহর। এখানে তারা পর্বতের চূড়ায় রয়েছে তারা দেবী মন্দির। মন্দিরটি ২৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। এখানেই রয়েছে আরও একটি সুপ্রাচীন হনুমান মন্দির। মন্দিরগাত্রে খোদাই করা রয়েছে নানা পৌরাণিক গল্প, রয়েছে অসাধারণ কিছু পেইন্টিং। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই মন্দিরে কিছু চেয়ে প্রার্থনা করলে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়।
শোঘি থেকে সিমলার দিকে কিছুদূর গেলেই পড়বে জাখু পাহাড়। এর চূড়ায় রয়েছে জাখু মন্দির, যা আসলে ভগবান হনুমানের উপাসনাস্থল। ট্রেক করে উঠতে হয়ে যে মন্দিরে। জাখু পাহাড়ের চূড়া থেকে গোটা শহরের রূপ বার্ড আই ভিউ থেকে দেখা যায়। শোঘিতে রয়েছে আরও একটি মন্দির। ১৫০ বছরের পুরনো কালীবাড়ির প্রতিমা খুবই জাগ্রত বলে শোনা যায়।
শোঘি বিভিন্ন রকম ফল চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানে ফলের রস, আচার, জেলি, সিরাপের মতো বিভিন্ন জিনিস বেশ কম দামে পাওয়া যায়। মূল শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পার্ক উডস। সেখানে রডোডেনড্রন, পাইন, ওক গাছ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন গুল্মজাতীয় গাছ। রয়েছে হরিণ, খরগোশ এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
কখন যাবেন
মনোরম আবহাওয়ার কারণে সারা বছরই যাওয়া যায় এই শৈলশহরে। তবে মার্চ থেকে জুন মাস হল এখানে যাওয়ার সেরা সময়। অক্টোবরে আবার শোঘিতে মা তারা দেবী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তাই সেই সময়েও যাওয়া যেতে পারে। তবে শীতকালে এখানে তাপমাত্রা শূন্যেরও নীচে নেমে যায়। তাই শীতে এখানে না যাওয়াই ভাল।
কীভাবে যাবেন
রেলপথে যেতে হলে শোঘির নিকটতম ষ্টেশন হল কালকা। শোঘি থেকে কালকার দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। কালকা থেকে এখানে পৌঁছানোর জন্য বাস এবং ট্যাক্সি রয়েছে। বিমানে ভ্রমণ করলে নামতে হবে সিমলার জুব্বারহাটি বিমানবন্দরে। সেখান থেকে শোঘির দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন
শোঘিতে বেশ কিছু হোটেল-রিসর্ট রয়েছে। আগে থেকে বুক করে যেতে হবে।
রাতদিন টুংটাং! ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া… বাংলার এই গিটার গ্রামে গেছেন কখনও?