শেষ আপডেট: 23rd June 2023 12:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: যেদিকে চোখ যায়, শুধুই ইট-সিমেন্ট-পাথরের ইমারত। জানলা খুললেই পাশের বহুতলের মুখোমুখি। ধোঁয়ায় ডেকেছে আকাশ, তার নীল রং চোখেই পড়ে না প্রায়। গাছগাছালিরও দেখা নেই তেমন। পাখি ডাকে না।আজকের মেট্রো শহরে বসবাসকারী মানুষজনের কাছে এই দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু দিনের পর দিন এই পরিবেশে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে ওঠে প্রাণ। মনে হয়, কয়েকটা দিন এমন কোথাও কাটিয়ে আসি, যেখানে রয়েছে গ্রাম্য প্রকৃতির ছোঁয়া। আধুনিক সুযোগ সুবিধা হয়তো নেই তেমন, কিন্তু গাছ-মাটি-পাহাড়-ঝর্না-নীল আকাশের স্পর্শ আছে, পাখি-প্রজাপতি-জীবজন্তুর ভালবাসা রয়েছে ভরপুর। শহুরে জীবনের এই দমবন্ধ করে পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে তাই ক্রমশ চাহিদা বাড়ছে রুরাল ট্যুরিজমের (rural tourism)। অর্থাৎ প্রত্যন্ত গ্রাম্য জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ছুটি কাটিয়ে আসা (travel)। আজ আপনাদের ভারতের তেমনই কয়েকটি গ্রামের সন্ধান দেব।
পিপলি: এটি ওড়িশার ছোট একটি জনপদ। এই গ্রামটির প্রায় প্রতিটি পরিবারই কোনও না কোনওভাবে শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রথের উপর যে ছাউনি ব্যবহার করা হয়, তার নকশায় থাকে এই গ্রামের মানুষের হাতের ছোঁয়া। এখানকার কারিগরদের তৈরি অ্যাপ্লিকের কাজের বাজার রয়েছে ভারত তো বটেই, বিশ্বজুড়ে। স্থানীয়দের হাতে বানানো বিভিন্ন হ্যান্ডক্রাফ্ট ঘর সাজানোর আদর্শ উপকরণ।
স্পিতি: হিমাচল প্রদেশের এই স্পিতি ভ্যালি হল পাহাড়ের কোলে অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একটি গ্রাম। মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাস এই ছোট্ট গ্রামে। বরফে ঢাকা পাহাড়ের কোলে স্থানীয়দের বাড়ি, পিছনেই সুউচ্চ পর্বতমালা। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নীল জলের নদী। সবুজ গাছের মাথার উপর আঁকিবুঁকি কেটে যায় রোদ্দুর। পাহাড়ের ধাপে রোদের আলপনা বহুক্ষণ দেখেও যেন আশ মেটে না। এই গ্রামে থাকার জন্য বেশ কিছু হোমস্টে এবং হোটেল রয়েছে।
মওলিনলং: মেঘালয়ের এই গ্রামটি এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রামের তকমা পেয়েছে আগেই। মওলিনলং গ্রামে একবার গেলেই বুঝবেন, এই খেতাব পাওয়ার কারণ কী। গুটিকয়েক মানুষের বাস এই গ্রামে। প্রত্যেকটি বাড়ি, তার উঠোন, রাস্তা সবকিছুই ঝকঝকে। বৃষ্টিভেজা গ্রামের পথ ধরে দীর্ঘক্ষণ হেঁটে গেলেও প্লাস্টিকের দেখা পাবেন না কোথাও। এই গ্রামেই রয়েছে গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক জীবন্ত রুট ব্রিজ। শিকড়-সেতুর তলা দিয়েই বয়ে গেছে নদী। এই গ্রামটি উত্তর-পূর্ব ভারতের পর্যটন মানচিত্রে একটি উল্লেখযোগ্য নাম।
কচ্ছ: গুজরাতের এই গ্রামের কথা সকলেই শুনেছেন। কচ্ছের রান দেখার জন্য এই গ্রামে ভিড় জমান দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। বিখ্যাত লবণ মরুভূমি চাক্ষুষ করার সুযোগ মিলবে পশ্চিম ভারতের এই গ্রামে। এখানে বিভিন্ন ভিলেজ রিসর্টে মাটির ঘরে পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে তাঁবুতেও থাকতে পারেন।
চিত্রকূট: এটি ছত্তীসগড়ের বাস্তার জেলার একটি রুক্ষ পাথুরে জনপদ। মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামটিতে রয়েছে বিখ্যাত চিত্রকূট জলপ্রপাত যা ভারতের নায়াগ্রা ফলস হিসেবে পরিচিত। জলপ্রপাতের গায়ে পড়ন্ত সূর্যের আলো এসে পড়ে যে রামধনু তৈরি হয়, সে দৃশ্য একবার দেখলে আর ভুলবেন না। এই গ্রামটি বিভিন্ন হস্তশিল্প এবং লোকশিল্পের পীঠস্থান। গ্রামের অদূরেই রয়েছে দন্তেশরী মন্দির। জগদলপুর প্রাসাদ থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।
একা বেড়াতে ভালবাসেন? সোলো ট্রাভেল স্পট হিসেবে বিশ্বের সেরা এশিয়ার এই শহর, ঘুরে আসুন