শেষ আপডেট: 3rd August 2023 15:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাসে, ট্রেনে কিংবা প্লেনে চড়ে বেড়াতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কম-বেশি সকলেরই রয়েছে। প্লেনে যেমন সময় বাঁচে, তেমন সড়কপথ কিংবা রেলপথে লম্বা দূরত্ব পেরোনোর সময় প্রকৃতিকে যেন নতুন করে চেনার সুযোগ হয় (road trips)। চলন্ত গাড়ির ভিতর থেকে অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে সময় কেটে যায় তা বোঝাই যায় না। প্রকৃতিকে সাক্ষী করে ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাই অনেকেই রোড ট্রিপ অত্যন্ত পছন্দ করেন। প্রিয়জনকে সঙ্গী করে লং-ড্রাইভ (Long Drive) তো অনেকের কাছেই চূড়ান্ত রোম্যান্টিক ব্যাপার। আর সেই পথ যদি হয় পাহাড়ের ধার ঘেঁষে, কিংবা ঘন জঙ্গলের বুক চিরে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। রোম্যান্সের সঙ্গেই উপরি পাওনা পথের রোমাঞ্চ (Road trips routes)।
১. বিশাখাপত্তনম থেকে আরাকু ভ্যালি: বিশাখাপত্তনম থেকে আরাকু উপত্যকার দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। তাই সপ্তাহান্তের রোড ট্রিপের জন্য খুবই উপযুক্ত এই রাস্তা। আরাকু উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত এই পুরো রাস্তাটি পূর্বঘাট পর্বতমালার কোল ঘেঁষে এগিয়েছে। পাহাড়ি রাস্তায় গজিয়ে উঠেছে অজস্র গাছ। সেই সবুজ বনানীর বুক চিরে এগিয়েছে সর্পিল রাস্তা। কফি চাষ দেখতে দেখতে সেই পথ ধরে শুধু এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।
২. শিলং থেকে চেরাপুঞ্জি: শিলংকে বলা হয় পূর্ব ভারতের স্কটল্যান্ড। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া আর অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের টানে পর্যটকরা বারবার ছুটে আসেন এখানে। আবার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অসমের এই শহরকেও টেক্কা দেবে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি। এই শহরে দিনভর বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। টলটলে জলের দিগন্ত বিস্তৃত হ্রদে যখন কালো মেঘের ছায়া পড়ে, তখন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। শিলং থেকে চেরাপুঞ্জি যাওয়ার জন্য রোড ট্রিপের থেকে ভাল আর কিছু হতেই পারে না, কারণ দুই শহরের অপরূপ প্রকৃতিকে সঙ্গী করেই এগিয়েছে এই রাস্তা।
৩. বেঙ্গালুরু থেকে উটি: আপনি যদি রোলারকোস্টারে চড়তে ভালবাসেন, তাহলে এই রাস্তা আপনার রোড ট্রিপের জন্য আদর্শ। উটি এবং বেঙ্গালুরুর সংযোগকারী এই রাস্তায় রয়েছে ৩৬টি হেয়ারপিন বাঁক। নীল আকাশ, পশ্চিমঘাট এবং পূর্বঘাট পাহাড়, আর চা বাগানকে সঙ্গে নিয়ে সাপের মতো আঁকাবাঁকা ভঙ্গিতে এগিয়েছে রাস্তা। বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্য থেকে উটির নয়নাভিরাম নিসর্গ, রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দৃশ্যপটের বদলটুকু স্পষ্ট ধরা পড়বে চোখে।
৪. চণ্ডীগড় থেকে কসোল: 'এই পথ যদি না শেষ হয়…'
এই রাস্তায় গাড়ির সওয়ারি হলে এই লাইনটুকু আপনার মাথায় আসবেই আসবে। চণ্ডীগড়ের সুবিস্তৃত খেত থেকে কসোলের পাহাড়ি পথে প্রবেশ, এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এই রাস্তাতেই পড়বে চালাল গ্রাম, সড়ক পথে যেতে যেতে এই নিরিবিলি গ্রামে গাড়ি থেকে নেমে একটু হেঁটে ঘুরে নেওয়া যায়। কোলাহল নেই, ভিড় নেই, শুধুই প্রশান্তি মিলবে এই রোড ট্রিপে (long drive)।
আরও দেখুন:
৫. দিল্লি থেকে পরওয়ানু: পরওয়ানু হল হিমাচলপ্রদেশের ছোট্ট একটি পাহাড়ি গ্রাম। দিল্লি থেকে এখানে পৌঁছাতে সড়কপথে সময় লাগে ৬ ঘণ্টা মতো। দিল্লির ধুলো-ধোঁয়া দূষণ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ছুটি পেলেই গাড়ি নিয়ে এই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। পথেই পড়বে অজস্র ফলের বাগান, পাহাড়ের উপর জঙ্গলে বুনোফুল ফুটে থাকতে দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে।
৬. মুম্বই পুনে এক্সপ্রেসওয়ে: ভারতের ব্যস্ততম রাস্তা গুলির মধ্যে এই এক্সপ্রেসওয়েটি অন্যতম। এই রাস্তা ধরেই মুম্বইয়ের লোকজন মাত্র ২ ঘণ্টায় কালাম্বোলি থেকে পুণের কিওয়ালেতে পৌঁছে যান। এই রাস্তা তেমন নিরিবিলি নয় ঠিকই। কিন্তু সহ্যাদ্রি পর্বতমালার বুক চিরে ছুটে চলা ৬টি লেনের এই ব্যস্ত রাস্তায় রয়েছে অজস্র টানেল এবং বাঁক। পথের দুপাশে প্রকৃতি যেন ছবির মত সুন্দর (road trips)।
৭. ওল্ড সিল্ক রুট: এক সময় এই রাস্তা দিয়েই সিকিম থেকে তিব্বতের লাসার মধ্যে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বজায় ছিল। যদিও এখন তার জন্য বিকল্প পথ তৈরি হয়েছে, কিন্তু যাঁরা রোড ট্রিপ ভালবাসেন, তাঁরা আজও গাড়ি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যেতে চান। ওল্ড সিল্ক রুটের সৌন্দর্য একবার চোখে দেখলে ভোলার নয়। দূষণহীন নীল আকাশের বুকে নিজের খেয়ালে ভেসে বেড়ায় মেঘ, আর তার নীচে পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে ক্রমশ উঁচুতে উঠে গেছে রাস্তা। এই পথেই পড়বে নাথাং ভ্যালি, যেখানে রয়েছে অজস্র ছোট বড় জলপ্রপাত। গাড়ি নিয়ে এই রাস্তায় বেরোলে সেইসব প্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ভুলবেন না কিন্তু!
আরও পড়ুন: ঘুমঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা, এই মাধবী রাত! জেনে নিন দেশের সেরা ৫ ‘স্টারগেজিং’ ডেস্টিনেশন