শেষ আপডেট: 23rd September 2023 06:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুজোর ঠিক আর একমাস বাকি। এই ছুটিতে ঘুরতে না গেলে কি ভ্রমণপিপাসু বাঙালির চলে? তবে কাজের চাপে অনেকেই এখনও পর্যন্ত এবারের ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা ঠিক মতো করে উঠতে পারেননি। মাসখানেক মাত্র সময় হাতে নিয়ে দূরে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কাছেপিঠেই রয়েছে এমন অফবিট ডেস্টিনেশন (Offbeat destination), যা বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছাও মেটাবে, আবার নামকরা ট্যুরিস্ট স্পটের তুলনায় সৌন্দর্যে কোনও অংশে কম নয়। বরং উপরি পাওনা দূষণমুক্ত পরিবেশ আর নিরিবিলিতে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর সুযোগ (Travel)।
এবারের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন রিকিসুম (Rikisum) গ্রাম থেকে। কালিম্পং (Kalimpong)-এর এই ছোট্ট জনপদ ইদানীং পর্যটকদের কাছে ভালই সুনাম অর্জন করছে। নিরিবিলি এই গ্রামে তাপমাত্রা যেমন মনোরম, নৈসর্গিক সৌন্দর্যও তেমনই অপরূপ। সবুজে মোড়া পাহাড় যেন নরম গালিচা, ভেসে রয়েছে হিমালয় পাহাড়ের কোলে। ভোর হলেই পাইন, ফার, বার্চ গাছে ঘেরা জ্যামিতিক পাহাড়ের ফাঁক গলে উঁকি দেন সুয্যিমামা। তুষারাবৃত পাহাড় তখন সেই নরম কমলা আলোর ওম মেখে আহ্লাদে আটখানা। মুহুর্মুহু রং বদলাচ্ছে, এই কমলা, তো এই উজ্জ্বল হলুদ, এই আবার গোলাপি-বেগুনির মিশেল!
তার সঙ্গেই দেখা মিলবে নাম না জানা বাহারি ফুলের। কোনওটা টুকটুকে লাল, তো কারও রঙ আসমানি। খাড়া পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে অবহেলায় ফুটে থাকে ম্যাগনোলিয়া কিংবা রডোডেনড্রন। দেখতে দেখতে এমন মোহিত হয়ে যাবেন, যে ফিরতে মন চাইবে না।
এই পাহাড়ি জনপদে তাপমাত্রা সারা বছরই অত্যন্ত মনোরম। গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করে ২২-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। শীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যায় ৩ ডিগ্রিতে।
গ্রামের ঠিক পিছনেই রয়েছে নেওড়া ভ্যালি জঙ্গল (Neora Valley forest)। আর তার কারণেই এখানে জীববৈচিত্র্যও অসামান্য। হরেক রকম পাখি এবং বন্য জন্তুর দেখা মেলে রিকিসুমে। অবস্থানগত কারণেই ব্রিটিশ শাসকদের এতটাই পছন্দ ছিল পাহাড়ি এই গ্রাম, যে রিকিসুমে পাহাড়ের চূড়ায় একটি বাংলো তৈরি করেছিলেন তাঁরা। সেই বাংলো এখন আর অক্ষত নেই বটে, তবে ইতিহাসের সেই ধ্বংসাবশেষ রয়ে গেছে এখনও।
রিকিসুম (Rikisum) গ্রাম থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে তিস্তা নদী। সেখানে রিভার র্যাফটিং করা যায়। অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসলে একবার খরস্রোতা তিস্তার বুকে র্যাফটিং করে দেখতেই পারেন।
কীভাবে যাবেন: শিলিগুড়ি থেকে সড়ক পথে রিকিসুমের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। এনজেপি স্টেশনে নেমে ভাড়ার গাড়িতে চেপে পৌঁছে যাওয়া যায় এই গ্রামে। এই গ্রামের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হল বাগডোগরা। সেখান থেকে গাড়িতে রিকিসুম যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার মতো।
কোথায় থাকবেন: অফবিট জায়গা হওয়ায় এখনও হোটেল গড়ে ওঠেনি এই গ্রামে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের তৈরি অজস্র হোমস্টে রয়েছে, যেখানে থাকা এবং খাওয়া দুইয়েরই সুবন্দোবস্ত রয়েছে।
পুজোয় ট্রেক করতে যাচ্ছেন? কী কী জিনিস সঙ্গে না নিলে বিপদে পড়বেন, জেনে নিন