শেষ আপডেট: 16th June 2024 18:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কলকাতায় অসহ্য গরম। এইসময় যদি পাওয়া যায় খোলা আকাশ, সমুদ্রসৈকতের ঠান্ডা হাওয়া অথবা একটুকরো নির্জন দ্বীপের খোঁজ! বেরিয়ে আসুন দিঘা-মন্দারমণির বাইরে, ভিড় এড়িয়ে অজানা সাগরপারের উদ্দেশে। বেশি সময়ও লাগবে না, মাত্র দু-তিনদিনে আপনি ঘুরে নিতে পারবেন এমন কয়েকটা সৈকতের খোঁজ রইল এখানে।
১) লাল কাঁকড়া বিচ
দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণি তো অনেক গেছেন এবারে ঘুরে আসুন লাল কাঁকড়ার বিচ। মন্দারমণি থেকে খানিক দূরেই দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে লাল কাঁকড়ার সমুদ্র সৈকত। এখনও সৈকতপ্রেমী মানুষদের ভিড় লাগেনি এখানে। তবে অফবিট ডেস্টিনেশন হিসেবে অনেকেই এই লাল কাঁকড়ার বিচকে বেছে নিচ্ছেন। লাল কাঁকড়ার দেখা তো মিলবেই তাছাড়া এখানকার বিকেলের সূর্যাস্তটা কিন্তু কোনওভাবেই মিস করলে চলবে না।
যাবেন কীভাবে?
কলকাতা বা হাওড়া স্টেশন থেকে দিঘা যাওয়ার ট্রেনে উঠে নামতে হবে চাউলখোলা। সেখান থেকে টোটো বা গাড়ি করে কিছুটা গেলেই পৌঁছে যাবেন দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের লাল কাঁকড়ার বিচে। বেশ কিছু থাকার জায়গা আছে তবে আগে থেকে বুকিং করে যাওয়াই ভাল।
২) ডুবলাগিরি
বাংলার পড়শি রাজ্য ওড়িশা। সেখানেরই অন্যতম এক সুন্দর সমুদ্র সৈকত হল ডুবলাগিরি বিচ যাকে 'বাগদা বিচ'ও বলা হয়ে থাকে। পাখির কলরব, নির্জন ঝাউবনে ঘেরা বিচ, সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত মিলিয়ে বেশ আনন্দেই কাটবে দুটো দিন। সঙ্গে থাকছে টাটকা মাছ ভাজার স্বাদ নেওয়ার আর ক্যাম্পিং করার সুবর্ণ সুযোগ।
যাবেন কীভাবে?
হাওড়া থেকে ট্রেনে করে পৌঁছে যান বালেশ্বর। সেখান থেকে গাড়ি করে যেতে হবে ডুবলাগিরি। যদি রোড ট্রিপের পরিকল্পনা থাকে তাহলে কলকাতা থেকে গাড়ি করে যেতে পারেন ডুবলাগিরি, সময় লাগবে ৪-৫ ঘণ্টা।
৩) যমুনাসল
ওড়িশাতেই রয়েছে আরও একটি সুন্দর নির্জন বিচ, নাম যমুনাসল। এখানে আপনার সর্বক্ষণের সঙ্গী থাকবে উথাল-পাথাল ঢেউ । দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা নিজে করতে চাইলে নদীতে মাছ ধরার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয় এখানে। অবশ্যই সঙ্গে অভিজ্ঞ কোনও ব্যক্তিকে রাখবেন এবং আগে থেকে সবটা কথা বলে রাখবেন। রাতের জন্য রয়েছে ক্যাম্পিং-এর ব্যবস্থা। রাতের পরিষ্কার আকাশে তারাদের ভিড় আর নির্জন সৈকতে গর্জে ওঠা ঢেউয়ের শব্দ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
যাবেন কীভাবে?
হাওড়া বা সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে পৌঁছতে হবে বাস্তা স্টেশন। সেখান থেকে যমুনাসলের দূরত্ব মাত্র ৩১ কিলোমিটার। অটো বা গাড়ি ভাড়া পেয়ে যাবেন বাস্তা স্টেশনের বাইরেই।
৪) বগুরান জলপাই
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই অজানা দ্বীপ। একদম শান্ত আর নিরিবিলি। ঝাউবন দিয়ে ঘেরা চারিধার আর মাঝে ছোট্ট একটুকরো দ্বীপ উঁকি দিচ্ছে। সামনে এগোলে দরাজ সমুদ্র অপেক্ষা করছে কেবল যেন আপনার জন্যেই। এটাই হল বগুরান জলপাই। সুমুদ্র উত্তাল না হলেও অমবস্যা বা পূর্ণিমায় এই জায়গার সৌন্দর্য যেন দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং সঙ্গে বাড়ে ঢেউয়ের জোর। এখানেও দেখা মেলে লাল কাঁকড়ার তবে কিছু ভ্রমণপ্রেমীর অসচেতনতা, সমুদ্র সৈকতকে নোংরা করে ফেলার জন্যেই কমে যাচ্ছে লাল কাঁকড়ার পরিমাণ।
যাবেন কীভাবে?
বাসে অথবা গাড়িতে দুভাবেই যেতে পারেন এখানে। বাসে গেলে কাঁথি-দীঘা বাইপাস মোড়ে নেমে তারপর সেখান থেকে টোটো বা অটো। আবার সরাসরি কলকাতা থেকে গাড়ি করেও যেতে পারেন। থাকার জায়গা খুব কম তাই আগে থেকে বুকিং করে যাবেন।
৫) লালগঞ্জ সৈকত
বকখালি, মৌসুনি আইল্যান্ডের পর নামখানা থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত এই অচেনা বিচের খোঁজ পাওয়া গেছে। নাম লালগঞ্জ সৈকত। কলকাতা থেকে দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। যদি আপনি আজকে রাতে প্ল্যান করে কালকে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ার মতো রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষ হন তাহলে এই সমুদ্র সৈকত হতে পারে আপনার পরবর্তী ঠিকানা।
যাবেন কীভাবে?
শিয়ালদহ থেকে নামখানা যাওয়ার ট্রেনে চেপে নামুন নামখানা স্টেশনে। স্টেশনের বাইরেই ভর্তি গাড়ি, অটো এবং টোটো। সেখান থেকে ভাড়া দরদাম করে টোটোতে চেপে পৌঁছে যান লালগঞ্জ সৈকত।