শেষ আপডেট: 24th June 2023 11:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কুর্গ (Coorg)। কর্নাটকের এই পর্যটনকেন্দ্রটি ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ব্যাচেলর্স ট্রিপ হোক, বা মধুচন্দ্রিমার ঠিকানা, ভারতের স্কটল্যান্ড হিসেবে পরিচিত কুর্গ অনেকেরই ড্রিম ডেস্টিনেশনের তালিকার শীর্ষে থাকে। এই কুর্গেই রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল রিসর্ট, যেখানে একেবারে প্রকৃতির কোলে থাকার সুযোগ মেলে। তার মধ্যে অন্যতম হল আয়াতানা রিসর্ট। কুর্গের এই রিসর্টের মধ্যেই রয়েছে একটি ঝর্না। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন এই ঝর্নার জলে স্নান করা কিংবা পা ডুবিয়ে বসে থাকার অনুমতি রয়েছে একমাত্র রিসর্টের অতিথিদের। ফলে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ ভরপুর। কিন্তু সমস্যা হল, রিসর্টের বিপুল অঙ্কের ট্যারিফ। এখানে এক রাতের থাকার খরচ শুরুই হয় ২০ হাজার টাকা থেকে।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, একেবারে কাছেপিঠেই রয়েছে এমন জায়গা, যা কুর্গের ওই রিসর্টের তুলনায় কোনও অংশেই কম নয়। খরচও একেবারেই মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই। সেখানেও রিসর্টের ভিতরে ঘর থেকে দু পা দূরেই রয়েছে শীতল জলের পাহাড়ি নদী। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ঝর্না না হলেও নির্জন এই জায়গায় খুব বেশি মানুষের পা পড়ে না। বড় বড় পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে উচ্ছ্বল জলধারা। দু-পাশেই ঘন সবুজ জঙ্গল। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে জলঢাকা নদী। এই জায়গাটি হল ডুয়ার্সের ঝালং। রিসর্টটির নাম হল ঝালং রিভার ক্যাম্প (Jhalong river camp travel)। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বন বিভাগ এই রিসর্টের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে।
ঝালং ইন্দো-ভুটান সীমান্তে অবস্থিত একটি পাহাড়ি জনপদ। সেখানেই জলঢাকা নদীর পার বরাবর গড়ে উঠেছে ঝালং রিভার ক্যাম্প। অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ প্রকৃতির মাঝে এই রিসর্টের ব্যবস্থাপনা এবং খাবার দাবার দুটোই অত্যন্ত ভাল। এই রিসর্ট এলাকার গা ঘেঁষে বয়ে গেছে জলঢাকা নদী। সেই নদী পারাপারের জন্য রয়েছে বাঁশের একটি সাঁকো। নদীর জলে রয়েছে বিশালাকার বোল্ডার। সেই পাথরের উপর জলে পা ডুবিয়ে বসে থাকলে কেউ বাধা দেওয়ার নেই। চাইলে স্নানও করতে পারেন। শীতল জলের স্পর্শে ক্লান্তি দূর হবে, শান্ত হবে মন।
রিসর্টের ভিতর থাকার ঘর ছাড়াও রয়েছে বসার জন্য ছোট ছোট জায়গা। পাহাড়ের উপর বাগানের ভিতর এই জায়গাগুলিতে বসে থাকতে থাকতে কখন যে সময় কেটে যাবে, বুঝতেই পারবেন না। সকালে এক কাপ চা নিয়ে চলে যান সেখানে, বসে বসেই দেখুন পাহাড়ে সূর্যোদয়ের দৃশ্য। রিসর্ট কর্তৃপক্ষের তরফেই অতিথিদের জন্য আদিবাসী নাচেরও ব্যবস্থা করা হয়।
এই এলাকায় সারা বছরই আবহাওয়া মনোরম থাকে। তবে ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় হল বর্ষার শেষে, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাস। ঝালং রিভার ক্যাম্পের অদূরেই রয়েছে হাইডেল পাওয়ার স্টেশন। জলঢাকা নদীর উপর তৈরি এই জলাধার পড়শি দেশ ভুটানের সঙ্গে সেতু হিসাবেও কাজ করে। এখানে অজস্র প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। তাই পক্ষী পর্যবেক্ষণের আদর্শ জায়গা এই জলাধার। শীতকালে এখানে অনেক পরিযায়ী পাখিরাও আসে। তাই উৎসাহী পর্যটকরা ঝালং আসার জন্য বেছে নেন এই সময়টাকে।
কীভাবে যাবেন
শিলিগুড়ি থেকে ঝালং রিভার ক্যাম্পের দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার। এনজেপি হল ঝালংয়ের সবচেয়ে কাছের রেল স্টেশন। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ৮৯ কিলোমিটার দূরে রিভার ক্যাম্পে আসা যেতে পারে। নিকটতম বিমানবন্দর হল বাগডোগরা। সেখান থেকে ঝালং রিভার ক্যাম্পের দূরত্ব ১০৪ কিলোমিটার। বিমানবন্দর থেকে ঝালং যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি পাওয়া যায়।
ছুটি কাটাতে গ্রামে যাবেন ভাবছেন? ভারতের এই ৫ প্রত্যন্ত জনপদ থেকে ঘুরে আসুন