শেষ আপডেট: 17th June 2023 06:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মধুচন্দ্রিমা হোক, কিংবা পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া-বিচ অর্থাৎ সৈকত ভ্রমণপিপাসুদের অনেকের কাছেই অন্যতম পছন্দের জায়গা। বালিতে হাঁটতে হাঁটতে সূর্য কিংবা সূর্যাস্তের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না অনেকেই। তবে সৈকতে ঘুরতে যাওয়া বলতে বেশিরভাগ মানুষই বোঝেন দিঘা-পুরী, কিংবা গোয়া। এছাড়া রয়েছে দক্ষিণ ভারতের কিছু জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত। কিন্তু জানেন কি, উত্তরপ্রদেশে রয়েছে এমন এক সৈকত, যা আসলে একটি 'সিক্রেট বিচ?' একেবারে গুটিকয়েক মানুষই জানেন এই বিচের (Pilibhit Hidden Beach) কথা। অথচ সৌন্দর্যের দিক থেকে জনপ্রিয় বিভিন্ন বিচের তুলনায় কোনও অংশেই কম নয় এই সৈকত। তাই বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া তো বটেই, উত্তরপ্রদেশের চুকা বিচ (Chuka Beach) হয়ে উঠতে পারে মধুচন্দ্রিমারও আদর্শ ঠিকানা।
ভাবছেন নিশ্চই, উত্তরপ্রদেশে সমুদ্র কোথায়, যে সৈকত পাওয়া যাবে? আগেভাগেই বলে রাখা ভাল, চুকা বিচ কোনও সমুদ্র সৈকত নয়। এটি হল পিলিভিট ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের (Pilibhit Tiger Reserve) অন্তর্গত একটি জলাধারের সৈকত। এই বিচ গড়ে উঠেছ মাহফ অরণ্য এলাকায় শারদা সাগর ড্যাম এবং নেপাল থেকে উত্তরপ্রদেশ সীমানা পেরিয়ে আসা শারদা ক্যানালের মধ্যবর্তী অঞ্চলে। এই শারদা সাগর জলাধারটি ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চওড়ায় ২.৫ কিলোমিটার। এই জলাধারের গা ঘেঁষেই রয়েছে সবুজ অরণ্য এবং বালিতে ঘেরা তটভূমি। পিলিভিট জেলার এই লুকোনো সৈকতের কথা কেউই প্রায় জানেন না বললেই চলে। সেই কারণেই যাঁরা ঘুরতে যাওয়ার জন্য অফবিট ডেস্টিনেশনের খোঁজ করেন, তাঁরা জল-জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর মাঝে প্রকৃতির কোলে বাকি পৃথিবীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটো দিন নিরিবিলিতে কাটিয়ে আসতে পারেন অনায়াসে।
এখানে দেখা মিলবে অজস্র পাখির। তাই পক্ষীপ্রেমীদের জন্য চুকা বিচ একেবারে স্বর্গরাজ্যই বলা যায়। এছাড়া ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় দক্ষিণরায়ের দেখা পাওয়ার সুযোগ যে রয়েছেই, সে কথা বলা বাহুল্য। টাইগার রিজার্ভে জঙ্গল সাফারি মিস করবেন না। বাঘ ছাড়াও এই এলাকায় রয়েছে অজস্র প্রজাতির বন্যপ্রাণী। ঘুরে আসতে পারেন নেহরু পার্ক থেকেও।
প্রাথমিকভাবে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের সুবিধার্থে এই এলাকাটিকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আইএফএস আধিকারিক রমেশ পাণ্ডে। শারদা ড্যামকে কেন্দ্র করে ইকো-ট্যুরিজম গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন তিনি এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধু। তাঁদের উদ্যোগে সেখানে ২ বছরের মধ্যে ৪টি ইকো-হাট গড়ে ওঠে। পরে রমেশের বদলির পর স্থানীয় প্রশাসন এবং বন দফরের উদ্যোগেই ধীরে ধীরে পূর্ণতা পায় চুকা বিচ।
কোথায় থাকবেন: প্রকৃতির সান্নিধ্য যাতে পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করা যায়, তার জন্য সৈকত সংলগ্ন এলাকায় গাছ এবং জলের উপর সরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে একাধিক খড়ের চালের কুঁড়েঘর, যা ইকো-হাট নামেই পরিচিত। চুকা বিচে গেলে ট্রি-হাউজে থাকার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। এছাড়া জলের উপরেই রয়েছে ওয়াটার হাট। এই ইকো হাটে থাকার অভিজ্ঞতা যে সাধারণ হোটেল কিংবা হোমস্টের তুলনায় একেবারেই আলাদা সেকথা হলফ করে বলা যায়।
কীভাবে যাবেন: পিলিভিট রেলপথে ভারতের বেশিরভাগ শহরের সঙ্গেই সংযুক্ত। এছাড়া সড়কপথেও পিলিভিট পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন চুকা বিচে।
লাদাখ যাওয়ার প্ল্যান করছেন? খরচ নিয়ে ভাববেন না, রইল খুঁটিনাটির খোঁজ