শেষ আপডেট: 2nd May 2024 12:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সামনে তাকালেই বরফে ঢাকা পাহাড়চূড়া আর স্বচ্ছ জলে তার অপরূপ প্রতিফলন, এই দৃশ্য দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন চন্দ্রতাল লেক (Chandratal Lake) ট্রেক করতে। অনেকে এই হ্রদকে মুন লেক বলেও চেনেন। হিমাচলের যে যে জায়গায় ট্রেক করা যায় তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য চন্দ্রতাল লেক ট্রেক। হিমাচল প্রদেশের স্পিতি ভ্যালির সমুদ্র টাপু মালভূমির উপরে এই লেক। অর্ধচন্দ্রাকার আকৃতির মতো দেখতে এই লেক তাই একে বলা হয় চন্দ্রতাল লেক। তাছাড়া চন্দ্রতাল (Chandratal Lake) কথার অর্থই হল 'লেক অফ দ্য মুন' ফলে নামের সার্থকতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই উঠে না।
সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৪২৫০ মিটার উঁচুতে এই লেক। এই ট্রেককে বলা হয় মডারেট ট্রেক অর্থাৎ সবে সবে যারা ট্রেক করা শুরু করতে চাইছেন এটা তাঁদের জন্য নয়। বরং যারা কয়েকবার ট্রেক করে ফেলেছেন তাঁদের জন্য। যেহেতু সমুদ্রতল থেকে অনেকটা উঁচুতে উঠতে হয় এই ট্রেকে, তাই আগে থেকে দু-একটা সহজ ট্রেক করা থাকলে অনেকটাই সুবিধে হবে। মানালি থেকে চন্দ্রতাল লেক (Chandratal Lake) ট্রেক করার মোট রাস্তা ৮০ কিলোমিটার।
জুন থেকে অক্টোবর হল এই চন্দ্রতাল ট্রেক (Chandratal Lake) করার সেরা সময়। বছরের একদম শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি নাগাদ এখানে প্রচুর বরফ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অগস্ট আসতে আসতে বরফের পরিমাণটা কমতে থাকে ফলে এইসময় ট্রেক করা সহজ। আবার অক্টোবরের দিক থেকে স্নো ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
দিল্লি থেকে রাতের বাস ধরে পৌঁছে যান মানালি। মানালি থেকে গাড়ি নিয়ে যেতে হবে কেলং ভায়া রোহতাং পাস। দূরত্ব ১১৫ কিলোমিটার। কেলং পৌঁছনোর পর সেদিনটা ওখানেই থাকুন। আশপাশটা ঘুরে দেখুন, ওখান থেকে ছোট ছোট হাইক করার মতো অনেক জায়গা রয়েছে সেগুলো ঘুরে দেখুন। উচ্চতার সঙ্গে নিজের শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই ট্রেকের প্রথমদিন লোকেশনে পৌঁছে একটু রেস্ট নেওয়া উচিত।
ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়ুন বাতালের পথে । সকাল সকাল বেরিয়ে যাওয়া ভাল, যাতে অনেকটা সময় পথে কাটাতে পারেন। বাতালে পৌঁছে লাঞ্চ সেরে নিন। এখান থেকেও ছোট একটা হাইক করা যায়। হাইক করে চারিদিকটা ঘুরে দেখুন আবার সন্ধের মধ্যে নিজের ক্যাম্পে বা হোটেলে ফিরে আসুন।
সকাল সকাল জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়ুন চন্দ্রতালের (Chandratal Lake) পথে । বাতাল থেকে চন্দ্রতাল ১৮ কিলোমিটারের ট্রেক। সময় লাগবে ৫-৬ ঘণ্টা। ট্রেকে যাওয়ার রাস্তায় পড়বে লাহাউল পাস, মিনার পিকস, তালাগিরি পিকস, তারা পাহাড় এবং মুলকিলা। সেইদিনটা চন্দ্রতালেই থাকুন। রাতের মনোরম পরিবেশ আর পাহাড়ি খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।
এইদিনটা চন্দ্রতাল লেক (Chandratal Lake) এবং তার আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘুরে দেখার জন্য। আসলে কী বলুন তো, পাহাড়ের একটা জায়গায় ঘুরতে গেলেও আশেপাশে এতকিছু দেখার থাকে যে একদিনে সবটা দেখে শেষ করা যায় না। ফলে আরও একদিন হাতে সময় নিয়ে থাকলে মনে শান্তি রেখে ঘুরতে পারবেন।
ট্রেকের শেষ দিন অর্থাৎ ফেরার পালা। একরাশ ভাললাগা, পাহাড়ের কোণে কোণে জড়ো হওয়া স্মৃতি মনে করতে করতে নেমে আসুন মানালিতে।
কলকাতা থেকে যদি আপনি এই ট্রেক করতে চান তাহলে খরচটা একটু বেশি হবে ওই ধরুন ১৫০০০ টাকা মাথা পিছু। কারণ আপনাকে কলকাতা থেকে দিল্লি আগে যেতে হবে তারপর সেখান থেকে মানালি। কিন্তু দিল্লিতে বা তার আশপাশে যারা থাকেন অর্থাৎ যাদের এলাকা থেকে একটা বাসে মানালি পৌঁছে যাওয়া যায় তাঁদের ক্ষেত্রে খরচটা অনেকটা কম। সেক্ষেত্রে মোটামুটি ৭৫০০ টাকা খরচ পরবে মাথা পিছু। নিজেরাও প্ল্যান করে যেতে পারেন অথবা প্রচুর ট্রাভেল এজেন্সি এবং ট্রাভেল ওয়েবসাইট রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলেও যেতে পারেন।