শেষ আপডেট: 8th June 2023 02:00
ঠাকুর বাড়ির রান্না শেখালেন শেফ, এঁচোড়ের পুরভরা পটল পূরণ ও প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবীর মটন ভিন্দালু
চৈতালি দত্ত
সুদীর্ঘ বছর ধরে বাংলা তথা ঠাকুরবাড়ির হারিয়ে যাওয়া রান্না নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন ৬ বালিগঞ্জ প্লেস রেস্তোরাঁর কর্ণধার তথা সেলেব্রিটি শেফ সুশান্ত সেনগুপ্ত। তিনি দ্য ওয়াল-এর সঙ্গে শেয়ার করলেন তেমনই দুই রেসিপি। সংকলনে।
এঁচোড়ের পুরভরা পটল পূরণ ভাজা
উপকরণ:
পটল ৮টা
এঁচোড় ২৫০ গ্রাম
কাঁচালঙ্কা কুচি ৩/৪টে
ঘি প্রয়োজন অনুযায়ী
সরষের তেল আন্দাজ মতো
গোটা সাদা জিরে রোস্টেড ১ চা চামচ
নুন স্বাদ অনুযায়ী
ছোলার বেসন ১ কাপ
চিনি স্বাদ অনুযায়ী
কাজুবাদাম, কিশমিশ আন্দাজমতো
পদ্ধতি:
প্রথমে এঁচোড় ভাল করে ধুয়ে, ছোট টুকরো করে এঁচোড়ের টুকরোগুলোকে চটকে নিতে হবে।
কড়াইতে ঘি দিয়ে স্ম্যাশ করা এঁচোড় ছেড়ে দিতে হবে। ভাল করে নাড়াচাড়া করে একে একে কাঁচা লঙ্কা কুচি, নুন, চিনি, রোস্টেড গোটা সাদা জিরে দিয়ে ভাল করে নাড়িয়ে কাজুবাদাম, কিশমিশ দিতে হবে।
ঢিমে আঁচে এঁচোড়ের পুর তৈরি করতে হবে।
পুর তৈরি হয়ে গেলে আলাদা পাত্রে ছড়িয়ে রাখতে হবে এবং ঠান্ডা করতে দিতে হবে।
অন্যদিকে পটলের খোসা ছাড়িয়ে ভেতরে দানা সব বের করে দিতে হবে।
এবারে কড়াইতে গরম জল বসিয়ে তার মধ্যে পটল দিয়ে পাঁচ মিনিট স্টিম করতে হবে। জল ঝরিয়ে রেখে পটলকে আলাদা পাত্রে তুলে রাখতে হবে।
এরপর একে একে পটলের মধ্যে এঁচোড়ের পুর ভরতে হবে।
অন্য একটি পাত্রে ছোলার বেসন, নুন এবং জল দিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে ।
এরপর পুরভরা পটল এই বেসনের গোলায় ডুবিয়ে গরম তেলে ডিপ ফ্রাই করে ভাজতে হবে।
এটি স্ন্যাক্স আইটেম, যা ভাত-ডালের সঙ্গে ভাজা হিসেবে খাওয়া যায়। অত্যন্ত মুখরোচক পদ।

প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবীর মটন ভিন্দালু
উপকরণ:
মটন ৭৫০ গ্রাম
ঘি ১ কাপ
শুকনো লঙ্কাবাটা ৮ টা
রসুন বাটা ৩০ গ্রাম
আদা বাটা ২৪ গ্রাম
গোটা ধনে ১টেবিল চামচ
সাদা গোটা জিরে ১ টেবিল চামচ
গোটা গোল মরিচ ১ টেবিল চামচ
দই ১২৫ গ্রাম
ভিনিগার হাফ কাপ
পেঁয়াজ কুচি ২টো
নুন স্বাদ অনুযায়ী
গোটা হলুদ বাটা ১ টেবিল চামচ
পদ্ধতি:
প্রথমে মাটন ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে ।
এবারে একটি পাত্রে মাটন রেখে তার মধ্যে আদাবাটা, রসুন বাটা, গোটা শুকনো লঙ্কা বাটা, গোটা হলুদ বাটা, ভিনিগার, দই, সামান্য পরিমাণে ঘি একত্রে ভাল করে মিশিয়ে দু'ঘণ্টার জন্য ম্যারিনেশন করতে হবে।
এরপর কড়াইতে বাকি ঘি দিয়ে গরম হলে তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে।
পেঁয়াজে বাদামী রং ধরলে তার মধ্যে ম্যারিনেশন করা মৈটন দিতে হবে। ভাল করে কষিয়ে রান্না করতে হবে সম্পূর্ণ ঢিমে আঁচে।
একবারে অনেক জল দিয়ে এই রান্না করা যাবে না। অল্প অল্প করে রান্নায় গরম জল দিতে হবে, ঢাকনা দিয়ে রান্না করতে হবে। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে দেখতে হবে মাংস কী অবস্থায় রয়েছে।
অন্যদিকে আগুনে শুকনো প্যানে গোটা সাদা জিরে ,গোটা ধনে, গোটা গোলমরিচ হালকা করে ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে রাখতে হবে।
মাটনের ঢাকনা খুলে যখন বোঝা যাবে মাংস সুসিদ্ধ হয়ে গেছে তখন ভাজা মশলা উপরে ছড়িয়ে দিয়ে ভাল করে নাড়িয়ে নামিয়ে রাখতে হবে।
এই উপাদেয় পদ পাঁউরুটি, পরোটা বা পোলাওয়ের সঙ্গে গরম পরিবেশন করতে হবে।
মূলত এটি পর্তুগিজ ডিশ। সেই সময়ে গোয়ায় ভিন্দালুর চলন ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে আমাদের গঙ্গার পাশেও পর্তুগিজ কলোনি ছিল। ফলে সেই প্রভাব এই রান্নায় রয়েছে। কিন্তু সেই সময় ঠাকুরবাড়ির হেঁসেলে সারা পৃথিবীর রান্না হত। একশো বছর আগে ঠাকুরবাড়ির রান্নায় ভিন্দালুর উল্লেখ রয়েছে।

খাসির মাংস তুলতুলে নরম হয় না? এই ৭ রকম পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন