শেষ আপডেট: 4th July 2023 07:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাথায়, ঘাড়ে যন্ত্রণা হতই। বেশ কিছুদিন ধরে মাথার একপাশ অসাড় হয়ে ফুলে যাচ্ছিল খ্যাতনামী বডিবিল্ডার জো লিন্ডারের। তাঁর সুঠাম, শক্তোপাক্ত শরীর। পেশিতে পেশিতে ঢেউ খেলে। অনেকে তাঁকে প্রাক্তন বডিবিল্ডার আর্নল্ড সোয়ার্ৎজ়েনেগারের সঙ্গেও তুলনা করতেন। এমন পেশিবহুল ব্যায়াম করা শরীরে কী রোগ (aneurysm) বাসা বাঁধল সেই নিয়েই এখন ডিজিটাল মিডিয়া তোলপাড়। কী এই অসুখ?
জো-র বান্ধবী নিশা তাঁর মৃত্যুর খবর ইনস্টাগ্রামে জানান। নিশা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে জো-র মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরেই অ্যানিউরিজম রোগ বাসা বেঁধেছিল বডিবিল্ডারের শরীরে। তিনি বুঝতেও পারেননি। মাথা, ঘাড়ের ব্যথা, অসাড়তাকে মামুলি ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। ফলে তলে তলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে গোটা মস্তিষ্কে। তারপর আচমকা ব্রেন হ্যামারেজে মৃত্যু হয় জো-র। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ব্রেনের ভেতরে রক্তবাহী নালীগুলি ফেটে গিয়েছিল। এই কারণে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। চিকিৎসার আগেই ব্রেন হ্যামারেজ হয়ে যায় বডিবিল্ডারের।
ব্রেন অ্যানিউরিজম (aneurysm) কী?
অ্যানুরিজম হল এক ধরনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগ। মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালীগুলি ফুলে ফেঁপে ওঠে। প্রদাহ বা ইনফ্ল্য়ামেশন শুরু হয় শিরায় শিরায়। মস্তিষ্কের যেদিকের রক্তবাহী নালীগুলি ফুলে যায় সেখানে ফোলা বেলুনের মতো অংশ তৈরি হয়। অনেক সময়েই মাথার একপাশে এমন বেলুনের মতো ফোলা অংশ তৈরি হয়। সেগুলো ফাটতে শুরু করলেই ব্রেনের ভেতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। আচমকা ব্রেন হ্যামারেজ, ব্রেন স্ট্রোক হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়।
উপসর্গ কী কী?
এক চোখের পিছনের দিকে ব্যথা, প্রসারিত চোখের মণি, মাথার একদিকে মাথা, ফোলাভাব, অসাড়তা এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। মস্তিষ্কের একপাশে ফোলাভাব দেখলেই সতর্ক হতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় অ্যানিউরিজমে রক্ত জমাট বাধতে (থ্রম্বোসিস) শুরু করে। ব্রেনের রক্তবাহী নালীগুলিতে রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধতে সেগুলি ফুলে ওঠে। একে বলে অ্যানিউরিজম। এই অ্য়ানিউরিজমের আকার বাড়তে থাকলে সেগুলি ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। একবার যদি ফাটতে শুরু করে তাহলেই সর্বনাশ। সঙ্গে সঙ্গেই হ্যামারেজ হয়ে যাবে রোগীর।
ওষুধে কমবে অবসাদ! ডিপ্রেশন কমাতে নতুন থেরাপি আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
অ্যানিউরিজম শুধু ব্রেনে নয় সব রক্তবাহিকাতেই হতে পারে। প্রাণঘাতী হতে পারে মস্তিষ্কের সার্কল অব উইলসে তৈরি অ্যানিউরিজম, বুকের মহাধমনী ও পেটে তৈরি অ্যানিউরিজম।হার্ট অ্যাটাকের পরে হৃৎপিণ্ডেও অ্যানিউরিজম হতে পারে যার নাম–ভেন্ট্রিকুলার ও এট্রিয়াল সেপটাল অ্যানিউরিজম।