শেষ আপডেট: 24th July 2023 07:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রথম বার প্রেগন্যান্সিতে অনেক সময়ই প্রি-টার্ম ডেলিভারির (Premature birth) ঝুঁকি থেকে যায়। শুধু মায়ের ক্ষেত্রে নয়, সময়ের আগে জন্মালে শিশুরও (preterm birth) জন্মগত কিছু শারীরিক ত্রুটি থেকে যায়, যা পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করে। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়, শারীরিক অসুস্থতা বা জিনগত কারণে প্রি-টার্ম বা প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি হতে পারে। প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি বা সময়ের আগেই সন্তানের জন্ম নিয়ে চিন্তা দিন দিন বাড়ছে। গবেষকরা দাবি করেছেন, প্রিম্যাচিওর ডেলিভারির (preterm birth) জন্য মায়ের শারীরিক সমস্যা নয়, বরং বাবার মানসিক স্বাস্থ্যও সমানভাবে দায়ী।
প্লস (PLOS) মেডিক্যাল জার্নালে এই ব্যাপারে গবষণাপত্র ছাপা হয়েছে। সুইডেনের গবেষকরা দাবি করেছেন, মা ও বাবা উভয়ের মানসিক সমস্যা যদি থাকে, তাহলে তার প্রভাব পড়বে সন্তানের মধ্যেও। বিশেষ করে বাবার যদি ক্রনিক মানসিক রোগের ইতিহাস থাকে বা অত্যধিক স্ট্রেস-অ্যাংজাইটি, মুড ডিসঅর্ডারের মতো সমস্যা থাকে এবং সেই সঙ্গে মায়েরও মানসিক সমস্যা থাকে, তাহলে প্রিম্যাচিওর সন্তানের (preterm birth) জন্ম হতে পারে।
গর্ভাবস্থার মেয়াদ সাধারণত ৪০ সপ্তাহ ধরা হয়। কিন্তু তার আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় বলে প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি। গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে যে বাচ্চার জন্ম হয়, তাদেরই প্রিম্যাচিওর বেবি (Premature birth) বলা হয়ে থাকে। জন্মের পর এই বাচ্চাদের বিশেষ যত্ন ও নজরে রাখার প্রয়োজন পড়ে।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, হবু বাবা-মা তাঁদের সন্তান আনার আগে কিছু পরিকল্পনা করে নিতে পারলে ২৮০ দিন মায়ের গর্ভে থেকে পরিপূর্ণ হয়েই পৃথিবীর আলো দেখতে পারে তাঁদের ভবিষ্যৎ। বেশি বয়সে প্রথমবার মা হতে গেলে প্রি-টার্ম বার্থের ঝুঁকি অনেক বেশি। ৩০ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম বার মা হলে ভাল হয়। যে সব হবু মা ধূমপায়ী বা ‘প্যাসিভ স্মোকিং’-এর শিকার তাঁদের বাচ্চা সময়ের অনেক আগেই ভূমিষ্ঠ হয়। আর এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাবা-মায়ের মানসিক সমস্যার দিকটাও।
‘জয় বাংলা’য় কাবু বাংলা, লাল লাল চোখে কনজাংটিভাইটিস, তাকালেই হবে নাকি!
কখনও অত্যধিক কাজের চাপ, কখনও গভীর কোনও শোক, এ রকম অনেক কিছু থেকেই হতে পারে মানসিক। এখনকার সময় লোকজনের মুখে একটাই কথা--মন ভাল নেই (Mental Stress)। অথবা কাজের এমন চাপ যে স্ট্রেস বাড়ছে, শরীরজুড়ে ক্লান্তি, মাথায় চিন্তার পাহাড়। এই মানসিক চাপ, মাত্রাতিরিক্ত অ্যাংজাইটি, টেনশন নানা রোগের জন্ম দিচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত স্ট্রেস বা টেনশন শুধু মানসিক ক্ষতি করে না, শারীরিক সমস্যা যেমন অনিদ্রা, উচ্চরক্তচাপ, খিদে কমে যাওয়া, মাথাব্যথা এইসবেরও কারণ হয়ে ওঠে। মানসিক সমস্যা প্রভাব ফেলে হরমোনের ক্ষরণেও। গবেষকরা বলছেন, বাবা-মা দুজনেরই যদি মানসিক নানা সমস্যা থাকে, তাহলে তাদের থেকে যে সন্তানের জন্ম হবে তার মধ্যেও অস্বাভাবিকতা আসতে পারে। এমনকী সময়ের আগে সন্তানের জন্ম হতে পারে।
আরও একটা কারণ হতে পারে। বাবার মেন্টাল স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি বা ঘন ঘন মুড সুয়িং হলে তার প্রভাব পড়বে গর্ভবতীর উপরেও। সেই সঙ্গে মায়ের মানসিক চাপ থাকলে, দুয়ে মিলে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে।
দেখা যায় অনিয়ন্ত্রিত প্রেশার, সুগার বা কিডনির অসুখ থাকলে বা গর্ভবতী মা ডায়াবেটিসের রোগী হলে অথবা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলে যেমন মাদক, ধূমপান বা অতিরিক্ত অ্যালকোহলে আসক্তি থাকলে সন্তানের উপর এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। গবেষকরা দাবি করেছেন, যদি দেখা যায় বাবা-মা দুজনেরই নেশায় আসক্তি বেশি এবং সেই সঙ্গে সাইকিয়াট্রিক ডিসঅর্ডার থাকে, তাহলে তাদের থেকে প্রিম্যাচিওর সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। এমন অনেক দম্পতিকে দিনের পর দিন পরীক্ষা করে ও পর্যবেক্ষণে রেখে এমনটা দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রি ম্যাচিওর বেবির যত্ন কীভাবে নেবেন
প্রি-ম্যাচিওর বেবির ক্ষেত্রে অনেক সময় কিছু জটিলতা দেখা যায়, কারণ তাদের সিস্টেম ঠিক ভাবে কাজ করার মতো পরিণত হয়নি। অনেক সময় হাইপোথার্মিয়া, জন্ডিস, গ্লুকোজ় কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় এই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে।
এই বাচ্চাদের ব্রিদিং রেটে ও ব্লাড প্রেসারে নজর রাখতে হবে।
বারবার আই চেকআপ করাতে হবে, রেটিনোপ্যাথি অফ প্রিম্যাচিওরিটি হচ্ছে কি না দেখতে হবে।
নজর রাখতে হবে লিভার ফাংশনের উপরও। প্রয়োজনে ফটোথেরাপি করতে হয়। যাতে বিলিরুবিন ভেঙে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।