
লকডাউনে কাজ হারিয়েছে? নিজের ওপর ভরসা যেন না হারায়, অস্ত্র করুন আত্মবিশ্বাসকে
চাকরি হারিয়ে ফেলা নিঃস্ব মানুষ যেমন আর্থিক কষ্টতে ভোগেন, তেমনই ভোগেন চরম মনকষ্টতেও। এই অপ্রাপ্তি জীবনে এনে দেয় প্রবল হতাশা। কাজ হারানো মানুষ ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলেন ধৈর্য, সহ্যশক্তি! মেজাজও ঠিক রাখতে পারেন না। আর এর থেকে আস্তে আস্তে কমতে থাকে নিজেও ওপরে আত্মবিশ্বাসও!
সাইকোলজিস্ট সানা খুল্লার বলেছেন, “চাকরি হারানোর ফলে যে কারওই মনের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। মনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর থাকে। আমরা যে বিষয়গুলোর ওপরে ভরসা করি, সেগুলো ধীরে ধীরে আবছা হতে থাকে এসময়। অতীতের সমস্ত ব্যর্থতা সামনে চলে আসে, যা আরও বেশি করে হতাশ করে দেয় সেই ব্যক্তিকে।”
এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বের করে আনতে কিছু টিপস দিয়েছেন সানা খুল্লার। তিনি নিজের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। চাকরি হারানোর জন্য নিজেকে দোষ দেওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন যে এরকম আপনার মতো পরিস্থিতিতে আরও অনেকেই রয়েছেন। তাই সবকিছুর জন্য নিজেকে দায়ী করবেন না। তিনি বলেন, “জীবনে সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। হাতের মুঠোতে বালি ধরে রাখতে যত বেশি প্রচেষ্টা করা হয়, তা তত তাড়াতাড়ি পিছলে পড়ে যায়। তাই তাড়াহুড়ো না করে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে আমাদের। একবার খারাপ ঘটনা ঘটেছে বলে তা বারবার ঘটবে না। ভাল সময় ফিরে আসবেই।”
কাজ চলে গেলে আজকের দিনে সবথেকে বড় যে সমস্যাতে পড়তে হয় তা হল আর্থিক সমস্যা। তবে সব সমস্যারই সমাধান থাকে। সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে উদ্ধার পাওয়া যায়, তার জন্য সময় দেওয়া দরকার। “প্রস্তুতি আর পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। সবার আগে যেটা দরকার তা হল নিজের ওপর ভরসা রাখা।” সানা বলেছেন।
নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া ব্যর্থ অতীতকে মনে না করে, ভাল কথা ভাবার প্রয়োজন রয়েছে। যা কিছু ভাল অর্জন করেছেন জীবনে সেই স্মৃতিকে ঝালিয়ে নেওয়া দরকার এই সময়। এটা মনের হতাশাকে দূর করতে সাহায্য করে।
তবে সবশেষে এটা মনে রাখতে হবে সকলকে যে কাজ জীবনের একটা অংশ শুধু। জীবন নয়। একটা কাজ হারানো মানে জীবন থেকে সবকিছু হারিয়ে ফেলা নয়! একটা চাকরি চলে গেলে, আর একটা চাকরি হয়তো পাওয়া যাবে। কিন্তু জীবন হারিয়ে গেলে, সেটা আর ফিরবে না।
“জীবনকে উপভোগ করে, আনন্দে বাঁচতে হবে। কোনও পরিস্থিতিতেই ভেঙে পড়াবেন না। জানবেন, অন্ধকারের পর আলো আসে। তাই জীবনের গতিকে থামতে দেবেন না।”– এই বলে মনোবিজ্ঞানী শেষ করেছেন।