শেষ আপডেট: 27 October 2023 16:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডেঙ্গির দাপটের জন্য নাকি দায়ী করোনা। আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছে সেই। এমনটাই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। ভাইরোলজিস্টরা খুঁটিয়ে দেখে দাবি করেছেন, করোনা এখন ঘাপটি মেরে আছে ঠিকই, তবে আড়াল থেকে উস্কে দিচ্ছে ডেঙ্গিকে। ডেঙ্গির ভাইরাসের সঙ্গে এখন সন্ধি করেছে করোনার অ্যান্টিবডি। দুয়ে মিলেই নাকি মারাত্মক সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।
এখন মনে হতে পারে করোনার সঙ্গে ডেঙ্গির কী সম্পর্ক! কেন্দ্রীয় সরকারের বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং ট্রান্সলেশনাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এই করোনা ও ডেঙ্গির মধ্যের গোপন সম্পর্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের ধারণা, ডেঙ্গি ভাইরাস ডেনভি-২ এত বিপজ্জনক হয়ে ওঠার কারণই হল সার্স-কভ-২ ভাইরাস।
সেটা কীভাবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা হলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্য়ান্টিবডিই শরীরকে এতদিন কোভিড থেকে সুরক্ষা দিয়েছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যতদিন যাচ্ছে এই কোভিড অ্যান্টিবডির শক্তি কমছে এবং ডেঙ্গি ভাইরাস শরীরে ঢুকে এই অ্যান্টিবডির সংস্পর্শে এলেই আরও সংক্রামক হয়ে উঠছে। ফলে খুব দ্রুত শরীরে ডেঙ্গি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।
ডেঙ্গির বাহক মশা, কিন্তু আসল কলকাঠি নাড়ে ডেঙ্গু ভাইরাসরা (DENV)। এরা হল সিঙ্গল, পজিটিভ-স্ট্র্যান্ডেড আরএনএ ভাইরাস। ফ্ল্যাভিভিরিডি পরিবার ও ফ্ল্যাভিভাইরাস গণের এই ডেঙ্গি ভাইরাসের পরিবার অনেক বড়। এদের পাঁচ রকমের সেরোটাইপ আছে যারা প্রত্যেকেই ভয়ঙ্কর রোগ তৈরি করতে পারে। স্ত্রী এডিস ইজিপ্টাই (aedes aegypti) মশা এই ভাইরাসদের বাহক।
ভাইরাসের চারটি ভ্যারিয়ান্টই সংক্রামক—ডেনভি-১, ডেনভি-২, ডেনভি-৩ ও ডেনভি-৪। এদের মধ্যে ডেনভি-২ ও ডেনভি-৩ ভাইরাস অতি সংক্রামক। স্ত্রী মশা পেটে এই ভাইরাস বহন করে। ভাইরাস আক্রান্ত শরীরের রক্ত খেলে সেখান থেকেও ভাইরাস বাসা বাঁধে মশার শরীরে। তবে, মশার উপরে এই ভাইরাসের ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে না। প্রায় ৮-১০ দিন পরে ভাইরাস মশার দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে ও মশার লালাগ্রন্থির মাধ্যমে লালাতে এসে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। ডেঙ্গি ভাইরাস বহনকারী মশা মানুষকে কামড়ালে লালার মধ্যে থাকা ভাইরাসরা চট করে ঢুকে যায় মানুষের রক্তে। সরাসরি ঢুকে পড়ে শ্বেত রক্তকোষে। এই কোষ শরীরের সবজায়গায় চলাচল করে। তাই কিছুদিনের মধ্যেই ভাইরাস প্রতিলিপি তৈরি করে সংখ্যায় বৃদ্ধি পায় ও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনায় যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের সকলের শ্বেত রক্তকোষেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল। এই অ্যান্টিবডিই নাকি এখন ডেঙ্গির ভাইরাসের সঙ্গে মিলে আরও মারাত্মক আকার নিচ্ছে। ভালর থেকে খারাপ করছে বেশি। ডেনভি-২ বা ডেনভি-৩ এর মতো অতি সংক্রামক ভাইরাস করোনার অ্যান্টিবডির সঙ্গে মিলে গেলে এদের সংক্রামক ক্ষমতা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।