দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস্অ্যাপ নয়, সন্তান সামলাতে মায়েদের ভরসা নাকি এখন স্মার্টফোন। সে তরুণী হন বা বয়স্কা, স্মার্ট মা মানেই হলো হাতে স্মার্টফোন। ফটাফট অ্যাপ থুড়ি ‘পেরেন্টিং অ্যাপ’ নামিয়ে তাতে লগ ইন করলেই মিলবে বাচ্চা সামলানোর হাজারো টোটকা। আদরে-শাসনে কী ভাবে সন্তানের মন জয় করবেন, তারও মোক্ষম টিপস মিলবে মোবাইল-অ্যাপেই।
আদর্শ অভিভাবক হয়ে ওঠার সেরা হাতিয়ার নাকি এখন স্মার্টফোনই। এমনটাই বলছে ‘ইউগভ’ (YouGov) এর সমীক্ষা। যৌথ পরিবার ভেঙে এখন চারদিকেই নিউক্লিয়ার পরিবারের ছড়াছড়ি। কাজেই ঠাকুমা-দিদিমা বা বাড়ির বয়স্কাদের টিপস সে ভাবে মেলেনা বললেই চলে। আর আধুনিকা মায়েরা শতাব্দী প্রাচীন টোটকায় খুব একটা ভরসাও রাখেননা। দিন বদলেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে ছেলেমেয়েদের মতিগতি। তিনের শিশুও এখন স্মার্টফোনে সেলফি তুলতে পারে। কাজেই স্মার্ট বাচ্চাদের বাগে আনতে স্মার্ট টিপসই তো জরুরি। সেই সঙ্গে গোটা ব্যাপারটা বেশ কেতাদুরস্তও হওয়া চাই।
সমীক্ষা বলছে, ৭০ শতাংশ ভারতীয় মহিলাই বাচ্চা সামলাতে নানা পেরেন্টিং অ্যাপের দ্বারস্থ হন। তাঁদের মধ্যে আধুনিকা তরুণী যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন নবীন-প্রবীন গৃহবধূরাও। কখন বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে, কখন ঘুম পাড়াতে হবে, সে রেগে গেলে কী করণীয়, অভিমান করলেই বা কি করতে হবে, অথবা বেশি ঘ্যানঘ্যানে আবদার করলে শাসনটাই বা হবে কতটা কড়া—সবকিছুই চটজলদি শিখিয়ে দেবে এই সব অ্যাপ। দেশ-বিদেশের নানা পেরেন্টিং অ্যাপে নিয়মিত ঢুঁ মারেন অন্তত ৫০ শতাংশ মহিলা। ৪১ শতাংশ নানা পেরেন্টিং ব্লগে চোখ রাখেন। তা ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার টুকিটাকি টিপস তো রয়েছেই।
YouGov সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে যে সব মায়েদের সন্তানের বয়স ১২ মাস থেকে ১৮ বছর, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি মোবাইল অ্যাপ নির্ভর। অন্তত ৭০০ জন এমন মা’কে খুঁজে পাওয়া গেছে যাঁরা শুধু মোবাইল ঘেঁটেই বাচ্চা সামলানোর টিপস পেয়েছেন। এবং এই সব টিপস খুবই কার্যকরী বলে দাবিও করেছেন। অনেক মায়েদের ধারণা মোবাইল দেখেই তাঁরা সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টাও জেনেছেন এবং সে দিক থেকে সন্তানকেও সতর্ক করতে পেরেছেন।
সন্তান নিরাপদে থাকুক সেটাই কাম্য। বাচ্চা বিপদে পড়লে কী করে বিপন্মুক্ত হবে, সেই পথও অভিভাবককেই দেখাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাপ নির্ভর টোটকা ঠিক আছে, তবে সন্তানকে সঙ্গ দেওয়াটা অভিভাবকদের একান্ত কর্তব্য। প্রতি মুহূর্তে দুশ্চিন্তা করে নিজে বিচলিত না করে বরং ধাপে ধাপে সন্তানকে তৈরি করুন, যাতে সে নিজেই তার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারে।