শেষ আপডেট: 25th September 2024 18:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তান থেকে পালে পালে ভিক্ষুক বিশ্বের বিভিন্ন শহর ভরিয়ে দিচ্ছে। যা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে অনেক শহর কর্তৃপক্ষই। বিশেষত সৌদি ও আরব দুনিয়ার বিভিন্ন শহরে পাকিস্তানি গরিবগুর্বোরা পাসপোর্ট-ভিসা করিয়ে বিমানে চড়ে পাড়ি দিচ্ছেন ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য। প্লাবনের মতো ভিক্ষুক ঢুকে পড়ায় সৌদি আরব এই সপ্তাহে পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়েছে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিক্ষা করার জন্য মুসলিম তীর্থক্ষেত্র পবিত্র মক্কা-মদিনায় প্রচুর পাকিস্তানি রয়েছেন। ইসলামাবাদকে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিক্ষুক ঠেকাতে তারা যেন উমরাহ্ ভিসার অপব্যবহার না করে। এর ফলে প্রকৃতই যাঁদের ভিসা প্রয়োজন তাঁরা পাচ্ছেন না। কিছু লোক এ সুযোগের অপপ্রয়োগ করছেন।
সৌদি আরবের ধর্মীয় মন্ত্রক পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারির সুরে বলেছে, তারা যদি এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে পাকিস্তানি উমরাহ্ এবং হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে বিরূপ ফল পড়তে পারে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ খবর দিয়েছে। তারা লিখেছে, সৌদি আরবের প্রত্যেক রাস্তায় পাকিস্তানি ভিক্ষুকে ভরে গিয়েছে।
ইসলামাবাদের বাসিন্দা উসমান নামে একজন এক্সবার্তায় লিখেছেন, আমি সম্প্রতি উমরাহ্ সফর সেরে ফিরেছি। আমি লিখতে বাধ্য হচ্ছি যে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি ভিক্ষুক দেখে আমি লজ্জিত বোধ করছি। তারা বিন দাউদ স্টোরের ভিতরেও ভিক্ষা করছে। উমরাহ্ চলাকালীন ভিক্ষা করছে। রাস্তায় তাকালেই চোখে পড়বে পাকিস্তানি ভিক্ষুক।
উল্লেখযোগ্য যে এইসব ভিক্ষুক পুরোদস্তুর পেশাদারি। যারা পাসপোর্ট-ভিসা করে বিমানে চড়ে পাকিস্তান ছেড়ে ভিনদেশে পাড়ি দেয়। পাকিস্তানি ইংরেজি দৈনিক ডন-এ মতামত বিভাগে আইন বিশেষজ্ঞ রাফিয়া জাকারিয়া লিখেছেন, পাকিস্তানিরা কীভাবে তাঁদের স্বজাতি ও স্বদেশের মানুষকেই বিদেশের মাটিতে ভিক্ষা করতে দেখতে পাবেন। এমনকী অর্থের জন্য তীর্থযাত্রীদের হেনস্তা করতেও দেখা যাবে।
শুধু সৌদি আরব নয়, পাকিস্তানি ভিক্ষুক দেখা যাবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সহ অনেক আরব দুনিয়ার দেশেও। গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানি প্রবাসী দফতরের সচিব জিশান খানজাদা বলেন, পশ্চিম এশীয় দেশগুলিতে আটক করা ৯০ শতাংশ ভিক্ষুক পাকিস্তানি।
কেন পাকিস্তানিরা বিদেশে ভিক্ষা করতে যায়! এর পিছনে রয়েছে এক বিরাট মাফিয়া চক্র। তারাই ভিক্ষা করার জন্য সব ব্যবস্থা করে দেয়। ভিক্ষার অর্থ থেকে লাখ লাখপতি হয়ে যায়। পাকিস্তানি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগও এনিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সৌদিকে পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মাফিয়া চক্র ভাঙার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। মাসখানেক আগেই সৌদি আরব যাওয়ার পথে ১১ জন ভিক্ষুককে বিমান থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত পাকিস্তানের সরকার এই ভিক্ষুকদের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে আদাজল খেয়ে আসরে নেমে পড়েছে। কারণ এদের জন্যই দেশের মুখ পুড়ছে বিদেশের মাটিতে।