শেষ আপডেট: 25th March 2025 22:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নজিরবিহীন বললেও কম বলা হয়। গত ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS)। সেখানে দেশ-বিদেশের একাধিক প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। এবার দেড় মাসের ব্যবধানে লন্ডনে বাণিজ্য বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
যার নিট ফল, মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সন্ধে সাতটার কিছু পরে লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে ১ নম্বর এডওয়ার্ডয়ান হল যেন চাঁদের হাট! কে নেই সেখানে? রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিদের পাশাপাশি দেশের একাধিক শিল্পপতি তো বটেই বাণিজ্য বৈঠকে উপস্থিত বিদেশের একাধিক শিল্পপতিও।
বাংলায় কেন বিনিয়োগের গন্তব্য হওয়া উচিত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee Business Summit) উপস্থিতিতে পয়েন্ট ধরে ধরে তার ব্যাখ্যা দিলেন দেশের শিল্পপতিরা। বাম আমলে কথায় কথায় হওয়া ধর্মঘটের প্রসঙ্গ থেকে বর্তমানে একটি কর্মদিবসও নষ্ট না হওয়া, শিল্পায়নের জোয়ার আনতে মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে নেতৃত্ব দেন, শিল্পপতিদের কথায় সে সবই উঠে এল বারে বারে।
এদিন বৈঠকের শুরুতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ কর্মদক্ষতা থেকে আইটি, লজিস্টিক প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলার অগ্রগতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শুধু ক্ষুদ্র শিল্পে বাংলা শীর্ষে তাই নয়, বৃহৎ শিল্পেও বাংলা দেশের প্রথম তিনটি রাজ্যের তালিকায় রয়েছে। ভারত ও আমেরিকা যৌথভাবে কাজ করতে পারে, এমন একাধিক সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশের প্রশংসা শোনা গিয়েছে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামীর বক্তব্যেও। যোগাযোগের দিক থেকে বাংলা যে উত্তর পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালের গেটওয়ে, সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, দার্জিলিংয়ের চা তো বিশ্বের সেরা, একই সঙ্গে কর্মদক্ষতা থেকে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা বাংলাতেই সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রশংসা, সবই উঠে এল ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের কথায়।
বৈঠকের শুরুতে বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, খেলা থেকে পর্যটন সব কিছু নিয়ে বিশেষ ভিডিও ‘ধ্বনিল আহ্বান’ দেখানো হয়।
বাংলার শিল্পবান্ধবের কথা শোনা গেল ইউকেআইবিসি-র চেয়ারম্যান রিচার্ড হেল্ডের বক্তব্যেও। ২০১৭ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যে সম্পর্ক রয়েছে তাও জানালেন তিনি। রিচার্ড হেল্ডের কথায়, "২০১৭ সালে ইডেনে বাংলা-ইংল্যান্ডের খেলা ছিল। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। তখন থেকেই সম্পর্কের শুরু।" তিনি বললেন, কৃত্রিম মেধা এবং সেমি কন্ডাক্টর শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা। যে কারণে আগামীদিনে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে তাঁরা কাজ করতে আগ্রহী।
কীভাবে শিল্পায়নে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলা, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শিল্পপতি সঞ্জয় বুধিয়া অতীতের বাম সরকারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বাম আমলের মতো এখন আর ধর্মঘট হয় না, নষ্ট হয় না শ্রমদিবসও। তাই বাংলাকে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছি।" বিলেতের শিল্পপতিদের বাংলায় আসার আহ্বান জানান লক্ষ্মী গ্রুপের এমডি রুদ্র চট্টোপাধ্যায়। আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান শাশ্বত গোয়েঙ্কার কথায়, "বাংলায় বিনিয়োগের ডেস্টিনেশন হওয়া উচিত, কারণ, এখানকার মুখ্যমন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে শিল্প ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেন। যে কোনও দরকারে তাঁকে সবসময় পাওয়া যায়।"