শেষ আপডেট: 29th September 2024 17:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঠিক ১০ দিন আগে, ১৯ সেপ্টেম্বর ভাষণ দিয়েছিলেন হিজবুল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লা। লেবানন জুড়ে ইজরায়েলের মারাত্মক হামলার নিন্দা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন 'যুদ্ধ ঘোষণা' করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর প্রধান প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন, জোর দিয়ে বলেছিলেন ইজরায়েলকে শাস্তি দেওয়ার কথা।
কিন্তু সেদিন কেউই জানত না, এটাই নাসরাল্লার শেষ ভাষণ হতে চলেছে।
নাসরাল্লার এই বক্তৃতার সময় গোটা লেবাননে পেজার ও রেডিও বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছিল ইজরায়েল। নিহত হয়েছিলেন ৩২ জন। সেই পরিস্থিতিকে 'বড় পরীক্ষা' বলে আখ্যা দিয়ে নাসরাল্লা বলেন, 'আক্রমণের মুখে, তা যত বড় ও শক্তিশালী আঘাতই আনুক না কেন, ছিটকে না গিয়ে স্থির থাকতে পারাই চ্যালেঞ্জ। হিজবুল্লা এই সংকট থেকে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে আসবে।'
শুধু লেবানন হামলা নিয়ে নয়, গাজা এবং প্যালেস্তাইনকে সমর্থন করে তিনি বলেন, 'ইজরায়েলের সরকার, সেনাবাহিনী এবং সমাজকে বলছি, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ হওয়ার আগে লেবাননের ফ্রন্ট থামবে না। আমরা ১১ মাস ধরে একথা বলছি।'
বস্তুত, লেবাননের উপর ইজরায়েলের এই হামলার কারণগুলির মধ্যে অন্যতম এই গাজা। প্রায় এক বছর ধরে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের হামাসের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে, তাতে গাজা ও ওয়েস্টব্যাঙ্ক মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে বহু সংখ্যক শিশু।
গোড়া থেকেই এই যুদ্ধে প্যালেস্তাইন এবং হামাসকে সমর্থন করছে লেবানন। তাতেই লেবাননের উপর খেপেছে ইজরায়েল। লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাকে লক্ষ্য করে একেরপর এক হামলা চালিয়েছে তারা।
ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর এই অভিযান আদতে হিজবুল্লাকে দুর্বল করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন নাসরাল্লা।
নাসরাল্লার আশঙ্কা মতোই গত একসপ্তাহে রীতিমতো যুদ্ধ বেঁধে যায় দু'দেশের এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষের প্রাণ যায়। দক্ষিণ লেবাননের সীমান্ত শহরগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
এই অবস্থায় মার্কিন বিদেশ মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক কূটনীতিক দু'দেশকেই সংযত হতে বলে, আসন্ন যুদ্ধ থামানোর জন্য।
কিন্তু নাসরাল্লা তাঁর সেই শেষ বক্তৃতায় স্পষ্ট করে দেন, যে হিজবুল্লা পিছু হটবে না। তিনি বলেন, 'যতই বলিদান হোক, ফলাফল যাই হোক না কেন, গাজাকে সমর্থন করা বন্ধ করবে না লেবানন। প্রতিরোধ থেকে সরবে না হিজবুল্লা।'