শেষ আপডেট: 17th March 2025 11:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রাচীন প্রবাদে আছে, যারা তলোয়ারের জোরে বেড়ে ওঠে, তলোয়ারের কোপেই তাদের প্রাণ যায়। লস্কর-ই-তোইবা প্রধান কুখ্যাত জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ পার্শ্বচর তথা ভাগনে আবু কাতাল খুন। যার অর্থ যারা হাফিজ সইদের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে, তারা লস্কর প্রধানের অন্দরের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও দক্ষিণ এশীয় ঘটনাপ্রবাহের বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আবু কাতালের মতোই ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে হাফিজের কপালেও। বিদেশ সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের দৃঢ় অনুমান, ২৬/১১-র মুম্বই হামলার মূল চক্রী সইদের জন্যও এ ধরনেরই মৃত্যু অপেক্ষা করছে।
সংবাদ সংস্থার কাছে বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞ রবীন্দর সচদেব বলেন, আবু কাতালের খুন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, যারা হাফিজ সইদকে খুঁজছে, তারা লস্কর প্রধানের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তান সহ আন্তর্জাতিক নেট দুনিয়ায় কাতালের মৃত্যুর পর এও ছড়িয়ে পড়ে যে, হাফিজ সইদকেও মেরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা গোপন রাখা হয়েছে। যদিও পাকিস্তানের তরফে হাফিজ সইদের সম্পর্কে জানা গিয়েছে, তিনি এখনও গৃহবন্দিই রয়েছেন।
লস্কর জঙ্গি আবু কাতালকে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এনআইএ চার্জশিট দিয়েছিল। সে জম্মু-কাশ্মীরর রাজৌরি, পুঞ্চ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার চক্রী ছিল। সচদেবের অনুমান, এমনিতেই নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনীর মধ্যে থাকা হাফিজের প্রাণভয় এখন আরও বেড়ে গিয়েছে। ফলে তাঁর নিরাপত্তা এই ঘটনার পর আরও বেড়ে যাবে। কারও কারও অনুমান, নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে হাফিজ সইদ শুধু প্রশিক্ষিত লস্কর জঙ্গিদের উপরই ভরসা করবেন না, আইএসআই এবং পাক সেনার মদতও চাইতে পারেন।
সচদেবের মতে, কেউ বলতে পারে না, কারা খুন করেছে কাতালকে। এও সম্ভব যে, পাকিস্তানি সরকারও ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে কাতালকে মেরে দিয়ে থাকতে পারে। কারণ এটাও এক ধরনের কূটনৈতিক চক্রান্ত ও ডিজিটাল যুদ্ধের অঙ্গ। এই হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ধ্রুব সি কাটোচ বলেন, গুলিতে আরও একজনের জখম হওয়ার খবর মিলেছে। সম্ভবত ওই ব্যক্তিই হাফিজ সইদ। কারণ, আবু কাতাল সইদের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল। জখম ব্যক্তিকে পাকিস্তান সেনা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কিন্তু তার পরিচয় জানাতে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে পাক কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি হাফিজ সইদ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। প্রাক্তন সেনা অফিসারের কথায়, পাকিস্তানে ঘাপটি মেরে থাকা কোনও জঙ্গির জীবনই নিরাপদ নয়। যতই সেনারা তাদের বাঁচিয়ে চলুক না কেন, শিকারিরা তাদের খুঁজে বের করে মারবেই।
কাতালের সঙ্গেই হাফিজ সইদকেও খতম করা হয়েছে? যার মধ্যে ইন্ধন জুগিয়েছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ। ইমরানের দলের এক নেতা সামাদ ইয়াকুব এক্সবার্তায় দাবি করে বলেছেন, খবর যা মিলেছে তাতে জানা গিয়েছে, হাফিজ সইদ এবং তাঁর ভাগনে হামলায় নিহত হয়েছে। কিন্তু হাফিজের ছেলে তালহা সইদের দাবি, তাঁর আব্বা সুস্থ আছেন। কিন্তু তাঁর গলার আওয়াজ এবং কথা বলার ভঙ্গি বলছে, তিনি মোটেই ভালো নেই।