শেষ আপডেট: 6th December 2023 17:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিনি উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নায়ক। তাঁর কথাতেই চলে গোটা দেশ। তাঁর হুকুম অমান্য করে এমন সাধ্য কার! আর যদিও বা কেউ করে ফেলে, তার জন্য চরম শাস্তি দিতে পিছপা হন না তিনি। উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক সেই কিম জং উনকেই এবার একেবারে অন্য ভূমিকায় দেখা গেল। সাম্প্রতিক একটি অনুষ্ঠানে দেশের জন্মহার কমে যাওয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কিম। এমনকী, তাঁকে রীতিমতো কাঁদতে এবং চোখ মুছতে দেখা যায়।
ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, মুখ নিচু করে বসে রয়েছেন কিম। তাঁর চোখে জল। কাঁদতে কাঁদতেই দেশের মহিলাদের প্রতি তাঁর আর্জি, দেশকে সচল রাখতে গেলে তাঁরা যেন আরও বেশি করে সন্তান ধারণ করেন। কিমের সঙ্গেই সামনে দর্শকাসনে বসে থাকা অনেককে চোখ মুছতে দেখা যায়।
রবিবার পিয়ংইয়ংয়ে মায়েদের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই ভাষণ দিচ্ছিলেন কিম। তিনি বলেন, "জন্মহার ক্রমশ কমে যাওয়ার ঘটনা আটকানো এবং শিশুরা যাতে আরও ভালভাবে বড় হয়, সেদিকে নজর রাখা মায়েদের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের সকলের গৃহস্থালির দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।" এছাড়া দেশ ও জাতি গঠনে তাঁদের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য মায়েদের ধন্যবাদ জানান উত্তর কোরিয়ার এই নেতা।
"যখন দল কিংবা দেশ চালানোর কাজ করতে গিয়ে আমি কোনও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হই তখন সব সময় আমি মায়েদের কথা ভাবি। যেভাবে তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেন, সেটার কথা মনে করি," জানিয়েছেন কিম।
Kim Jong Un CRIES while telling North Korean women to have more babies.
— Oli London (@OliLondonTV) December 5, 2023
The dictator shed tears while speaking at the National Mothers Meeting as he urged women to boost the countries birth rate. pic.twitter.com/J354CyVnln
উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরেই উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসমান। ২০২৩ সালে ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ডের একটি তালিকা থেকে জানা গেছে, দেশটির জন্মহার, কিংবা মহিলা পিছু সন্তানের সংখ্যা এখন ১.৮। যদিও তা উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী দেশ জাপান কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় বেশি। এই দুটি দেশে আরও দ্রুত জন্মহারের পতন ঘটছে। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার ছিল ০.৭৮। জাপানের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটি হল ১.২৬।
উত্তর কোরিয়ায় মোট ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের বাস। তবে বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশটি একাধিক প্রাকৃতিক এবং সামাজিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। নয়ের দশকে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ, গুরুতর খাদ্য সংকটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে এশিয়ার এই দেশটিকে। এছাড়া বন্যার কারণে বারবার শস্যহানির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যেই জন্মহার অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় সেদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ মানুষের অভাব দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জন্মহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষকে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগে ম্যাচমেকিং, অর্থাৎ ঘটকালির আয়োজন করা হচ্ছে।