শেষ আপডেট: 30th August 2021 04:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে গত বৃহস্পতিবারের জোড়া বিস্ফোরণে অসংখ্য মানুষ হতাহত হওয়ার পর ফের আকাশপথে মার্কিন অভিযান। এর আগে জোড়া বিস্ফোরণের পরিকল্পনাকারীকে টার্গেট করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এবার কাবুলে আকাশপথে আঘাত হেনে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি ধ্বংস করার কথা জানাল ওয়াশিংটন। তালিবান মুখপাত্রও এঘটনা নিশ্চিত করেছেন। জানিয়েছেন, বিমানবন্দরমুখী একটি গাড়িবোমা ধ্বংস হয়েছে। পাশাপাশি নিকটবর্তী একটি বাড়িতে সম্ভবতঃ আঘাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আমেরিকা জানিয়েছে, শুধুমাত্র গাড়িতে আঘাত করা হয়েছে, এও বলেছে, পরের বিস্ফোরণগুলিতে 'বেশ ভাল পরিমাণে বিস্ফোরক পদার্থ' থাকার ইঙ্গিত রয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের সম্ভাব্য মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্থানীয় মিডিয়া, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফের সন্ত্রাসবাদী হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তার কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই এই অভিযান। এদিকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাবাহিনী ও নাগরিকদের বের করে নিয়ে যাওয়ার সময়সীমাও শেষ হয়ে আসার মুখে। হাতে আছে সোমবার আর মঙ্গলবার। কিন্তু গত বৃহস্পতিবারের জোড়া বিস্ফোরণ ও সন্ত্রাসের আশঙ্কায় সেই প্রক্রিয়ার গতি কিছুটা কমেছে। এখনও আফগানিস্তানে প্রায় ৩০০ মার্কিন নাগরিক রয়ে গিয়েছেন, যাঁরা ফিরতে চান, কিন্তু এখনও পারেননি বলে জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, ওঁরা আফগানিস্তানে পড়ে থাকতে চান না। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান ফক্স নেটওয়ার্ককে বলেছেন, আমেরিকার ওদের বের করে নিয়ে আসার মেকানিজম তৈরি। গত ১৫ আগস্ট তালিবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এপর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার লোককে ফেরানো হয়েছে। কাবুলে জোড়া নাশকতায় ১৩ মার্কিন সেনা জওয়ান সহ শতাধিক লোকের প্রাণহানি হয়। বাইডেন রবিবার ডেলাওয়ারে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে নিহত মার্কিন সেনাদের দেহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পেন্টাগন শনিবারই জানিয়েছিল, কাবুলে হামলার পাল্টা পূর্ব আফগানিস্তানে ড্রোন হামলায় দুই উচ্চ স্তরের আইসিস জেহাদি খতম হয়েছে। বাইডেন অবশ্য সন্ত্রাসাবাদী গোষ্ঠীটি আরও নাশকতা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন। কাবুলে মার্কিন দূতাবাসও বিমানবন্দরে প্রবেশের দরজা সহ নির্দিষ্ট কয়েকটি গেটে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সাম্প্রতিক কয়েকটি বছরে আইসিসের আফগানিস্তান-পাকিস্তান শাখা দুদেশে বেশ কয়েকটি ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালিয়েছে। মসজিদ, স্কুল, এমনকী হাসপাতালও সন্ত্রাস থেকে রেহাই পায়নি। তালিবান, আইসিসি-উভয়েই কট্টরপন্থী সুন্নি ইসলামের ভক্ত, কিন্তু পরস্পরের তীব্র বিরোধী। প্রত্যেকেরই দাবি, তারাই জেহাদের প্রকৃত পতাকা বহন করছে। আইসিস হামলা মার্কিন সেনা ও তালিবানকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পরস্পরকে কাছাকাছি আসতে, সহযোগিতা করতে বাধ্য করেছে, যা এই কয়েক সপ্তাহ আগেও অকল্পনীয় ছিল। শনিবার তালিবান যোদ্ধারাই প্রচুর আফগানকে বাস থেকে নামিয়ে কর্ডন করে মূল যাত্রী টার্মিনানে নিয়ে গিয়ে দেশ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। ২০ বছরের যুদ্ধের পর মাত্র ৩০ মিটারের দূরত্বে পরস্পরের মুখোমুখি হয় দুপক্ষ। এদিকে মার্কিন সেনা জওয়ানরাও আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন পেন্টাগন মুখপাত্র জন কিরবি।