বুধবার হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা।
শেষ আপডেট: 19th June 2024 14:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিনের হুমকি উপেক্ষা করে ভারতে নির্বাসিত তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার সঙ্গে বুধবার দেখা করল মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ প্রতিনিধিদল। আর তাতে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে চিনের 'একচেটিয়া দাদাগিরি'র উপর ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেল।
গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিন হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিল, আমেরিকা যেন তিব্বত নীতি বিলে সই না করে। ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দলাই লামার সাক্ষাতের বিষয়েও তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল বেজিং কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও এদিন দলাই লামার সঙ্গে এই সাক্ষাৎ আমেরিকার তিব্বত নীতি বিলে বাইডেনের স্বাক্ষরকে একধাপ এগিয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
ধর্মশালার ম্যাকলয়েডগঞ্জে বেজিংয়ের চোখে 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' তিব্বতি ধর্মনেতা দলাই লামার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। আলোচনার পর প্রতিনিধিদলের সদস্য প্রাক্তন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি চিনকে অভিযুক্ত করে বলেন, ওরা তিব্বতি সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। খোদ দলাই লামা এক্সবার্তায় তিব্বত সমস্যার সমাধান সংক্রান্ত আইনের কপি হাতে ছবি পোস্ট করে লেখেন, এই ফলে তিব্বতের প্রতি আমেরিকার সমর্থন প্রকাশ পেল।
দলাই লামা লিখেছেন, এর ফলে চিনের সঙ্গে তিব্বত নিয়ে দলাই লামার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুলতে পারে। মার্কিন প্রতিনিধিদল এদিন জানিয়েছে, দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচনে চিনের নাক গলানো বরদাস্ত করা হবে না। ৭ জনের যৌথ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন রিপাবলিকান দলের মিচেল ম্যাককাউল। তিনি বলেন, আমি আশা করি একদিন নোবেল জয়ী ধর্মগুরু দলাই লামা এবং সঙ্গীরা শান্তিতে তিব্বতে ফিরে যেতে পারবেন। উত্তরসূরি নির্বাচনে চিনের হস্তক্ষেপ আমরা মেনে নেব না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খুব শীঘ্রই চিন-তিব্বত সমস্যা সমাধানে একটি বিলে সই করবেন।
এই বিলে রয়েছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকে স্তব্ধ আলোচনা চালু করা। যার মধ্যে প্রথম বিতর্কিত বিষয়টিই হচ্ছে 'স্বাধীন' তিব্বতের উপর চিনের অধিকার-আগ্রাসন খর্ব করা। তিব্বতের মানুষের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত অস্তিত্বকে মূল্য দিয়ে তাদের পৃথক মর্যাদা প্রদান।
যদিও এর আগেই চিনা বিদেশ মন্ত্রক আমেরিকাকে সাবধানবাণী শুনিয়ে বলেছিল যে, চতুর্দশ দলাই লামা মোটেই ধর্মীয় নেতা নন। এই অঞ্চলে চিন বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের নেতা। যিনি রাজনৈতিক নির্বাসনে আছেন। চিনা বিদেশ মুখপাত্র একইসঙ্গে বাইডেনকে তিব্বত নীতি বিলে সই না করারও অনুরোধ জানান। প্রাচীনকাল থেকে তিব্বতকে চিনের অংশ বলে দাবি করে তিনি বলেন, তিব্বত চিরকাল আমাদের অংশ। তিব্বত বিষয়ক যাবতীয় সিদ্ধান্ত চিনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কেউ বা কোনও শক্তি নেই যা তিব্বতের অস্তিত্বকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং চিনের হাত থেকে কেড়ে নিতে পারে।