পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত নিরব মোদীর ১০ম জামিন আবেদনও খারিজ করল যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, ছাড়া পেলে তার পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
নীরব মোদী।
শেষ আপডেট: 23 May 2025 08:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (PNB) কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত নীরব মোদীর (Nirav Modi) জামিন আবেদন ফের খারিজ করেছে ব্রিটিশ হাইকোর্ট। ২০১৯ সাল থেকে এটি ছিল তাঁর ১০ নম্বর জামিনের আবেদন। বিচারক মাইকেল ফোর্ডহ্যাম সেই আবেদন খারিজ করে বলেছেন, 'আবেদনকারীর জামিন দিলে তার পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।'
তিনি আরও বলেন, 'ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের আদালত ইতিমধ্যেই দু’বার মত প্রকাশ করেছে যে ীরব মোদীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ-ভিত্তিক অভিযোগ (prima facie case) রয়েছে।'
৫৪ বছর বয়সি নীরব মোদী বর্তমানে ব্রিটেনের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ২০১৯ সালের মার্চে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে ভারতের পক্ষ থেকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদন ইতিমধ্যেই ইউকে আদালত মঞ্জুর করেছে।
বিচারক জানান, নীরব মোদী 'অত্যন্ত গুরুতর' আর্থিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত। এ জন্য ভারতের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য চাওয়া হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ অনুযায়ী, পিএনবি-র কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে প্রতারণামূলকভাবে এলওইউ জারি করিয়ে বিদেশি ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন তিনি। এসব লেনদেনের পরিমাণ ১,০১৫.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি।
আদালত আরও উল্লেখ করে, 'তদন্তের প্রমাণ হিসেবে যে মোবাইলটি ছিল, ২০১৮ সালে তা নষ্ট করা হয় এবং কিছু সাক্ষীর উপর প্রভাব খাটানোরও চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও দুবাইয়ে একটি কম্পিউটার সার্ভারে প্রমাণ ধ্বংসের ঘটনাও রয়েছে। নীরব মোদী ইংল্যান্ডে থেকেই এগুলি ঘটিয়েছেন।'
ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (CBI) এক বিবৃতিতে জানায়, 'নীরব দীপক মোদীর জামিন আবেদন লন্ডনের হাইকোর্ট খারিজ করেছে। মামলার শুনানিতে ভারত সরকারের পক্ষে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের আইনজীবী এবং সিবিআই-এর তদন্ত ও আইনি টিম সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।'
সিবিআই আরও জানায়, 'এই জামিন আবেদনটি ছিল তাঁর ১০ম প্রচেষ্টা, যেটি সিবিআই সফলভাবে আটকে দিয়েছে।'
নীরব মোদী ও তাঁর কাকা মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে PMLA আইনে মামলা করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। তদন্তে তাদের বিভিন্ন সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২০২২ সালে ইউকে সুপ্রিম কোর্টেও নীরব মোদীর আবেদন খারিজ হয়েছিল।
এই রায়ের মাধ্যমে স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের তদন্ত সংস্থাগুলির পেশাদারিত্ব ও আইনি প্রক্রিয়া যথেষ্ট জোরদার এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে তারা।