শেষ আপডেট: 18th September 2024 13:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল টাপারওয়্যার। চ্যাপ্টার ১১ ব্যাঙ্করাপ্টসি প্রটেকশনে একটি মামলা করল এই সংস্থা। প্রায় ৭৮ বছর ধরে গেরস্থের জিনিসপত্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানোর কাজ করেছে আমেরিকার এই কিচেনওয়্যার কোম্পানি।
জানা গিয়েছে, চলতি বছর জুন মাসে আমেরিকার কারখানাটি বন্ধ করে দিয়েছে তারা। চাকরি হারিয়েছেন ১৫০ জন কর্মী।
৭০ কোটি লোনের ঋণ মাথায় ছিল এই সংস্থার। মহাজনদের সঙ্গে সেই লোন বোঝাপড়া করে নিলেও শেষ রক্ষা হল না। দেলাওয়ারে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল টাপারওয়্যার।
গত বছর শুরুর সময় থেকেই শোনা যাচ্ছিল আর নতুন কিছু প্রস্তুত করবে না এই জনপ্রিয় সংস্থা। এক কালে মার্কেটে সেরার সেরা হলেও ধীরে ধীরে ব্যবসা গোটাচ্ছে তারা।
কী ভাবে হল এই অবস্থা?
যখন গোটা বিশ্বই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত এমন একটা সময়ে আর্ল টাপারের মনে হয়েছিল, এয়ারটাইট প্লাস্টিকের স্টোরেজ কন্টেইনার তৈরি করতে পারলে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশবাসীকে খাদ্যের অপচয় থেকে বাঁচানো যাবে। এই পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হয় ১৯৪৬ সালে। সেই থেকে শিরোনামে আসে টাপারওয়্যার।
প্রথম থেকেই এর ডিজাইন সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এমন ধরনের প্লাস্টিকের কন্টেইনার সেসময় বাজারে পাওয়া যেত না। পরে শুধু কন্টেইনারে সীমাবদ্ধ থাকে না সংস্থাটি। ধীরে ধীরে জলের বোতল, পিলার-সহ একাধিক রান্নাঘরের জিনিসপত্র বাজারে নিয়ে আসে তারা। আর এভাবেই আমেরিকা তথা বিশ্বের অন্য দেশের রান্নাঘরেও ছড়িয়ে পড়তে থাকে টাপারওয়্যার। একসময় এটা এতটাই জনপ্রিয় হয় যে বিশ্বের ১০০টি দেশে বিক্রি শুরু করে।
হুট করে কীভাবে এই অবস্থা হল সংস্থাটির?
বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, এই ব্যবসা এভাবে ধসে যাওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন টাপারওয়্যার ব্যবসা শুরু করেছিল তখন বাজারে প্রতিযোগিতা যেভাবে ছিল না। পরে এত প্রতিযোগী এসেছে যে টাপারওয়্যার আর সামাল দিতে পারেনি। এই সংস্থার সমস্ত প্রোডাক্টের দাম অন্যান্য প্রোডাক্টের থেকে বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে বিক্রি কমতে থাকে। আর করোনার বিরাট প্রভাব পড়ে এই সংস্থার বিক্রির ওপর। বিক্রি অর্ধেক হয়ে যায় কার্যত।
আর প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে মানুষের সচেতন হয়ে ওঠা খানিকটা গোদের উপর বিষফোঁড়া।
এই সব মিলিয়ে বাজার থেকে বর্তমানে কার্যত ভ্যানিস এই জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র।