শুরুতে অবশ্য আমেরিকা ইজরায়েলি হানার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। বরং দুপক্ষকে সংযমী হওয়ার বার্তা দিয়েছিল। তা হলে হঠাৎ ইজরায়েলের পক্ষ নেওয়া কেন?
ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শেষ আপডেট: 14 June 2025 02:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার। ইরানের প্রত্যাঘাতের আগেই ফের হামলা চালাল ইজরায়েল (Israel)। 'অপারেশন রাইজিং লায়ন' চালিয়ে শুক্রবার ভোররাতের দিকে ইরানকে (Tehran) তছনছ করে দিয়েছে ইজরায়েল। বিভিন্ন সূত্রের খবর, ইরানের পরমাণু কেন্দ্র নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা (Iran's Top Officials)-সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি, রেভলিউশনারি গার্ডের প্রধান কমান্ডার জেনারেল হোসেন সালামি, ডেপুটি কমান্ডার জেনারেল ঘোলামালি রশিদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায়িত্বে থাকা রেভলিউশনারি গার্ড অ্যাকোস্পেস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল আমির আলি হাজিজা। প্রাণ গিয়েছে ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীরও। ইজরায়েলের দাবি, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে জঙ্গিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। তাই এই অভিযান।
আর এই যুদ্ধের আবহেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইরানের ওপর চাপ বাড়িয়ে ইজরায়েলি হামলাকে সরাসরি সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করলে, সেটা তারা কোনও মতেই মেনে নেবে না। বরং তাদের ‘আরও ভয়ঙ্কর হামলা’র মুখে পড়তে হবে।
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ইরানকেই দায়ী করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এও বলেছেন, "যুদ্ধ পরিস্থিতি এড়াতে কূটনীতি এবং আলোচনার জন্য ইরানকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওরা নিজেদের অবস্থানে অনড়। তাই এই পরিস্থিতি।"
শুরুতে অবশ্য আমেরিকা ইজরায়েলি হানার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। বরং দুপক্ষকে সংযমী হওয়ার বার্তা দিয়েছিল। তা হলে হঠাৎ ইজরায়েলের পক্ষ নেওয়া কেন? বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। তাই ইরানকে যেকোনও উপায়ে থামাতে মরিয়া আমেরিকা।
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের মতে, আগামী রবিবার ওমানে পরমাণু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ষষ্ঠ দফার বৈঠকে বসার কথা আমেরিকা এবং ইরানের। তার আগে ইরানের ওপর চাপ বাড়াতেই এবার সরাসরি ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াল ট্রাম্প প্রশাসন।
অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইরান রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তারাও ইজরায়েলকে জবাব দেবে।
একই সঙ্গে তাঁরা এও জানিয়েছে, তারা কোনও পরমাণু বোমা তৈরি করছে না। ‘নিউক্লিয়ার নন-প্রলিফারেশন’ চুক্তিতে ইরানের স্বাক্ষর রয়েছে। সেই চুক্তি মেনেই তাঁরা ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা বাড়ানোর কাজ করছে। একইসঙ্গে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদও সাফ জানিয়েছেন, রবিবার ওমানে পরমাণু সংক্রান্ত আলোচনা ব্যর্থ হলে তাঁরাও পশ্চিম এশিয়ার মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাবে। সবমিলিয়ে দুদেশের সংঘাতের পরিস্থিতিতে অশনিসঙ্কেত দেখছে গোটা পশ্চিম এশিয়া।