ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগে তাঁর ডেপুটি জেডি ভ্যান্স সহ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত এবং নতুন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে তাঁর ভূমিকা থাকবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন।
শেষ আপডেট: 20th January 2025 23:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রীতি মেনেই হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (Donald Trump) স্বাগত জানালেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চা-চক্রের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল নতুন প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর্ব। সোমবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১০টায় ক্যাপিটল রোটান্ডায় আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প। সেই উদ্দেশে দ্বিতীয় বারের জন্য হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করলেন তিনি।
চা-চক্র চলাকালীনই আমেরিকার কংগ্রেসের তিন প্রাক্তন স্পিকার, নিউট গিংরিচ, জন বোহেনার এবং কেভিন ম্যাকার্থি, আনুষ্ঠানিক দায়িত্বগ্রহণের অনুষ্ঠানের সূচনা করতে ক্যাপিটল রোটান্ডার উদ্দেশে রওনা দেন। তবে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের সর্বশেষ ডেমোক্র্যাটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না।
সোমবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমেরকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প ঘোষণা করেন, 'আমেরিকার সোনালি যুগ শুরু হল।'
শপথ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে তিনিই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসি-তে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর ট্রাম্পের রাজনৈতিক কেরিয়ার তলানিতে ঠেকেছিল। এরপর ২০২৪ সালের মে মাসে নিউ ইয়র্ক আদালতে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।
তার পরেও দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেওয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প নতুন ইতিহাস গড়লেন। কারণ তিনিই প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত, যার মধ্যে অন্যতম ২০২০ সালের নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব খাটানোর চেষ্টা। সেই নির্বাচনে হেরে গিয়েই দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটেছিল।
সে কলঙ্ক পেরিয়ে, ৪৭তম প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার আগে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেয়েছেন ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদী-- সকলেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শপথগ্রহণের পরে প্রথম দিনেই ইতিমধ্যেই একাধিক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ১০০টি নতুন পরিবর্তনের আদেশে সই করবেন, যার মধ্যে বাইডেন প্রশাসনের বেশ কিছু নীতি বাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল:
এছাড়াও ট্রাম্প এদিন বলেছেন, 'আমি ইউক্রেনের যুদ্ধ থামিয়ে দেব, আমি মধ্যপ্রাচ্যের সব সমস্যা মিটিয়ে দেব, আমি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আটকাব। ...একটা ব্যর্থ, দুর্নীতিপূর্ণ শাসনের অবসান হবে, আগামী কাল থেকে নতুন দিন দেখবে আমেরিকা।'
নতুন প্রশাসনের কার্যকলাপ এবং ট্রাম্পের নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা আলোচনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
ট্রাম্পের ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দিগন্তের সূচনা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁর প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং নীতিগত পরিবর্তনগুলোর দিকে নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।