শেষ আপডেট: 8th January 2025 11:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার ভোরে ফের কেঁপে উঠল তিব্বতের শিজাং। যেখানে গতকাল, মঙ্গলবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ১২৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ওই ভূমিকম্পের পর ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০টি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতীয় সময় ৬টা ৫৮ মিনিটে ঘটা এদিনের আফটারশকে রিখটার স্কেলের মাত্রা ছিল ৪.২, অর্থাৎ মাঝারি ধরনের।
উদ্ধারকারীরা তীব্র ঠান্ডা, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বহু উঁচুতে পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে জীবনরক্ষার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গৃহহীনদের জন্য তাঁবু সহ জীবনধারণের অন্যান্য সরঞ্জাম ও খাদ্য-চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৪২০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত তিব্বতের এই এলাকায় বর্তমানে তাপমাত্রা শূন্য তাপাঙ্কের কাছাকাছি, রাতে শূন্যের অনেক নীচে ঘোরাফেরা করছে।
এখনও পর্যন্ত ১৮৮ জনে জখম হওয়ার খবর মিলেছে। গুরুম গ্রামেই ২২২ জন বাসিন্দার মধ্যে ২২ জন মারা গিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন গ্রামের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শেরিং ফুন্টসোগের ৭৪ বছর বয়সি মাও। তাঁর অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানান। তাঁর মুখেই জানা গেল, ভূমিকম্পের সময় অনেক অল্প বয়সি ছেলেমেয়েরাও ঘর থেকে বেরতে পারেননি। শিশু ও বৃদ্ধদের কথা তো আলাদা। চিনা সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানাচ্ছে, ৩,৬০০-র বেশি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। প্রাথমিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ৩০,০০০ মানুষ ঘরছাড়া।
সরকারি প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, হাজারের উপর উদ্ধারকারী বরফ জমা ঠান্ডায় নিরলস ধ্বংসস্তূপের নীচে থেকে জীবিতের সন্ধান চালাচ্ছেন। ভেঙে পড়া ঘরবাড়ির তলা থেকে খুঁড়ে জীবিত ও মৃতদের টেনে বের করে আনছেন। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, এক উদ্ধারকারী মোটা ধুলোমাখা শীতের কোট গায়ে একটি শিশুকে পিঠে চাপিয়ে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে বেরচ্ছেন। বাচ্চাটি তীব্র জোরে কাঁদছিল। ঠান্ডায় কাঁপছিল। অন্য এক উদ্ধারকারী তার গায়ের উপর মোটা কম্বল চাপিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন।
ভূমিকম্প দুর্গত টিংরি এলাকাটি হল মাউন্ট এভারেস্ট থেকে মাত্র ৮০ কিমি উত্তরে তিব্বত-নেপাল সীমান্ত এলাকায়। যেখানে বর্তমানে তাপমাত্রা হল মাইনাস ১১ ডিগ্রি। টিংরির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৫০০ মিটার। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই উদ্ধারকাজ চলছে।