শেষ আপডেট: 9th January 2025 13:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আফগানিস্তান-পাকিস্তানের (Afganistan-Pakistan) মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির আবহে ইসলামাবাদের (Islamabad) উপর কড়া চাপ সৃষ্টির চেষ্টা মার্কিন কংগ্রেসের (US Congress)। নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (NATO) বা ন্যাটো-ভুক্ত সব দেশই আমেরিকার 'বন্ধু' বা সহযোগী। এছাড়াও আমেরিকার বেশ কিছু 'কৌশলগত বন্ধু' বাছাই করা আছে। তাদের 'ন্যাটো বহির্ভূত সহযোগী' হিসেবে মনে করে আমেরিকা। পাকিস্তান এতদিন ধরে আমেরিকার সেই 'ন্যাটো বহির্ভূত সহযোগী'র তালিকায় আছে। তবে পাকিস্তানের সেই মর্যাদা ছিনিয়ে নিতে মার্কিন কংগ্রেসে ফের একবার প্রস্তাব পেশ করলেন রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য অ্যান্ডি বিগস। তিনি হাউস জুডিসিয়ারি কমিটির 'ক্রাইম ও ফেডারেল গভর্নমেন্ট সার্ভেল্যান্স' সাবকমিটির চেয়ারম্যান।
অ্যান্ডি বিগসের প্রস্তাব, মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা কট্টর ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আফগানিস্তানের হক্কানি গোষ্ঠীর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যতক্ষণ না পর্যাপ্ত সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, ততক্ষণ মার্কিন প্রেসিডেন্টের তাদের 'ন্যাটো-বহির্ভূত সহযোগী' সিলমোহর দেওয়া উচিত নয়। বিলে আরও বলা হয়েছে, এর জন্যে আফগান সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে পাকিস্তানকে। উল্লেখ্য, এর আগেও এই একই বিল মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করেছিলেন অ্যান্ডি বিগস। এরপর থেকে একাধিকবার এই বিলটি নতুন করে পেশ করেছেন তিনি। তবে গত তিনবারের চেষ্টায় এই বিলটি পাশ করানো যায়নি মার্কিন জনপ্রতিনিধিসভায়।
বিলটির প্রস্তাব, পাকিস্তানকে ফের ওই মর্যাদা দেওয়ার আগে কংগ্রেসে প্রেসিডেন্টকে জানাতে হবে, ‘হক্কানি’ নেটওয়ার্কের জঙ্গিদের গোপন আস্তানাগুলি ভেঙে দেওয়া এবং ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে জঙ্গিদের যাওয়া-আসা বন্ধ করতে ইসলামাবাদ কতটা আন্তরিকভাবে সেনা অভিযান চালাচ্ছে। তার সাফল্য কতটা। পাক-আফগান সীমান্তে হক্কানি নেটওয়ার্কের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়াসে ইসলামাবাদ কতটা সহায়তা করছে কাবুলকে, তা জানাতে হবে মার্কিন কংগ্রেসে। আর এই সব ব্যাপারে কংগ্রেসে মার্কিন প্রশাসনের শংসাপত্র দাখিল করাটাও জরুরি। উল্লেখ্য, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর বিরুদ্ধে হক্কানি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছিল। মূলত পাশতুন এবং তাজিক ও উজবেক সংখ্যালঘুদের নিয়ে গঠিত এই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদর দফতর কান্দাহারে।
এদিকে এরই মাঝে সুরক্ষা, চাবাহার বন্দর থেকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহায়তা, ত্রিকেটের মতো ইস্যু নিয়ে আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করলেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি। এই বৈঠকের পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সুরক্ষা নিয়ে নয়াদিল্লির যে উদ্বেগ আছে, সেটার গুরুত্ব টের পেয়েছে আফগানিস্তান। সুরক্ষা সংক্রান্ত ঠিক কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিস্তারিতভাবে কিছু জানানো হয়নি।
দুবাইয়ে যেদিন বৈঠক হয়েছে, তার ঠিক দু'দিন আগেই আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমানহানার নিন্দা করেছে ভারত। গত ২৪ ডিসেম্বর আফগানিস্তানে জঙ্গি নিকেশের নামে বোমারু বিমান থেকে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান। তাতে মহিলা, শিশু-সহ কমপক্ষে ৪৬ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের তরফে কড়া ভাষায় জানানো হয়েছিল যে 'নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার' জন্য প্রায়শই প্রতিবেশীদের দিকে আঙুল তোলে।