শেষ আপডেট: 18th March 2025 18:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মা আর তার তিনটে ছানা। দুলকি চালে চলেছে ঘন তুষারাবৃত পাহাড়ের ঢালে। কোনওদিকে নজর নেই। ঘন লোমে ঢাকা চারপেয়েদের পরিবার মোটা বরফের পাহাড়ে রাজকীয় চালে উঠে চলেছে। এমন দুর্লভ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করা সচরাচর হয়ে ওঠে না কারওরই। অনেক চিত্রশিকারীও আজ পর্যন্ত এই বিরল দৃশ্যকে ছবিবন্দি করতে পারেননি। কারণ, এই চতুষ্পদ পরিবারটি হল তুষারচিতার। যাদের একটারই দেখা মেলা সারা জীবনের স্মৃতি হতে পারে, সেই চার-চারটি তুষারচিতা একসঙ্গে ফ্রেমবন্দি হওয়ায় বন্যপ্রাণপ্রেমীদের মধ্যে আনন্দের বান ডেকেছে।
বন্যপ্রাণীদের মধ্যে তুষারচিতা হল অত্যন্ত বিরলদৃশ্যের জীব। একটি তুষারচিতার দেখা মেলাও ভাগ্যের ব্যাপার। এবার একটা নয়, একসঙ্গে চারটে তুষারচিতাকে ক্যামেরায় ধরলেন পাকিস্তানের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের কর্মী ও ফটোগ্রাফার। শাখাওয়াত আলি এই ভিডিওটি প্রকাশ করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। উত্তর পাকিস্তানের গিলগিট-বালটিস্তানের প্রত্যন্ত গ্রাম হুশে-র বাসিন্দা শাখাওয়াত। গত ১৩ মার্চ বিরল প্রজাতির তুষারচিতাগুলির ছবি তোলেন তিনি।
তাঁর কথায়, প্রায় দুসপ্তাহ ধরে তিনি তুষারচিতাগুলির পায়ের ছাপ অনুসরণ করে চলেছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কে-টুর একেবারে কাছ ঘেঁষা সেন্ট্রাল কারাকোরাম ন্যাশনাল পার্কের তুষারে ঢাকা এলাকায় চিতাগুলির থাবার ছাপ নজর রাখছিলেন এই ব্যক্তি। সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে আলি জানিয়েছেন, তুষারচিতাগুলির মধ্যে একটি মা, বাকি তিনটি তার শাবক রয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রামের দিকে আমরা মাঝেমধ্যে তুষারচিতার দেখা পাই। কিন্তু একসঙ্গে চারটি তুষারচিতা কেউ কখনও দেখেনি। এমনকী গ্রামের বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে কথা বলেও দেখেছি, তাঁরাও কেউ দেখেননি। আলি প্রথম দেখা পান মা তুষারচিতার। তারপর দেখতে পান আরও থাবার ছাপ। বহু অপেক্ষার পর একসঙ্গে চারটিই তাঁর সামনে ধরা দেয়। তিনি একটি উঁচু টিলার মতো জায়গায় তুষারচিতাগুলিকে দেখতে পান। বাড়ির ছাদে দূরবীণ দিয়ে সেগুলিকে দেখেন। তা দেখেই ছুটে ক্যামেরা হাতে বেরিয়ে এসে তাদের ছবি তোলেন মাত্র ২০০ মিটার দূর থেকে।
আলি আরও জানান, চারটি তুষারচিতা দেখে গ্রামের বাসিন্দারা তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। যদিও অনেকেই নিজেদের গবাদি পশু নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েন। তুষারচিতা বর্তমানে বিরল প্রাণীর অন্তর্গত লাল তালিকাভুক্ত। স্থানীয়রা একে 'পাহাড়ের ভূত' বলে থাকেন। বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ শাফকত হুসেন জানান, উত্তর পাকিস্তানের পার্বত্য তরাই এলাকা বিশ্বের সবথেকে সেরা তুষারচিতার আবাস ও বিচরণভূমি।